লাইসেন্স বাতিলের নোটিশ পেতে পারে গ্রামীণফোন ও রবি
প্রকাশিত:
২৯ আগস্ট ২০১৯ ০০:৫১
আপডেট:
২০ এপ্রিল ২০২৫ ০৩:৩১

প্রভাত ফেরী ডেস্ক: মোবাইলফোন অপারেটর গ্রামীণফোন ও রবির লাইসেন্স বাতিলের উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। লাইসেন্স বাতিলের আগে নিয়ম অনুযায়ী কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠাবে বিটিআরসি। এটি তৈরি করতে দুই-একদিন সময় লাগবে। বিটিআরসির চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক সরকারি সফরে এখন ভুটানে রয়েছেন। তিনি দেশে ফিরলেই অপারেটর দুটিকে নোটিশ পাঠানো হবে বলে বিটিআরসি’র সূত্রে জানা গেছে।
গত এপ্রিল মাসে প্রায় ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা বকেয়া দাবি করে গ্রামীণফোনকে এবং ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা দাবি করে রবিকে নোটিশ পাঠায় বিটিআরসি। টাকা পরিশোধের জন্য অপারেটর দুটিকে দুই সপ্তাহ সময়ও দেওয়া হয়। বিটিআরসি থেকে তখন বলা হয়— গ্রামীণফোন ও রবির সর্বশেষ অডিটের পরে এই ডিমান্ড লেটার পাঠানো হয়েছে। কিন্তু দুই সপ্তাহের মধ্যে টাকা পরিশোধ না করায় বিটিআরসির কঠোর পদক্ষেপের অংশ হিসেবে গত ৪ জুলাই অপারেটর দুটির ব্যান্ডউইথ সীমিত করে দেওয়া হয়। এরপর এই আদেশ প্রত্যাহার করে এনওসি দেওয়া বন্ধ করা হয়।
এ বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত হচ্ছে—কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। বারবার অপারেটর দুটিকে তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও তারা রাষ্ট্রীয় বকেয়া পরিশোধ করছে না। ভালো সাড়া পাচ্ছি না। তারা টাকা না দেওয়ার নানা ফন্দি আঁটছে। টালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করছে। কিন্তু আমাদের আইনের কাঠামোতে যা আছে, আমরা তা করবো। আমরা অপারেটর দুটিকে নোটিশ দেবো। সেই নোটিশে লাইসেন্স বাতিলের কথাও থাকবে। আমরা অপারেটর দুটিকে দেখবো—তারা কী সাড়া দেয়, কী রিঅ্যাক্ট করে। পরবর্তীতে সেই মতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পাওনা পরিশোধ না করায় গত ২২ মে বিটিআরসি ‘কমিশন বৈঠক’ (২২৭তম বৈঠক) করে সিদ্ধান্ত নেয়, অপারেটর দুটির বিরুদ্ধে অপারেশনাল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তখন অপারেটরগুলোর বিরুদ্ধে ৮টি অপারেশনাল ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বিটিআরসির জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (মিডিয়া উইং) জাকির হোসেন খান বলেন, ‘সরকারি পাওনা পরিশোধে অপারেটরদের সহায়তা সব সময় কাম্য। কমিশনের যেকোনও ধরনের উদ্যোগ ও পদক্ষেপ আইন অনুযায়ী গ্রহণ করা হয়ে থাকে। আমরা আশাবাদী, অপারেটররা তাদের অনুকূলে যে পাওনা আছে, তা পরিশোধ করে একটা শৃঙ্খলার মধ্যে আসার চেষ্টা করবে। অন্যথায় লাইসেন্সের গাইডলাইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এরইমধ্যে কমিশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো এবিষয়ে কাজ শুরু করেছে। বিটিআরসির একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, নোটিশ তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। লাইসেন্স বিধি অনুযায়ী অপারেটরগুলোকে নির্দিষ্ট সময় দিয়ে (৩০ দিন হতে পারে) লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হতে পারে। জবাব পেলে সে মতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর জবাব না পেলে পরবর্তী কমিশন বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপন করে সমাধানের পথ খোঁজা হবে। তখন লাইসেন্স বাতিলের সিদ্ধান্তও হতে পারে।
বিটিআরসির একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, লাইসেন্স বাতিলের চিঠি দেওয়াই তো অনেক বড় একটা ঘটনা। এই নোটিশ দিলে বিশ্বের বড় বড় গণমাধ্যমে তা প্রকাশ হবে। এটা অপারেটরগুলোর শেয়ারহোল্ডারদের ইমেজের একটা বিষয়। এটাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এমনকি বিশ্বব্যাপী এই প্রতিষ্ঠান দুটির শেয়ারের দাম কমতে পারে। তিনি গ্রামীণফোনের বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, নোটিশ জারি হলে দেশের বাজারেও গ্রামীণফোন শেয়ার মূল্য হারাতে পারে। এমন একটা আশঙ্কা রয়েছে। কারণ, শেয়ারহোল্ডাররা বিষয়টা ভালোভাবে নাও নিতে পারেন।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: