সিডনী রবিবার, ১৯শে মে ২০২৪, ৫ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


যে কারণে একদিন পিছিয়েছে বসন্ত উৎসব


প্রকাশিত:
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১০:৫০

আপডেট:
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ২১:২১

ফাইল ছবি

প্রভাত ফেরী: বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সঙ্গে জড়িত ঐতিহাসিক দিবসগুলোকে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের সাথে সমন্বয় করার জন্য বাংলা ক্যালেন্ডার পরিবর্তন করা হয়েছে। তবে এই পরিবর্তন কেবল বাংলাদেশের জন্যই করা হয়েছে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে যেখানে বাংলা একটি অন্যতম সরকারি ভাষা সেখানে এই পরিবর্তন করা হয়নি।

এখন থেকে পয়লা বৈশাখসহ জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলো নির্দিষ্ট দিনে পালন হবে। তবে পয়লা বসন্তের মতো দিনটি যেখানে প্রতিবছর তেরোই ফেব্রুয়ারিতে পালন করা হতো ২০২০ সাল থেকে বাংলা ফাল্গুন মাসের প্রথম সেই দিনটি চলে যাচ্ছে ১৪ই ফেব্রুয়ারিতে।

যা পরিবর্তন আসবে: বাংলাদেশে নতুন বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী এখন থেকে বাংলা বছরের প্রথম ছয় মাস ৩১ দিনে হবে। এর আগে বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ়, শ্রাবণ, ভাদ্র বছরের প্রথম এই পাঁচ মাস ৩১ দিন গণনা করা হত।

এখন ফাল্গুন মাস ছাড়া অন্য পাঁচ মাস ৩০ দিনে পালন করা হবে। ফাল্গুন মাস হবে ২৯ দিনের, কেবল লিপইয়ারের বছর ফাল্গুন ৩০ দিনের মাস হবে। বাংলা বর্ষপঞ্জি পরিবর্তনের কাজটি করেছে বাংলা একাডেমির গবেষণা, সংকলন এবং অভিধান ও বিশ্বকোষ বিভাগ।

এ বিভাগের পরিচালক মোবারক হোসেন বলছিলেন, ২১শে ফেব্রুয়ারি, ১৬ই ডিসেম্বর, ২৬শে মার্চের মত গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় দিবস সমূহ বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী যে দিনে অনুষ্ঠিত হয়েছিল, সেই দিনে পালন করা হবে। যেমন ২১শে ফেব্রুয়ারি, যা এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস যা বিশ্বব্যাপী পালিত হয়, ১৯৫২ সালে ভাষার দাবিতে নামা মিছিলে গুলি চালানোর সেই ঘটনা ঘটেছিল বাংলা আটই ফাল্গুনে। কিন্তু বছর ঘুরে অধিকাংশ সময়ই এখন ২১শে ফেব্রুয়ারি গিয়ে পড়ে নয়ই ফাল্গুনে, যা নিয়ে বিভিন্ন সময় লেখক, কবি, সাহিত্যিকসহ অনেকে আপত্তি জানিয়েছিলেন।

মোবারক হোসেন বলেন, একইভাবে বাংলাদেশের বিজয় দিবস ১৬ই ডিসেম্বর, ১৯৭১ সালের ঐ দিনটি ছিল পয়লা পৌষ, কিন্তু বাংলা পঞ্জিকায় দিনটি পড়ত দোসরা পৌষ। আবার রবীন্দ্রজয়ন্তী ও নজরুলজয়ন্তী এবং তাঁদের মৃত্যুদিনও বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী যে দিনে হয়েছিল, তার সঙ্গে গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জির দিন মেলে না। কিন্তু নতুন নিয়মে দুই বর্ষপঞ্জির মধ্যে দিন গণনার সমন্বয় করা হয়েছে। এই পরিবর্তন মূলত চলতি ১৪২৬ বঙ্গাব্দের প্রথম দিন থেকে চালু হয়েছে বলেও জানান তিনি।

যেভাবে সংস্কার: বাংলাদেশে এই নিয়ে দ্বিতীয়বারের মত বর্ষপঞ্জি সংস্কার করা হলো। বাংলা বর্ষপঞ্জি সংস্কারের কাজ প্রথম শুরু হয়েছিল ভারতে ১৯৫২ সালে। নতুন করে পরিবর্তন আনার জন্য ২০১৫ সালে বাংলা একাডেমি সংস্থাটির তৎকালীন মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খানের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে। সেই কমিটিতে ড. অজয় রায়, জামিলুর রেজা চৌধুরীসহ বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞ সদস্য ছিলেন।

বর্ষপঞ্জি সংস্কার দেশে দেশে: বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান বলেন, গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জিও অনেক বার পরিবর্তন হয়েছে, অনেক বছর ধরে সংস্কার হয়েছে। ইটালিতে পোপের করা গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জির সংস্কার ক্যাথলিক প্রটেস্টান্ট দ্বন্দ্বের কারণে ইংল্যান্ড গ্রহণ করেছিল ৭৫ বছর পর। এমনকি হিজরি সনেরও নানা সময়ে সংস্কার করা হয়েছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top