সিডনী শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৪, ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১


রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করলো চীন : মু: মাহবুবুর রহমান 


প্রকাশিত:
১৬ জানুয়ারী ২০২১ ১৮:২২

আপডেট:
২৬ এপ্রিল ২০২৪ ২২:২১

 

মিয়ানমারের জাতিগত সংঘাত নিরসনে দেশটির পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন চীন। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং উই সোমবার (১১ জানুয়ারি) নেইপিদোতে মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট এবং মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সূচির সঙ্গে সাক্ষাতে এ প্রতিশ্রুতি দেন বলে নিক্কেই এশিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেনের ক্ষমতা গ্রহণের আগে প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্কের আরো উন্নয়ন চায় চীন। এজন্য রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীন মিয়ানমারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে বলে নিক্কেই এশিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। 

২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা বুঝে নেবেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তার আগে প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বেইজিং। এ লক্ষ্যে মিয়ানমার সফর করেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ইন্দোনেশিয়া, ব্রুনাই এবং ফিলিপিন্স সফরেরও কথা রয়েছে তাঁর। 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে জো বাইডেন মানবাধিকার এবং অন্যান্য ইস্যুতে চীনের ওপর চাপ তৈরি করতে পারে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং উইর এ সফরকে সে চাপ মোকাবিলায় প্রতিবেশী ও আঞ্চলিক দেশগুলোর ওপর বেইজিংয়ের প্রভাব আরও বাড়ানোর কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে। 

রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সরকার এবং দেশটির সেনাবাহিনীর নৃশংস গণহত্যার কারণে পশ্চিমা দেশগুলো এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তীব্র সমালোচনার মুখে আছে মিয়ানমার। কিন্তু চীন সর্বদাই মিয়ানমারকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর হামলায় ৭ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নেয়। এছাড়া মিয়ানমারের বিভিন্ন রাজ্যে সশস্ত্র জাতিগত গোষ্ঠী এবং নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যেও সংঘাত অব্যাহত আছে। 

ওয়াং উই বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যু সহ মিয়ানমারের জাতিগত সংঘাত নিরসনে চীন সাধ্য অনুযায়ী দেশটির পাশে থাকবে। মিয়ানমারকে চীনের তৈরি তিন লাখ ডোজ করোনা টিকা দেওয়া হবে বলেও জানান ওয়াং উই। অর্থাৎ ওয়াংয়ের সফরে করোনা ভ্যাকসিন কূটনীতিও স্থান পেয়েছে। মিয়ানমার সফরকালে ওয়াং উই দেশটির প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট, স্টেট কাউন্সিলর অং সান সূচি ও মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর প্রধান জেনারেল মিং অং হ্লাইং এর সঙ্গে বৈঠক করেন বলে জানা গেছে। 

এদিকে চীনের রাষ্ট্র পরিচালিত সিনহুয়া নিউজ এজেন্সির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, তাইওয়ান, তিব্বত এবং জিনজিয়ানসহ অন্যান্য ইস্যুতে চীনের অবস্থানকে মিয়ানমার সবসময় সমর্থন দিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট। 

রোহিঙ্গা ইস্যু ছাড়াও চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনফ্রাস্ট্রাকচার-বিল্ডিং ইনেশিয়েটিভে বিনিয়োগের বিষয়েও দু’পক্ষ আলোচনা করেছে। ওয়াংয়ের সফরের আগে মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয় এবং ভারত মহাসাগরের বন্দর নগরী কিউকফিউয়ের মধ্যে রেল যোগাযোগ স্থাপনে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে সমঝোতা স্মারকে সই করে বেইজিং-নেইপিদো। 

এদিকে চীনের মধ্যস্থতায় রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আগামী সপ্তাহে ঢাকায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমার ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে বসছে বলে জানা গেছে। ১৯ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় ওই বৈঠকে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন গতকাল (১৩ ই জানুয়ারী) ঢাকায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। 

এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘‘গত ৯ অথবা ১০ (জানুয়ারি) তারিখে সচিব পর্যায়ের ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। মিয়ানমারই ওই তারিখ বলেছিল কিন্তু পরে এটি তারা পিছিয়ে দেয়। পেছানোর  কারণ হলো চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী (ওয়াং ই) এর মিয়ানমার সফর। সে কারণেই তারা বলছে, ওনার সঙ্গে আলাপের পর এটি ১৯ তারিখ হবে। আশা করি, বৈঠকটি ফলপ্রসূ কিছু হবে। ’’ 

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের আলোচনায় অগ্রগতি না হওয়ায় মিয়ানমারের সমালোচনা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘‘শেষ ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হয়েছিল গত বছরের ২০ জানুয়ারি। এরপর কোভিড ও মিয়ানমারের নির্বাচনের অজুহাতে আর বৈঠক হয়নি।’’ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারকে দেয়া তালিকা প্রসঙ্গে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘‘বাংলাদেশ সব মিলিয়ে সাড়ে আট লাখ রোহিঙ্গার তালিকা মিয়ানমারকে সরবরাহ করেছে। কিন্তু দুঃখজনক হচ্ছে মিয়ানমার বিছিন্নভাবে যাচাই–বাছাই করছে। যেমন রোহিঙ্গা বাবা ও মেয়েকে যাচা

 

মু: মাহবুবুর রহমান
লেখক, নিউজিল্যান্ডের মেসি ইউনিভার্সিটির পিএইচডি গবেষক   



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top