যেসব ক্ষমতায় মানুষকে ধোকায় ফেলে শয়তান


প্রকাশিত:
১০ মার্চ ২০২০ ০৩:০৫

আপডেট:
১৯ এপ্রিল ২০২৫ ২৩:১৯

ফাইল ছবি

প্রভাত ফেরী: মানুষ আল্লাহর ইবাদত ও খিলাফতের তথা তাঁর দাসত্ব ও প্রতিনিধিত্বের দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে অধিষ্ঠিত থাকতে পারে এই মর্যাদার আসনে। মানুষের এই মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্বের মূল কারণ আল্লাহর দাসত্ব ও প্রতিনিধিত্ব। এই দায়িত্ব পালনের উদ্দেশ্যেই তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে। কিন্তু, সে যদি এই দায়িত্ব পালন থেকে বিচ্যুত হয়, কিংবা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন না করে, তখন সে অনিবার্যভাবে বিচ্যুত হয়ে পড়ে তার সেই মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্বের আসন থেকে। মানুষের পেছনে লেগে এ দায়িত্বই পালন করে শয়তান। মানুষকে তার দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের সহজ-সরল-সঠিক পথ থেকে বিভ্রান্ত ও বিচ্যুত করে তার প্রকৃত মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্বের আসন থেকে তাকে নিচে নামিয়ে দেয়াই শয়তানের প্রানান্তকর প্রচেষ্টা। এরি জন্যে সে মরিয়া হয়ে কাজ করে। এটাই তার জীবনের একমাত্র প্রতিজ্ঞা, একমাত্র অংগিকার।

শয়তান মানুষের প্রকাশ্য দুশমন। মানুষকে সঠিক পথ থেকে সরিয়ে নিতে আল্লাহর কাছে ক্ষমতা চেয়ে নিয়েছে শয়তান। আল্লাহ তাআলা শয়তানের সে আবদার মঞ্জুর করে তাকে অনেক বড় ক্ষমতা দিয়েছেন। শয়তানের পথভ্রষ্ট হওয়া ও মানুষের ক্ষতিতে ক্ষমতা লাভ ছিল তার অহংকার ও দাম্ভিকতা।

কুরআনুল কারিমে এ ঘটনা বিস্তারিত বর্ণিত হয়েছে। সুরা আরাফে আল্লাহ তাআলা বলেন-

>> আর আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি, এরপর আকার-অবয়ব, তৈরি করেছি। তারপর আমি ফেরেশতাদেরকে বলছি- আদমকে সেজদা কর। তখন সবাই সেজদা করেছে, কিন্তু ইবলিস সে সেজদাকারীদের অন্তর্ভূক্ত ছিল না।

>> আল্লাহ বললেন- আমি যখন নির্দেশ দিয়েছি, তখন তোকে কিসে সেজদা করতে বারণ করল? সে বলল, আমি তার চেয়ে শ্রেষ্ঠ। আপনি আমাকে আগুন দ্বারা সৃষ্টি করেছেন এবং তাকে সৃষ্টি করেছেন মাটির দ্বারা।

>> (আল্লাহ) বললেন তুই এখান থেকে নেমে যা। এখানে অহংকার করার কোনো অধিকার তোর নেই। অতএব তুই বের হয়ে যা। তুই হীনতমদের অন্তর্ভুক্ত। (সুরা আরাফ : আয়াত ১১-১৩)

 

শয়তানকে যখন আল্লাহ তাআলা বেহেশত থেকে বের করে দিলেন, তখন শয়তান আল্লাহর কাছে মানুষের ক্ষতি করার জন্য বেশি কিছু ক্ষমতা চেয়ে নিয়েছেন। আর তাহলো-

>> কেয়ামত পর্যন্ত হায়াত লাভ।

>> মানুষকে ধোকা দেয়ার ক্ষমতা লাভ।

>> সব দিক থেকে মানুষকে গোমরাহ করার ক্ষমতা লাভ।

শয়তানকে দেয়া ক্ষমতার বিবরণও আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে তুলে ধরেছেন। আল্লাহ তাআলা কুরআনে ইরশাদ করেন-

>> সে (শয়তান) বলল, ‘সে দিন পর্যন্ত আমাকে অবকাশ দিন, যেদিন তাদের (আদম সন্তানকে) পুনরুজ্জীবিত করা হবে।’

>> তিনি (আল্লাহ) বললেন, ‘নিশ্চয় তুমি অবকাশপ্রাপ্তদের অন্তর্ভূক্ত।’

>> সে (শয়তান) বলল, ‘যেহেতু আপনি আমাকে পথভ্রষ্ট করেছেন, সে কারণে অবশ্যই আমি তাদের জন্য আপনার সোজা পথে বসে থাকব।

>> তারপর অবশ্যই আমি তাদের কাছে তাদের সামনে থেকে, তাদের পেছন থেকে, তাদের ডান দিক থেকে, তাদের বাম দিক থেকে উপস্থিত হব। আর আপনি তাদের অধিকাংশকে কৃতজ্ঞ পাবেন না।’ (সুরা আরাফ : আয়াত ১৪-১৭)

সুতরাং শয়তানের প্ররোচনায় হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই। মহান আল্লাহ তাআলা শয়তান যেমন ক্ষমতা দিয়েছেন তেমনি পথহারা মানুষকে ক্ষমা করে দিতে তিনি খোলা রেখেছেন তাওবার দরজা। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআন-সুন্নাহর আলোকে সঠিক পথে থাকার তাওফিক দান করুন। তাওবার মাধ্যমে ক্ষমা লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।


বিষয়: শয়তান


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top