সিডনী বৃহঃস্পতিবার, ২রা মে ২০২৪, ১৯শে বৈশাখ ১৪৩১

গুইসাপ : সায়মা আরজু


প্রকাশিত:
৯ জুলাই ২০২০ ২১:৪৩

আপডেট:
২ মে ২০২৪ ২১:২৯

ছবিঃ সায়মা আরজু

 

লঞ্চঘাটে এসে সোজা একটা ভাতের দোকানে ঢুকে নদীর পাঙ্গাস মাছ আর ভাতের অর্ডার করে রহমত আলী। তারপর পানির জগটা আর একটা গ্লাস কাছে টেনে নেয়। আজকাল লঞ্চে মানুষ যাতায়াত করে কম তাই তেমন ভীড় নাই। রহমত আলীর গন্তব্যও স্যাকরার দেকান হয়ে সোজা বাড়ি, লঞ্চে যাবে না সে। বাড়ির কথা মনে আসাতেই দ্বিতীয় গ্লাস পানি খায় । চোখের সামনে নিজের মেয়ে রত্নার মুখ ভেসে ওঠে। মেয়েটাকে বিয়ে দিতে চেয়েছিলো গত বৈশাখ মাসে, তা আষাঢ় মাস পড়লো তাও ছেলে পক্ষের চাহিদা মেটাতে হিমসিম খাচ্ছে। বিয়ে তাই পিছিয়ে কার্তিক মাসে। বিয়ের সময় দুগাছা সোনার চুড়ি, একজোড়া কানের দুল আর গলার হার দেবে স্বীকার গিয়েছে রহমত আলী। কোনোমতে গলার একটা চেইন জোগাড় হয়েছে আর বৌ'র কানের দুল জোড়া দেবে ভাবছে। সোনার চুড়ির তো মেলা দাম, যোগাড় করতে পারে নাই। তাও হয়তো হত কিন্তু জামাইকেওতো সাইকেল, নগদ ক্যাশ দিতে হবে, তারও তো জোগাড় চাই। তার উপরে বরযাত্রী সহ দাওয়াত খেল কম করে হলেও পঞ্চাশ জন মানুষ, কেবল পান -চিনি অনুষ্ঠানে। তাদের নাকি বড় বংশ, কাকে থুয়ে কাকে বলবে অবস্থা। 

রহমত আলীর মনে পড়ে বৌ'র হাতে এক জোড়া বালা ছিল, ব্রঞ্জের উপর। একবার দাওয়াত খেতে যাবে বলে বড়বুবু ধার নিল আর দিল না। বৌ অবশ্য দিতে চায় নাই, মা'র কাকুতি মিনতিতে আর আমার চাপে দিতে বাধ্য হয়েছে। পরে আবার বৌএর অনুরোধে যখন চাইতে গেছি বড়বুবুর কাছে সে বলে," ওতে সোনা ছিলো নাকি মোটে, একেবারে তামা! কবে ভাইঙ্গা গেছে, ফেইলা দিছি। তোরে ঠকাইলোরে, ভাই, বুজতে পারলি না।" বাড়ি এসে বৌকে একথা বলতেই বৌ বলে, কি কও কম করি হলিও পাক্কা ছয় আনা সোনা ছিল ওতে।" আমি মুখে ঝামটা মেরে বলি," এহ্ ছয় আনা সোনা,বললিই হল,সোনা দেখেছিস কোনোদিন!" বউ বিলাপ করে কাঁদে আর অভিশাপ দেয়। 

রহমত আলী মাছের ঝোলে ভাত মাখায়। ভিতরের বুক পকেটে আড়াই হাজার টাকা গতকাল সহ আজকের ইনকাম। আরোও একটা জিনিস আছে থলির মধ্যে পলিথিনের ছোট্ট পুটুলিতে। এটার জন্যই তার মনটা আজ বেশ ভাল। রহমত আলী খেতে শুরু করে।

সেদিন দুপুরের খাওয়ার পর একটু চোখ লেগে এসেছিল অমনি বাজারের দোকানদার লতিফ গাজী ডাক দেয়। বলে বোয়ালপুর গ্রামে মেম্বারের ভাতিজি  শহর থেকে বেড়াতে এসেছে। তাকে আজ সকালে সাপে কেটেছে, সেখানে যেতে হবে। সাপের বিষ নামানো সাপ ধরা, বাড়ি বেন্ধে দেয়া এইসবে বেশ নামডাক আছে রহমত আলীর। তবে আজকাল এসব আর তেমন কেউ করায় না। তাছাড়া সাপের কামড়ে মানুষ এখন হাসপাতালে যায়, ইনজেকশন নেয়, মারা যায় না। আর সাপ গুলোও কি বিষহীন হয়ে গেল আমার মত! যত্তসব ঢেড়া সাপ,মনে মনে ভাবে সে। মুখে বলে, 

-সকালে কামড়াইছে, বোয়ালপুর তো মেলা দূর, যাইতে কম কইরা হইলেও তিন ঘন্টা সময় লাগব।।, ততক্ষনে রোগীর অবস্থা কি হয়? 

লতিফ গাজী জানালো কেউ একজন মোটরসাইকেল নিয়ে এসেছে তো বেশী সময় লাগবেনা। রহমত আলী তখনই তার ঝোলা নিয়ে বেড়িয়ে পড়ে।গ্রামের রাস্তা, প্রায়ই সামনে বেজি, গুইসাপ পড়ছে । হঠাৎ শব্দে ভয় পেয়ে পাশের ঝোপে পালায় সেগুলো।

রহমত আলী শুনেছে সোনা গুইসাপের পেটের মধ্যে নাকি সোনার তাল পাওয়া যায়। একটা সোনা গুইসাপ ধরতে পারলে সারা জীবনে আর কোনো কাজ করা লাগতো না। সে অবশ্য মাঝে সাঝে সাপ ধরে। সাপের চামড়া, গুই সাপের চামড়া বিক্রি করাও তার পেশা।তবে সোনালী রঙের সোনা গুইসাপ এখনও হাতে পড়ে নাই।

মেম্বারের বাড়ি পৌঁছে দেখে অন্তত একশ লোক জমা হয়েছে। রহমত আলী ভাব নেয়, মেপে পা ফেলে, নিজেকে মনে করিয়ে দেয় এখানে সে সবচেয়ে ক্ষমতাবান।  সবাইকে সরে যেতে বলে। জটলা একটু পাতলা হলে রোগীর কাছে যায়। দেখে মেয়েটির বয়স বিশের কাছাকাছি, ফরসা গায়ের রং ভয়ে আরোও সাদা হয়ে গেছে। রহমত আলী জানতে চায় কি হয়েছিল। একজন মোটামত মহিলা বলেন সকালে উঠানে হাত পা ধুয়ে স্যান্ডেল পড়ছিল, তখন সাপে কামড় দিয়েছে। চাপ কলের পাশে একটা পানি রাখার মটকি আছে। তার নীচে ছিল সাপটা। তবে সাপটাকে কেউ দেখে নাই তাই কি সাপ সেটা বোঝা যাচ্ছেনা। পায়ের কামড়ের দাগটা দেখেই রহমত আলী বুঝে গেল সেটা সাপের কামড় নয়, বড়জোড় ইঁদুর টিদুরের হবে, তবে গুইসাপও হতে পারে। যেটাতেই কামড়াক পুরোপুরি দাঁত বসাতে পারেনি, কেবল আঁচড় কেটেছে। তারপরেও কামড়ের কিছুটা উপরে শক্ত করে বেঁধে দিতে দিতে জিজ্ঞেস করল কোনও ডাক্তার দেখানো হয়েছে কিনা। মহিলা জানালো বাজারের ডাক্তার একটা ইনজেকশন দিয়ে গেছেন কিন্তু তাতে তারা তেমন ভরসা পাচ্ছে না। রহমত আলী আস্বস্ত হয়।

এবার রহমত আলী মনে মনে নাটক সাজিয়ে নেয়। গম্ভীর চিন্তিত মুখ করে একটা মাটির হাড়িতে ধুপ, ধুনো আর কি সব লতা পাতা এক করে আগুন জ্বালিয়ে ধুয়া দিল রোগীর আসে পাশের পাঁচ হাত জায়গায়। তার পর যেখান থেকে কামড় খেয়েছে সেই জায়গাটা দেখতে চাইল। রহমত আলীর ধারনাই ঠিক। টিউবওয়েলের চারদিকটা পরিস্কার। সেখানে সাপ থাকার সম্ভাবনা কম। তবে কলের থেকে দুই তিন হাত পশ্চিমে মিষ্টি আলুর চাষ করেছে কেউ। ওটাই শত্রুর সম্ভাব্য আস্তানা ভেবে রহমত আলী একটা লম্বা কাঠি দিয়ে আলু গাছের উপর বাড়ি দেয়। 

একটা ধেরে ইঁদুর দৌড়ে পাশের কচুরিপানার ডোবার মধ্যে পালায়। আলুর লতাগুলো উল্টেপাল্টে ও আর কিছুর দেখা মিলল না। মুখের কঠিন ভাব ধরে রেখে রহমত আলী ফিরে আসে রোগীর কাছে। থলে থেকে বীন বের করে। অপরিসীম দক্ষতায় বাজিয়ে যায় টানা পাঁচ মিনিট। এর পর ডোর দেয়া শুরু করে। প্রতিবার ডোরের শেষকাজ সূঁচ ফুঁটিয়ে কালো রক্ত বের করে কচু পাতায় রাখা। প্রথমবার সূঁচ ফোটাতে গিয়ে কেমন একটু মায়া হয় মেয়েটার উপর। অতিরিক্ত চেপে বসা বাঁধনগুলোর জন্য ফর্সা পা দুটোর জায়গায় জায়গায় কালসিটে দাগ পড়েছে। তখনই তার নজরে পড়ে জিনিসটা।লোভ লিকলিকে জিহ্বায় বিষ ছড়ায়। পরপর আটবার ডোর দিয়ে ক্ষান্ত হয় রহমত আলী। মাঝে নিয়মিত বিরতিতে ধুপ ধুনোর যজ্ঞ, মন্ত্র পাঠ, বীন বাজানো চলতে থাকে।

রোগী কে আগামী বার ঘন্টা পানি আর ফল ছাড়া কোনোও কিছু খাওয়াতে নিষেধ করে রোগীর হাতে একটা তাবিজ বেঁধে দিয়ে কাজ শেষ করে রহমত আলী। এরপর চারদিক তীক্ষ্ণ পরখ করে নিজের পোটলা গুছিয়ে নিয়ে বাকী রাতটা কাছারি ঘরে ঘুমিয়ে কাটায়। 

সকালে মেম্বার সাহেব দুই হাজার টাকা দেন। নাতনী অনেকটা ভাল এখন। মেম্বারকে সালাম করে বের হতে যাবে তখনই বাড়ির মধ্যে হৈ হৈ চ্যাঁচামেচি শুরু হয়। কাজের ছেলে বারেক এসে জানায় ক'দিন ধরে একটা গুই সাপ বেশ উৎপাত করছে। আজও একটা মুরগীর বাচ্চার ঠাং কামড়ে নিয়ে যাচ্ছিল। বাড়ির পাশের পুকুরে মাছ চাষ করা হয়েছে সেটাতেও নামতে দেখা গেছে গুইসাপটাকে। মেম্বার সাহেব বললেন,

- গুইসাপ ধরা পার্টিকে খবর দিয়েছি, তুমি থাক ওগো লগে। যদি কোনো দরকার লাগে।

-জ্বি, আচ্ছা। 

গুইসাপ ধরা পার্টি আসতে আসতে বারোটা বাজে। রহমত আলী পুকুরের চারদিকে ছাই পড়া ছিটিয়ে দেয়।পুকুরে জাল ফেলে চারদিক দিয়ে কায়দা করে টেনে তুলতে থাকে ছেলেরা। হঠাৎ পুকুরে প্রবল ঘুর্নি। গুই সাপটা যখন টের পেল যে আটকা পড়েছে অমনি বাঁচবার আপ্রান চেষ্টা করতে থাকে। রহমত আলীর ডাক পড়ে। রহমত আলী আবার ছাই পড়া ছিটিয়ে দেয় পুকুরের জলে। প্রায় একঘন্টা কসরতের পর গুই সাপটাকে ডাঙ্গায় তোলা যায়। এরপর পিটিয়ে সেটাকে মেরে ফেলে ওরা। রহমত আলীর মন খারাপ হয়, এটাও সোনা গুইসাপ না। মেম্বার সাহেব রহমত আলীকে আরও পাঁচশ টাকা দেন। টাকা নিয়ে বের হয়ে সোজা লঞ্চ ঘাট। ভাগ্যিস এখনও কারো নজরে পড়েনি বিষয়টা। রোগী ক্লান্ত সে হয়তো খেয়াল করেনি। আর সকাল থেকেই সবাই গুইসাপ নিয়ে খুব ব্যস্ত।গুই সাপটা তার রক্ষা কর্তা। রহমত আলী কপালে হাত ঠেকায়, মনে মনে সালাম ঠুকে, তবে কাকে জানেনা।

খাওয়া সেরে রহমত আলী কাগজের টুকরায় হাত মোছে। অল্প একটু ধনিয়া ভাজা মুখে দিয়ে চিবুতে চিবুতে স্যাকরার দোকানের উদ্দেশ্যে হাঁটা দেয়। স্যাকরার দোকানে আজ ভরদুপুরে ও কাষ্টমার! একটু অবাক হলো সে। বিশ্বজিত স্যাকরা তার ছোটবেলার বন্ধু কিন্তু ব্যবসায়িক হিসেবে বেশ কড়া।গত মাসেই সে মেয়ের হাতের চুড়ি জোড়া বানিয়ে রেখেছে। কিন্তু রহমত আলীর যখন বাকী টাকা পরে দিবে বলে চুড়ি জোড়া বাড়িতে নিয়ে যেতে চেয়েছিল তখন ঠিক মুখের উপরে বলে দিয়েছে,” পাওনা দশ হাজার দিয়ে তারপর চুড়ি নিয়ে যাস্। আমার দোকানেই তো আছে কেউ তো আর নিয়ে যাচ্ছেনা। আর এখন সময় খারাপ। কাউকেই বাকীতে বিক্রি করিনা।“ খুব লজ্জা পেয়েছিল রহমত আলী সেদিন। বাড়ির পথে হাঁটতে গিয়ে মনে হয়েছিল কেউ দশ মন ওজনের একটা পাথর তার পায়ে বেঁধে দিয়েছে। সে যাক, আজ হাতে টাকা আছে। হঠাৎ পলিথিনের পুটলিটার কথা মনে পড়ে । থলির ভিতর হাত ঢুকিয়ে সাবধানে বের করে আনে, দেখে । স্যাকরার দোকানের কাষ্টমার বের হয়ে গেলে রহমত ঢোকে। 

-বড় পার্টি মনে হয়

- আর বড়! সেলিম গাজীর বড় মাইয়া বিয়া দিছে না উত্তর পাড়ায়? ওই জামাই।এগুলা বেচতে আইছে।

বলে কিছু গহনা বের করে। রহমত আলী অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে, 

-তা অলঙ্কার বেঁচে ক্যান?

- কইলো তো জমিন কিনব

-কোথায় 

- তা কয় নাই। তয় কি জান, মরা বৌ'র অলঙ্কার বেইচা জমিন কিনব কতাডা আমার বিশ্বাস হয় নাই। মাইয়াডা মরনের আগ দিয়া শেষমেষ এইডা বানাইয়া নিছিলো সেলিম গাজী। 

বলে একটা হার দেখায়। রহমত আলী দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে। 

- তয় জামাইডা ভালো না। মনে হয় নেশা আছে। মাইয়াডারে খুনই করল কিনা কেডা জানে? 

- হুনছিতো সেরাম। তা থানা, পুলিশ করে নাই?

- মাইয়াই নাই থানা পুলিশ দিয়া কি হইবে। কইছিলাম লতিফ গাজীরে যৌতুক আর কত দিবা? হুনে নাই। 

কথা বলতে বলতেই স্যাকরা চুড়ি জোড়া বের করে। মুখে জিজ্ঞেস করে আইজ কিছু টাকা দিবা? রহমত আলী পকেট থেকে দুই হাজার টাকা বের করে। 

-মাত্তর দুইহাজার! আরও আষ্টহাজার বাকী। 

বলে স্যাকরা মুখ ভার করে।রহমত আলীর কপালে চিন্তার রেখা। তার মনের মধ্যে একটা কথা বাজছে, মাইয়াডারে খুনই করলো কিনা....। পকেটে পর্যন্ত হাতটা গিয়ে পুটুলিটা স্পর্শ করেই হাতটা থেমে যায়। কাল কায়দা করে মেম্বরের নাতির পা থেকে একটা সোনার পায়েল সে তার জিনিসপত্রের সাথে ঝোলায় ভরে নিয়েছিল। ভেবেছিলো আজ স্যাকরাকে এটা দিলে কিছু টাকা উসুল হব। কিন্তু এখন মন বলছে এত চাহিদার ঘরে মেয়েটা ভালো থাকবে তো? চুরির টাকা তার যদি তার কোনোও ক্ষতি করে। তার থেকে মেয়েটা স্কুলে যাচ্ছে যাক। সামনের বার এসএসসি পরীক্ষা দিবে, দিক। মেয়েটাও বিয়েতে রাজি না, বলে নার্স হবে,মানুষের সেবা করবে। 

রহমত আলী স্যাকরার দোকান থেকে বের হয়ে এসে বুক ভরে নিঃশাস নেয়। বেশী করে জর্দা দিয়ে একটা পান খায়। এবার বাড়ির পথে হাঁটা দেয়। কিন্তু না, কিছুদুর এগিয়ে গিয়েও ফের উল্টো পথ ধরে ঘটকের বাড়ির উদ্দেশ্যে চলতে শুরু করে। না, এ বিয়ে দিবেনা সে মেয়েকে। অলঙ্কারের চাহিদা মেটাতে গিয়ে তার মেয়ে মরবে না। 

রহমত আলী খুব যে ভালো মানুষ তা নয়, মানুষ ঠকানো তার জিবীকার অংশ। তবে মেয়ের ক্ষতি হতে পারে এমন কিছু সে করতে পারবেনা। ঘটকের বাড়ি এসে শোনে ঘটক বাড়িতে নেই, কাছেই কোথাও গেছে।রহমত আলীর ঘুম পাচ্ছে খুব। ঘটক বাড়ির কাছে মসজিদের শান বাঁধানো ঘাটে শোয়া মাত্রই ঘুমিয়ে পড়ে।ঘুমের মধ্যে গুইসাপের স্বপ্ন দেখে ধড়মড়িয়ে উঠে বসে। পায়ের রাবারের জুতা জোড়া খুঁজতে গিয়ে দেখে একটা গুইসাপ জুতার পাশে বসে আছে।হাতে তালি দিয়ে সেটাকে তাড়িয়ে  হাত মুখ ধুয়ে, জুতা জোড়া পায়ে দিয়ে রহমত আলী বাড়ির পথে হাঁটে। নিজের মেয়েটাকে তার দেখতে ইচ্ছা করছে খুব!মেয়ের মুখটা প্রানপনে মনে করতে চায় । কিন্ত পারেনা। তার চোখে কেবল মোম্বরের নাতনীর  পায়ের কালসিটে দাগ আর গুইসাপের ছবি ভাসে। রহমত আলী হাঁটার গতি বাড়ায়, মাঝে মধ্যেই তার ডান হাতটা পকেট ছুঁয়ে নীচে নামে।মনে মনে সে ঠিক করে কাল একবার মেম্বারের বাড়ি যেতে হবে। পায়েলটা  ফেরৎ দিতে হবে। অভাবের সংসার, জিনিসটা কাছে থাকলে লোভ সামাল দিতে যদি সে না পারে! নাহ্, কালই যাবে সে মেম্বরের বাড়ি। 

 

সায়মা আরজু
শিক্ষক, গবেষক

 

এই লেখকের অন্যান্য লেখা



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top