আসামে বাঙালিদের নাগরিকত্ব নিয়ে পরষ্পর বিরোধী অবস্থানে সিআরপিসিসি
প্রকাশিত:
৪ মে ২০১৮ ০৫:২০
আপডেট:
৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৪:২৩
ভারতের আসামে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) নবায়ন প্রক্রিয়ায় বাঙালিদের নাগরিকত্ব নিয়ে নাগরিক অধিকার রক্ষা সমন্বয় সমিতির (সিআরপিসিসি) পরষ্পর বিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা গেছে।
মঙ্গলবার উত্তর-পূর্ব ভারতের বাংলা দৈনিক প্রান্তজ্যোতি এক প্রতিবেদনে একথা জানিয়েছে।
সিআরপিসিসির মতে প্রকৃত ভারতীয় নাগরিকের সংজ্ঞা নিয়ে আসামের শিলচরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিআরপিসিসি কর্মকর্তারা বলেন, নাগরিকত্বের প্রশ্নে আসাম চুক্তিকে অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই। এই সূত্রে ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চ মধ্যরাতই হচ্ছে ভিত্তিবর্ষ।
এক্ষেত্রে ৭১এর ২৪ মার্চের পর ধর্মীয় নির্যাতনের বলী হয়ে যারা এদেশে এসেছেন তাদের নাগরিকত্বের জন্য পৃথক আইন তৈরির দাবি জানানো হবে বলে সিআরপিসিসি কর্মকর্তারা অভিমত দেন।
সিআরপিসিসির পক্ষ থেকে বলা হয়, অবিভক্ত ভারতের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে প্রয়োজনের কারণে এসে বসতি স্থাপন করা কিংবা নির্যাতনের শিকার হয়ে বর্তমান ভারতে আসা কারোরই নাগরিকত্ব খারিজ হওয়ার প্রশ্ন উঠে না। স্বাভাবিকভাবেই তাদের উত্তরপ্রজন্মরা এদেশের নাগরিক। এক্ষেত্রে নথিপত্র থাকুক বা না-ই থাকুক তাদের নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত করা কিছুতেই মেনে নেওয়া হবে না বলে সাফ জানান সিআরপিসিসি কর্মকর্তারা।
এর ফলে ৭১' এর ২৪ মার্চ ভিত্তিবর্ষ নাকি নিঃশর্ত নাগরিকত্ব- এ দুইয়ের কোনটি চায় সিআরপিসিসি তা স্পষ্ট হয়নি। বরং সব মিলিয়েএনআরসি নবায়নের বাঙালির নাগরিকত্বের প্রশ্নে রাজ্যের ৪২টি সংগঠন নিয়ে গড়ে ওঠা সিআরপিসিসির নড়বড়ে অবস্থানই এদিন পোক্ত হলো।
শুধু তাই নয়, সাংবাদিক সম্মেলনে বসেই সিআরপিসিসি কর্মকর্তঅদের নাগরিকত্ব নিয়ে একেক বার একেক সুরে কথা বলতে শোনা গেল।
আসামের হিন্দু বাঙালিদের জাত্যভিমাণ ভুলে আসামিয়াদের সঙ্গে মিশে যাওয়া উচিত। এতেই নাগরিকত্ব নিয়ে যাবতীয় সমস্যা মিটে যাবে- সম্প্রতি ত্রিপুরার রাজ্যপাল তথাগত রায় এ মন্তব্য করেন।
মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলনে তথাগত রায়ের এমন মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সিআরপিসিসির সভাপতি অধ্যাপক তপোধীর ভট্টাচার্য বলেন, ত্রিপুরার রাজ্যপাল তথাগত রায় সাংবিধানিক পদমর্যাদা লঙ্ঘন করে প্ররোচনামূলক ও যুক্তিহীন মন্তব্য করেছেন। তার মন্তব্যে গৈরিকী করণের স্পষ্ট গন্ধ রয়েছে।
এদিকে সিআরপিসিসির সাধন পুরকায়স্থ, কিশোর ভট্টাচার্য, হিলাল উদ্দিনসহ রোকন উদ্দিন বলেন, এ মাসের ৯ তারিখ শিলচরে জয়েন্ট পার্লামেন্টারি কমিটির (জেপিসি) প্রতিনিধিরা আসছেন। তাদের সঙ্গে দেখা করে প্রাথমিকভাবে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলকে সিআরপিসিসির পক্ষ থেকে সমর্থন জানানো হলেও ওই বিলের ত্রুটিগুলি তুলে ধরা হবে। অর্থাৎ ধর্মীয় কারণে নয়, দেশ ভাগের কারণে আসামের বাঙালিদের নিঃশর্ত নাগরিকত্ব দেওয়ার বিষয়টি ওই বিলে অন্তর্ভুক্তির দাবি জানানো হবে।
তারা জানান, এক্ষেত্রে নাগরিকত্ব আবেদনের জন্য ছয় বছর নয় ছয় মাস সময়সীমা দেওয়ার কথা নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে উল্লেখ করার পাশাপাশি আবেদনকারীদের নথিপত্র ছাড়াই নিঃশর্ত নাগরিকত্ব দিতে হবে বলেও সিআরপিসিসির পক্ষ থেকে জানানো হবে।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: