বসন্ত এসে গেছে : অমিতাভ ভট্টাচার্য্য
প্রকাশিত:
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২০:৩৭
আপডেট:
১৫ মার্চ ২০২৫ ১২:২৫

তুমি আমাকে প্রায়ই বলতে, ‘বসন্ত এসে গেছে’,
আমি তোমার প্রত্যেকটি কথা বিশ্বাস করেছিলাম.
একটা আঊষ ধানের শীষ দাঁতে কাটতে কাটতে
পলাশ ফুলে্র মালা গাঁথতাম মনে মনে;
তারপর সেই মালা পরে নিতাম নিজের খোঁপায়।
পরজ বসন্ত তখন মল্লারের সাথে মিশে যেত কি না,
সে খবর হয়ত বা কেউ রাখত, তবে সে আমি নয়।
আমি নিতান্তই এক আটপৌরে কিশোরী,
স্বপ্ন দেখছিলাম লাল বেনারসী আর সিন্দুরের;
পলাশ ফুলের রঙের সাথে আশ্চর্য্য মিল তাদের।
আরও একটি রঙের সাথে যে তার মিল ছিল,
আমার সেকথা জানা ছিল না।
তুমি বলেছিলে,-
‘বসন্ত এসে গেছে,কোকিলের ডাক শুনতে পাচ্ছোনা’?
হঠাৎ যেন বদল এল ঘন বর্ষায় মল্লারের চলনে,
আরোহণে আর অবরোহণে।
মিঞা-কি-মল্লারের চলনে আমি তখন সিক্ত;
তোমার মনের বিজাতীয় ভাবের ছায়ায়
ঘন বর্ষায় বসন্তের কোকিলদের চিনতে কষ্ট হয়নি।
অসময়ের বসন্তকে আমার মনের গভীরে
দাগ রেখে দেবার জন্যে তুমি বলেছিলে,
‘কোকিলেরা আজকাল সব ঋতুতেই ডাকে’;
আমি তোমার সেই কথা বিশ্বাস করেছিলাম।
আলের ওপর দিয়ে যাচ্ছিলাম
সেই দুপুরে তোমার সাথে।
পচা শামুকে পা কেটে রক্ত বেরোল,
দেখতে পেলাম আমার স্বপ্নের রঙ
তরল পলাশের পাঁপড়ি;
কারা যেন ফুল থেকে ছিঁড়ে
আমার চারদিকে ছড়িয়ে দিয়েছে।
আমার দিকে একরাশ করুণা বর্ষণ করে
তুমি চলে গেলে,
ছড়িয়ে থাকা পলাশের পাঁপড়িগুলোকে
নিজের পায়ে দলিত মথিত করে।
রয়ে গেল নির্ভেজাল এক স্বপ্নের কঙ্কাল,
সাক্ষী রইল অকাল বসন্তের কয়েকটি মুহুর্ত।
অমিতাভ ভট্টাচার্য্য
কোলকাতা, পশ্চিম বঙ্গ, ভারত
বিষয়: অমিতাভ ভট্টাচার্য্য
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: