নেভাদায় জিতলেই নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন
প্রকাশিত:
৫ নভেম্বর ২০২০ ২২:১৯
আপডেট:
২১ এপ্রিল ২০২৫ ২১:২৭

প্রভাত ফেরী: যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের ফলাফল কী হবে তা নিয়ে উৎকণ্ঠা এখনো কাটছে না। এর মধ্যেই বেশির ভাগ ইলেকটোরাল ভোটের ফলাফল হাতে চলে এসেছে। এতে দেখা যাচ্ছে, এখন পর্যন্ত ডেমোক্র্যাটিক দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেন পেয়েছেন ২৬৪টি ইলেকটোরাল ভোট। অপরদিকে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাতে আছে ২১৪টি ভোট।
এরই মধ্যে ব্যাটলগ্রাউন্ড রাজ্য মিশিগানের ১৬টি ইলেকটোরাল ভোট জিতে নিয়েছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন। বার্তা সংস্থা এপি আর ফক্স নিউজের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২৬৪ ইলেকটোরাল ভোট নিয়ে অবস্থান করছেন জয়ের দ্বারপ্রান্তে। এখন এগিয়ে থাকা আরেক ব্যাটলগ্রাউন্ড নেভাদায় (ছয়টি ইলেকটোরাল ভোট) জয় পেলেই ২৭০ ইলেকোরাল ভোটের সেই কাঙ্ক্ষিত 'ম্যাজিক ফিগার'। তবে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শিবিরের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে তিনটি রাজ্যের ভোট গণনা নিয়ে আপত্তি তুলে আদালতে যাওয়ার কথা জানানো হয়েছে।
মিশিগান ও অ্যারিজোনায় জয় পাওয়ার পর বাইডেনের মোট ইলেকটোরাল ভোটের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৬৪টিতে। ফলে নেভাদায় জয় পেলে সেখানকার জন্য বরাদ্দ থাকা ছয়টি ইলেকটোরাল ভোট নিয়ে প্রেসিডেন্ট হওয়ার ম্যাজিক ফিগার ছুঁয়ে ফেলবেন বাইডেন।
নেভাদায় বর্তমানে মাত্র দশমিক ছয় শতাংশ ভোটে এগিয়ে আছেন বাইডেন। সেখানে এখন পর্যন্ত গণনা হওয়া ভোটের ৪৯ দশমিক ৩ শতাংশ ভোট পেয়েছেন তিনি। অন্যদিকে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প পেয়েছেন ৪৮ দশমিক ৭ শতাংশ ভোট। তুমুল লড়াই হওয়া এই রাজ্যটির জয়-পরাজয়ের ওপর পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট কে হতে যাচ্ছেন তার অনেকখানি নির্ভর করছে।
বাইডেনের ট্রানজিশন ওয়েবসাইট চালু: মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দৃশ্যত ক্ষমতায় আসার পথে রয়েছেন জো বাইডেন। সরকার গঠনের প্রস্তুতি হিসেবে এরইমধ্যে একটি ট্রানজিশন ওয়েবসাইট চালু করেছেন তিনি। এক প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে অন্য প্রেসিডেন্টের কাছে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য প্রেসিডেন্সিয়াল ট্রানজিশন গঠন করা হয়। এ লক্ষ্যেই ট্রানজিশন ওয়েবসাইট চালু করেছে বাইডেন শিবির। নিয়ম অনুযায়ী, সামগ্রিক বিষয়ে ওয়াশিংটনে ট্রানজিশন টিমের অফিস থেকে হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে। আর এ প্রক্রিয়ার যাবতীয় আপডেট থাকবে ট্রানজিশন ওয়েবসাইটে।
ট্রাম্প অবশ্য এখন পর্যন্ত পরাজয় মেনে নেননি। বরং নিজেকেই বিজয়ী দাবি করেছেন তিনি। ভোট গণনা থামাতে একাধিক মামলাও করেছে ট্রাম্প শিবির। তবে এর মধ্যেই ক্ষমতা গ্রহণের প্রস্তুতি শুরু করেছে বাইডেন শিবির। ট্রানজিশন ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, দেশে যে ভয়াবহ সংকট দেখা দিয়েছে; মহামারি থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক মন্দা, জলবায়ু পরিবর্তন, বর্ণবাদী কর্মকাণ্ডের মতো বিষয়গুলো মোকাবিলায় বাইডেন-হ্যারিস প্রশাসন প্রথম দিন থেকেই কাজ চালিয়ে যাবে।
বুধবার ডেলাওয়ারের উইলমিনটনে দেওয়া এক ভাষণে ক্ষমতায় আসার বিষয়ে নিজের আশাবাদের কথা জানান বাইডেন। জো বাইডেন বলেন, তিনি নিজেকে জয়ী ঘোষণা করতে আসেননি। তবে তার জয় এখন স্পষ্ট। রানিং মেট কমলা হ্যারিসকে সঙ্গে নিয়ে দেওয়া ভাষণে বাইডেন আবারও ঐক্যবদ্ধ জাতি গড়ার অঙ্গীকার করেন। বলেন, লাল-নীল বিভেদ তিনি মুছে দিতে চান।
বাকি ভোট গণনার আগে নিজের জয় দাবি না করে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী বাইডেন বলেন, রাতভর গণনার পর এখন এটা স্পষ্ট। আমি এখানে ঘোষণা দেবো না যে, আমরা জিতে গেছি। কিন্তু বলতে চাই গণনা শেষ হলে আমাদের বিশ্বাস আমরাই জিতবো। বাইডেন বলেন নির্বাচনের ফলাফল চূড়ান্ত হয়ে যাওয়ার পর প্রচারকালের কঠোরতাকে পেছনে ফেলে পরস্পরকে আবার দেখার, শোনার এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধা প্রদর্শন এবং যত্ন করার সময় আসবে। দেশকে ঐক্যবদ্ধ করার প্রশ্নে বাইডেন বলেন, আমেরিকানদের পরস্পরকে শত্রু ভাবা বন্ধ হবে। একজন আমেরিকান প্রেসিডেন্টের মতো দেশ শাসন করবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। ডেমোক্র্যাট জো বাইডেন বলেন, জেতার পর কোনও লাল রাজ্য এবং নীল রাজ্য থাকবে না, কেবল ইউনাইটেড স্টেটস অব আমেরিকা থাকবে। আমাকে যারা ভোট দেয়নি কিংবা ভোট দিয়েছে সবার জন্যই জোরালোভাবে কাজ করবো।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: