বর্ণাঢ্য আয়োজনে চীনে কমিউনিস্ট শাসনের ৭০ বছর উদযাপন


প্রকাশিত:
১ অক্টোবর ২০১৯ ২২:৫১

আপডেট:
২০ এপ্রিল ২০২৫ ২৩:৫৩

বর্ণাঢ্য আয়োজনে চীনে কমিউনিস্ট শাসনের ৭০ বছর উদযাপন

প্রভাত ফেরী, আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চীনের কমিউনিস্ট শাসনের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে। বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) পালিত হচ্ছে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের ৭০তম জাতীয় দিবস। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেশটির তিয়েনআনমেন স্কয়ারে ট্যাংক, ক্ষেপণাস্ত্র, সামরিক বিমান সাঁজোয়া যানের মহড়াসহ সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন কার্যক্রম প্রদর্শিত হয়।



স্থানীয় সময় সকাল ৬টা ৪৬ মিনিটে সূর্যোদয় হয় বেইজিংয়ে। বেইজিংয়ের রাস্তা ছিল বরাবরের মতোই শান্ত আর নীরব। বেইজিং এমনিতেই পৃথিবীর দূষিত বায়ুর শহর গুলোর মধ্যে অন্যতম। সাধারণত বেইজিংয়ের আকাশ ধূসর আর নীল রং ধরে থাকে। যেন সকালের সূর্য স্পষ্টভাবে এই আয়োজনে যোগ দিতে পারে, তাই বেইজিংয়ের আশাপাশের কয়েকটি কয়লা ভিত্তিক এবং সাধারণ কারখানা জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে বন্ধ রাখা হয়েছে। জাতীয় দিবসকে সামনে রেখে চীনের ঘরে ঘরে জাতীয় পতাকা টানানো হয়েছে। জাতীয় পতাকা শোভা পাচ্ছে শপিং মল এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতেও।



৯৪৯ সালের অক্টোবর তিয়ানানমেন রোস্ট্রামে দাঁড়িয়ে দলটির চেয়ারম্যান মাও সেতুং গণপ্রজাতন্ত্রী চীন ঘোষণা করেছিলেন। সেখানে দাঁড়িয়ে পতাকা উত্তোলনের পর হাজার হাজার লোকের সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।



সমাবেশে বক্তব্যে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছেন, দুনিয়ায় এমন কোনও শক্তি নেই যা এই মহান জাতিকে ঝাঁকুনি দিতে পারে। দেশের মানুষ নিজের পায়ে দাঁড়াতে সক্ষম। ৭০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কঠোর পরিশ্রম অধ্যবসায়ের মাধ্যমে চীনা জাতি আজকের অবস্থানে পৌঁছেছে। সুতরাং জাতির অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না। চীনের বিভিন্ন নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী এবং ভূখণ্ডের দেশপ্রেমিক মানুষ পুরো দুনিয়াজুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে। চীনের উন্নয়নে সমর্থন যোগানো সব বন্ধু জাতিরাষ্ট্রের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। ভাষণেশান্তিপূর্ণঅর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার অঙ্গীকার করেন শি জিনপিং।



এরপর, শি জিনপিং তিয়েনআনমেন স্কয়ারে একটি খোলা লিমোজিনে করে সেনা সামরিক সরঞ্জামের সারিগুলো ঘুরে দেখেন। এসময় তিনি "হ্যালো কমরেডস" বলে সম্বোধন করলে প্যারেডের সৈন্যরা চিৎকার করে "হ্যালো চেয়ারম্যান" বলে উত্তর দেন। আবার তিনি "ভাল কাজ কমরেড" "কঠোর পরিশ্রমী কমরেড" বললে সেনাদল "জনগণের সেবা করুন" বলে সাড়া দেন।



দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এর আদেশে এবারই প্রথমবারের মত সাধারণ মানুষের সামনে চীনের সামরিক ক্ষমতা প্রদর্শন করা হয়। এসময় ১৫ হাজার সেনা বিশিষ্ট মহড়ায় ৫৮০টি ট্যাংকার, ১৬০টি ফাইটার জেটসহ অনেক গোপন অস্ত্র প্রদর্শিত হয়।



কমিউনিস্ট পার্টির ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত প্যারেডে প্রদর্শিত অস্ত্রের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত ছিল গাড়ির চালিত বিশ্বাস্য গতির পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র ডিএফ-১৭। ব্যালিস্টিক পারমাণবিক এই ক্ষেপণাস্ত্রটি তৈরি করা হয়েছে বিমানবাহী রণতরী শত্রুপক্ষের সামরিক ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেয়ার জন্য। মাত্র ৩০ মিনিটেই যা লক্ষ্যে নির্ভুল আঘাত হেনে যুক্তরাষ্ট্রের মতো পরাশক্তিরও প্রতিরক্ষা লাইন ধসিয়ে দিতে পারে। ক্ষেপণাস্ত্রটি একসঙ্গে কয়েকটি পরমাণু বোমা বহন করতে সক্ষম এবং বিশ্বের যেকোনো স্থানে আঘাত হানতে পারে। একইসময়ে ১০টি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুকে আক্রমণে সক্ষম এই অস্ত্রটি। সামরিক শক্তিকে ওয়াশিংটন বিশ্বের অন্যান্য শক্তির সমকক্ষ হওয়ার লক্ষ্যে এসব অস্ত্রকে বেইজিংয়ের বড় অর্জন হিসেবে দেখছে দেশটির অস্ত্র বিশ্লেষকরা।


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top