সিডনী সোমবার, ২৯শে এপ্রিল ২০২৪, ১৬ই বৈশাখ ১৪৩১


স্ত্রীকে জীবন্ত কবর দিয়েছিলেন স্বামী; বেঁচে গেলেন অবিশ্বাস্যভাবে : মু: মাহবুবুর রহমান


প্রকাশিত:
২৮ অক্টোবর ২০২২ ০১:০৯

আপডেট:
২৯ এপ্রিল ২০২৪ ২৩:২২

 

যুক্তরাষ্ট্রে এক নারীকে তার স্বামী ছুরিকাঘাত করে জীবন্ত কবর দিয়ে দেন। কিন্তু তিনি অলৌকিকভাবে বেঁচে যান। কবরের মাটি সরিয়ে নিজেই উঠে আসেন। তাঁর অদ্ভুত ভাবে বেঁচে যাবার কাহিনী ওয়াশিংটনে রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছে। কীভাবে মাটি চাপা দেওয়ার পরও বেঁচে ফিরলেন তিনি, এ নিয়ে চর্চা চলছেই। এদিকে অভিযুক্তকে ইতোমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘটনাটি ১৬ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন রাজ্যে ঘটে।
দক্ষিণ কোরিয়ার এই দম্পতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন রাজ্যে বসবাস করছিলেন। স্বামী চে কিয়ং এবং স্ত্রী ইয়াং সুক। তাদের বিচ্ছেদ হওয়ার পরই স্বামী চে স্ত্রীর প্রতি ভীষণ ক্ষিপ্ত ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, বিচ্ছেদের পর থেকে ওয়াশিংটনের বাড়িতে সন্তানদের সঙ্গে থাকতেন ইয়াং।
ওই দম্পতির মেয়ে জানিয়েছেন, তার বাবা-মা একসঙ্গে থাকেন না। কিন্তু, তাঁর বাবা প্রায়শই জামা-কাপড় ধোয়ার মতো দৈনন্দিন কাজকর্ম করিয়ে নেন তাঁর মাকে দিয়ে। ঘটনার দিন ১৬ অক্টোবর সেরকমই কোনও কাজে দুপুর ১টা নাগাদ বাড়ি এসেছিলেন চে কিয়ং।
স্থানীয় পুলিশ জানায়, ওই দিন দুজনের মধ্যে টাকা-পয়সা নিয়ে তর্কাতর্কি শুরু হয়েছিল। চে কিয়ং জানিয়েছিল, তাঁর অবসরকালীন ভাতা থেকে এক পয়সাও তিনি তার স্ত্রী ইয়াং সুক আনকে দেবে না। এই নিয়ে তর্কাতর্কির মধ্যেই ইয়াং সুক আনকে বার বার ছুরিকাঘাত করেছিল চে কিয়ং।
এই মারামারির সময় ইয়াং তাঁর হাতে থাকা ‘অ্যাপল ঘড়ি’ থেকে পুলিশ হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করেছিলেন। এটা টের পেয়ে চে কিয়ং তাঁর স্ত্রীর হাতে থাকা ‘অ্যাপল ঘড়ি’ ভেঙে পেলেন। কিন্তু ঘড়ি ভেঙে ফেলার আগেই পুলিশ সতর্ক সংকেত পেয়ে যায়।
ইয়াংয়ের বাড়িতে গিয়ে পুলিশ ধস্তাধস্তির চিহ্ন পায়। কিন্তু ততক্ষনে চে কিয়ং তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যায়।
এরপর ইয়াং এর হাত-পা ডাক্ট টেপ দিয়ে বেঁধে পাশের এক জঙ্গলে নিয়ে যায় তাঁর স্বামী। সেখানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে শরীরের একাধিক স্থানে কোপ মারা হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় এরপর জঙ্গলের মধ্যে এক জায়গায় একটি অগভীর কবর খুঁড়ে ইয়াং সুক-কে জীবন্ত কবর দেয় তাঁর স্বামী।
চে কিয়ং ঘটনাস্থল থেকে চলে গেলেও মাটির নিচে তখনও তার স্ত্রীর দেহে প্রাণ ছিল। হুঁশও খোয়াননি ইয়াং। নিজেই নিজেকে বাঁচানোর শেষ চেষ্টা করেন। ইয়াং জানিয়েছেন, মাটির নিচে ক্রমাগত নাক নাড়াচাড়া করছিলেন তিনি। সমস্ত শক্তি দিয়ে নিঃশ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। নাকের মাধ্যমেই মাটি একটু একটু করে সরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।
বেশ কিছুক্ষণের চেষ্টায় মাটি ভেদ করে মাথা তুলতে পারেন ইয়াং। কোনও রকমে উঠে আসেন উপরে। এরপর প্রায় ত্রিশ মিনিট হেটে মাঝরাতে হাজির হন এক প্রতিবেশীর বাড়ি। ঘড়ির কাঁটায় তখন রাত ১২টা ৫২ মিনিট। ইয়াংয়ের কড়া নাড়ার শব্দ শুনে দরজা খোলেন তার প্রতিবেশী। তাকে সবটা জানানোর পর রাতেই ডাকা হয় পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ইয়াং যখন প্রতিবেশীর বাড়ি পৌঁছন, তখন তার তাঁর গলায়, মুখের নিচের দিকে এবং গোড়ালির চারপাশে ডাক্ট টেপ বাঁধা ছিল। ডাক্ট টেপ দিয়ে তাকে বেঁধে জীবন্ত কবর দিয়েছিলেন তাঁর স্বামী।
স্থানীয় প্রতিবেদন অনুসারে, চে কিয়ং-এর বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত হত্যার চেষ্টা, অপহরণ এবং হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে। তাঁকে আপাতত কাউন্টি জেলে পাঠানো হয়েছে। এবং তার বিচার চলছে।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top