ইসলামের আলোকে হতাশা থেকে মুক্তির উপায়
প্রকাশিত:
৯ জানুয়ারী ২০২০ ২২:৩৩
আপডেট:
১০ জানুয়ারী ২০২০ ০১:০৩
প্রভাত ফেরী: হতাশা-মানব জীবনের অতি পরিচিত একটি বিষয়। প্রাপ্তির আশা যেমন রয়েছে আমাদের জীবনে, তেমনি রয়েছে হারানোর বেদনা এবং হতাশা। জীবন ধারণের বিভিন্ন ক্ষেত্রে, বিভিন্ন আদান-প্রদান বা লেনদেনে অনেক কিছু না পাওয়ার আঘাতে হতাশ হই আমরা। হয়ে পড়ি দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। এই হতাশাই আবার কাল হয়ে দাঁড়ায়। শয়তানের প্ররোচনায় হতাশ হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় অনেক মানুষ। ইসলাম মানুষকে হতাশ না হওয়ার ব্যাপারে যথেষ্ট উৎসাহ প্রদান করেছে। এক কথায় ইসলাম ধর্মে হতাশার কোনো স্থান নেই।
পবিত্র কোরআনে বহু স্থানে আল্লাহ তায়ালা বিভিন্ন প্রসঙ্গে বারবার বলেছেন, আমার রহমত থেকে তোমরা নিরাশ বা হতাশ হয়ো না। পবিত্র কোরানের সুরা জুমারের ৫৩নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা আরো ইরশাদ করেছন, বলুন, হে আমার বান্দাগণ! যারা নিজেদের ওপর জুলুম করেছ, তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সব গোনাহ মাফ করেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। সাধারণত বিভিন্ন বিপদের কারণেই হতাশাগ্রস্ত হই আমরা। কিন্তু ইসলামের নবি এই বিপদকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখার শিক্ষা প্রদান করেছেন।
জীবনে কখনও কখনও হতাশ হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু একে দীর্ঘ করা যাবে না। হতাশা দীর্ঘস্থায়ী হলে মানসিক সমস্যার সঙ্গে সঙ্গে শারীরিক সমস্যার কারণও হতে পারে। তাই অঙ্কুরেই হতাশা ছুড়ে ফেলতে হবে। মনে বা শরীরে কখনই বাসা বাঁধতে দেওয়া যাবে না। নিচে হতাশা থেকে মুক্তির কয়েকটি উপায় আলোচনা করা হলো।
১. কোরআন তেলওয়াত করা। এটির প্রভাব অতি সূক্ষ্মভাবে ব্যক্তির ওপার বর্তায়। যেকোনো ধরনের হতাশা এবং অবষণ্নতা থেকেও মুক্তি দিতে পারে কোরআন পাকের তেলওয়াত।
নিজের প্রতি সততা প্রদর্শন করা। বিষয়টি একটু অন্যরকম মনে হতে পারে। কিন্তু বাস্তবতা হলো প্রত্যাশা-প্রাপ্তির মিল-অমিলের কারণগুলো যদি খুঁজে বের করা যায় তাহলেও এক ধরনের সান্ত্বনা পাওয়া যায় যা হতাশা দূর করার কার্যকরী সহায়কও বটে।
২. নিজের ও অন্যের প্রতি সদয় হওয়া। নিজের প্রতি সদয় হওয়ার অর্থ নিজের ক্ষমতা, পরিণতি সম্পর্কে জানা এবং সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। অথচ, ইরশাদ হয়েছে ‘আল্লাহ; তিনিই প্রথম, তিনিই সর্বশেষ, তিনিই প্রকাশমান ও অপ্রকাশমান এবং তিনি সব বিষয়ে সম্যক পরিজ্ঞাত।’ (সুরা হাদিদ : ৩) অন্যদিকে নিজের সমস্যার সমাধান অনেক সময় অন্যের প্রতি সদয় হওয়ার মাধ্যমেই করা সম্ভব। বিষয়টা অবাক হওয়ার মতো মনে হলেও অত্যন্ত কার্যকরী। অন্যের উপকার করতে পারলে যে ধরনের সুখানুভূতি তৈরি হয় তা নিজের জন্য কিছু করতে পারলেও হয় না।
৩. নিজের যা কিছু আছে তাতেই সন্তুষ্টি থাকা এবং তা প্রকাশ করা। আমাদের মন খারাপ হয় তখন যখন আমরা আমাদেরকে অন্য কোনো ভালো অবস্থানের কারও সঙ্গে তুলনা করি। অথচ আমাদের উচিত ঠিক তার উল্টোটা করা। হাদিসেরও শিক্ষা তাই।
৪. আল্লাহর কাছে দোয়া করা। তিনিই শিখিয়ে দিয়েছেন কীভাবে দোয়া করতে হবে। ‘হে আমার পালনকর্তা, তুমি আমার প্রতি যে অনুগ্রহ নাজিল করবে আমি তার মুখাপেক্ষী।’ (সুরা কাসাস : ২৪)
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: