সিডনী শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৪, ১২ই বৈশাখ ১৪৩১


বাংলা সিনেমার এক প্রতিভাময়ী অভিনেত্রী : শিবব্রত গুহ


প্রকাশিত:
২৫ জুলাই ২০২০ ২১:৩৫

আপডেট:
২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৫:৪৪

ছবিঃ মহুয়া রায়চৌধুরী

 

বাংলা সিনেমাতে অনেক বিখ্যাত অভিনেত্রী এসেছেন। তাঁদের মধ্যে একজন হলেন মহুয়া রায়চৌধুরী। তাঁর অভিনয় প্রতিভার কোন তুলনাই হয় না। যে কোন চরিত্রে তিনি ছিলেন সাবলীল।

তাঁর অভিনয় দেখে আজো মুগ্ধ হয়ে যায় বাংলা সিনেমার অগণিত দর্শকবৃন্দ। সূচনা ষান্মাসিক বাংলা সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক কবি বানীব্রত বলেছেন, " মহুয়া রায় চৌধুরী ১৯৫৮ সালের ২৪ শে সেপ্টেম্বর, নৃত্যশিল্পী নিলাঞ্জন রায় চৌধুরীর ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। সুন্দরী মহুয়ার আর্থিক কারণে পড়াশোনা বেশি দূর হয়নি।

তবে, তিনি নাচের অনুষ্ঠানে অংশ নিতেন। সেই সুবাদে, ১৯৭২ সালে, পরিচালক তরুণ মজুমদারের ছবি " শ্রীমান পৃথ্বীরাজ " - এ তাঁর আত্মপ্রকাশ ঘটে। পরবর্তীতে, তাপস পালের সাথে দাদারকীর্তি বেশ জনপ্রিয় ছবি। তাপস পালের সাথে জুটিতে ও চিরঞ্জীতের সাথে বেশ কিছু হিট ছবি রয়েছে। এছাড়াও, দীপঙ্কর দে,
প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, সন্তু মুখোপাধ্যায় – এর সাথেও বেশ কিছু ছবিতে অভিনয় করেন। তাঁর অভিনয় ছিল মনোমুগ্ধকর। নৃত্যেও তিনি ছিলেন সাবলীল। তাঁর রূপ মুগ্ধ করেছে দর্শকদের। তিনি ছিলেন রূপালী পর্দার জনপ্রিয় নায়িকা। তাঁকে জানাই আমার বিনম্র শ্রদ্ধা। "

জুলাই মাস আসলেই আমাদের মনে পড়ে যায় বাংলা সিনেমার দুইজন বিখ্যাত শিল্পীর কথা।
একজন হলেন আমাদের সবার প্রিয় মহানায়ক উত্তম কুমার আর অন্যজন হলেন বাংলা সিনেমার দুষ্টুমিষ্টি নায়িকা মহুয়া রায়চৌধুরীর কথা। এনাদের দুজনকেই আমরা হারিয়ে ফেলি এই জুলাই মাসে।

মহুয়া রায়চৌধুরী অভিনীত কয়েকটি বাংলা সিনেমার নাম বলিঃ

১. আশীর্বাদ, ১৯৮৭। ২. আবির, ১৯৮৭। ৩. রাজ পুরুষ, ১৯৮৭। ৪. লালন ফকির, ১৯৮৭। ৫. সপ্তমুখী, ১৯৮৬। ৬. অভিমান, ১৯৮৬। ৭. প্রেম ও পাপ, ১৯৮৬। ৮. অনুরাগের ছোঁয়া, ১৯৮৬। ৯. সন্ধ্যা প্রদীপ, ১৯৮৫। ১০. তিল থেকে তাল, ১৯৮৫। ১১. আলোয় ফেরা, ১৯৮৫। ১২. আমার পৃথিবী, ১৯৮৫। ১৩. শত্রু, ১৯৮৪। ১৪. যোগ বিয়োগ, ১৯৮৪। ১৫. পরমা, ১৯৮৪। ১৬. পারাবত প্রিয়া, ১৯৮৪। ১৭. জবানবন্দি, ১৯৮৩।
১৮. রাজেশ্বরী, ১৯৮৩। ১৯. প্রতিশোধ, ১৯৮১। ২০. কপালকুন্ডলা, ১৯৮১।

দিনটা ছিল ১৯৮৬ সালের ২২ শে জুলাই, তখন, মহুয়া রায়চৌধুরীর বয়স মাত্র ২৭ বছর, তখনই তিনি ঢলে পড়েছিলেন মৃত্যুর কোলে। এই বয়সে তাঁর চলে যাওয়ার কথা ছিল না, কিন্তু, তাঁকে চলে যেতে হয়। তাঁর মৃত্যু ছিল বিতর্কিত। অনেকেই তাঁর এই মৃত্যুকে মেনে নিতে পারেনি। এখনো তাঁর এই মৃত্যুকে নিয়ে
চলছে প্রচুর তর্ক - বিতর্ক।

অনেকেই বলেছিলেন, মহুয়ার মৃত্যু নেহাত দুর্ঘটনা নয়। এর পেছনে রয়েছে অনেক, অনেক রহস্য। তাঁর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ এখনো কিন্তু অধরা। আজো, আজো, অনেকেই জানতে চান, কি কারণে, এত তাড়াতাড়ি মহুয়া রায়চৌধুরীকে চলে যেতে হল? কেন? কেন?

নাচ, অভিনয় সবেতেই দক্ষ ছিলেন তিনি। মাধবী চক্রবর্তী ছিলেন তাঁর মাধুমা। ভাত না খেয়ে, কাজে তিনি একদম বেরোতে পারতেন না। মাঝে মাঝে তিনি মাধুমার কাছে থেকে যেতেন। মহুয়া রায়চৌধুরী একটা ছবি করেছিলেন। তার নাম ছিল " দাদু নাতি হাতি "। সেই ছবিতে ছিল একটি হাতি। তিনি কি করতেন জানেন?
তিনি প্রতিদিন নিয়ম করে এক ছড়া কলা নিজে হাতে ওই হাতিকে খাওয়াতেন।

বাংলা সিনেমার এক প্রতিভাময়ী অভিনেত্রী, মহুয়া রায়চৌধুরীর অকালমৃত্যু, আজও ব্যথিত করে বাংলা সিনেমার দর্শকদেরকে।


( তথ্য সংগৃহীত)


শিবব্রত গুহ
কলকাতা

 

এই লেখকের অন্যান্য লেখা



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top