সিডনী বৃহঃস্পতিবার, ১৮ই এপ্রিল ২০২৪, ৫ই বৈশাখ ১৪৩১


সামুদ্রিক ঘাস রক্ষায় সাগরতলে ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ : মু: মাহবুবুর রহমান


প্রকাশিত:
২২ মার্চ ২০২১ ১৭:৩৬

আপডেট:
১৮ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:১৫

 

সামুদ্রিক ঘাস ও সাগরতলের জীবন রক্ষার আহবান জানিয়েছেন মৌরিতানিয়ার এক নারী সমুদ্রবিজ্ঞানী। এজন্য তিনি সাগরের নিচে প্ল্যাকার্ড হাতে নেমে এক অভিনব প্রচারণা চালান। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিশ্বজুড়ে চলমান আন্দোলন জোরদার করতেই তিনি প্রতিবাদের এ অভিনব কৌশল বেছে নেন।

মৌরিতানিয়ার শামা সানদুইয়া (Shaama Sandooyea) নামের ২৪ বছর বয়সী ওই সমুদ্রবিজ্ঞানী মার্চ মাসের শুরুর দিকে জলবায়ু রক্ষায় ঐ প্রচারণায় অংশ নেয় বলে জানা গেছে। তবে রয়টার্সসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে ১৮ই মার্চ।    

শামা সানদুইয়া পশ্চিম ভারত মহাসাগরের সায়া দে মালহা ব্যাংক এলাকায় এ প্রচারণায় অংশ নেন। এলাকাটি সিসেলস দ্বীপপুঞ্জ থেকে ৭৩৫ কিলোমিটার দূরে এবং মৌরিতানিয়ার অন্তর্ভুক্ত সমুদ্র এলাকা। আর ভারত মহাসাগরের পশ্চিমাঞ্চলে আফ্রিকার উত্তর–পশ্চিমাঞ্চলীয় দেশ হলো মৌরিতানিয়া।

মৌরিতানিয়ার সায়া দে মালহা ব্যাংক উপকূলীয় এলাকাসহ সমগ্র বিশ্বের সাগরতলের বিশাল এলাকাজুড়ে গড়ে ওঠা সামুদ্রিক ঘাস রক্ষার জন্যই মূলত: শামা সানদুইয়া এ প্রচারণায় অংশ নেন। কারণ ঐ সামুদ্রিক ঘাসের ওপর হাজারো সামুদ্রিক প্রাণী খাদ্য ও বসতির জন্য নির্ভরশীল। এছাড়া ঐ সামুদ্রিক ঘাস বিপুল পরিমাণ কার্বন ডাই–অক্সাইড গ্যাসও শোষণ করে, যে কার্বন ডাই–অক্সাইড বৈশ্বিক উষ্ণায়নের জন্য দায়ী। কিন্তু খনন, সমুদ্রের গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধিসহ নানা কারণে বিশ্ব প্রতিবছর প্রায় ৭ শতাংশ হারে সাগরতলের ঘাস হারাচ্ছে।

 

এমন পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে সাগরতলে প্রতিবাদ জানান  শামা সানদুইয়া।  তিনি সমুদ্রের পানির নিচে ‘ইয়ুথ স্ট্রাইক ফর ক্লাইমেট (Youth Strike for Climate)’ (বাংলায় ‘জলবায়ু রক্ষার জন্য যুবসমাজ’) প্ল্যাকার্ড হাতে প্রচারে অংশ নেন। শামা সানদুইয়ার আশা তাঁর সমুদ্রের তলদেশের প্রতিবাদ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আরও আক্রমণাত্মক বৈশ্বিক পদক্ষেপের সূচনা করতে সহায়ক হবে।

শামা ও তাঁর সহযোগীরা ২০৩০ সাল নাগাদ পৃথিবীর জল ও স্থলভাগের ৩০ শতাংশ অঞ্চল সুরক্ষিত এলাকা হিসেবে গড়ে তুলতে জাতিসংঘের লক্ষ্য অর্জনে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে কাজ করছেন। বিজ্ঞানীদের মতে, এ পরিমাণ স্থল ও জলভাগ সুরক্ষিত এলাকা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা গেলে জলবায়ু পরিবর্তন রোধ ও জীববৈচিত্র্য বিনষ্ট হওয়া প্রতিরোধ করা সম্ভব।

শামা সানদুইয়ার সমুদ্রতলের এ প্রতিবাদ বিশ্বের পরিবেশ রক্ষায় নিবেদিত প্রাণ প্রতিষ্ঠান গ্রিনপিসের সঙ্গে সম্পর্কিত। আর্কটিক সানরাইজ (Arctic Sunrise) নামক গ্রিনপিসের একটি নৌকা থেকেই তিনি সমুদ্রের তলদেশে নামেন। এসময় তিনি বলেন, ‘‘সাগরে এমন অনেক প্রাণী আছে, যার সম্পর্কে আমরা আজও জানতে পারিনি। মানুষের নেয়া সিদ্ধান্ত ও কার্যকলাপের কারণে সামুদ্রিক প্রাণীগুলোর ভোগান্তি হওয়া উচিত নয়। কিন্তু তাদের রক্ষায় দৃঢ় কোনো পদক্ষেপই নেয়া হচ্ছে না, যা একেবারে অগ্রহণযোগ্য।’

 

মু: মাহবুবুর রহমান
নিউজিল্যান্ডের মেসি ইউনিভার্সিটির পিএইচডি গবেষক

 

এই লেখকের অন্যান্য লেখা



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top