সিডনী সোমবার, ২৯শে এপ্রিল ২০২৪, ১৬ই বৈশাখ ১৪৩১

ইন্টারভ্যু : পরমার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়


প্রকাশিত:
২১ ডিসেম্বর ২০২০ ২৩:২৬

আপডেট:
২৯ এপ্রিল ২০২৪ ১৫:৪৯

 

কাল যখন বাসন্তী বললো আজ একটা এনজিওর বাবুরা ওদের মধ্যে কজন মেয়ের ইন্টারভ্যু নেবে, তখন মালতী খুব উত্তেজিত বোধ করছিল, ও টিভিতে ফিল্মস্টারদের ইন্টারভ্যু দেখেছে এমনকি মন্ত্রীদের ইন্টারভ্যু দেখেছে, আর নাকি ওকেও ইন্টারভ্যু দিতে হবে! সাময়িক উত্তেজনা প্রশমনের পর জিজ্ঞাসা করেছিল, “হ্যাঁ রে বাসন্তী, ইন্টারভ্যু কি টিভিতে দেখাবে রে? তবে তো সবাই আমাকে চিনে ফেলবে!” বাসন্তী বলেছিল ভয়ের কোনও কারণ নেই, এনজিওর দিদিমণি বলেছে এখানে ক্যামেরা থাকবে না, দিদিরা ওদের জীবনের কথা শুনতে চায়, আশ্বস্ত হয়েছিল মালতী, ওর কথা তো কখনও কেউ শুনতে চায়নি।আজ তাই সাজগোজটা  একটু অন্যরকম করেছিল মালতী। বাড়ি থেকে গোলাপি রঙের তাঁতের শাড়িটা আর ম্যাচিং ব্লাউস পরে বেরিয়েছিল, কারখানাতে এসেই ওখানে রাখা ছাপা শাড়িটা পরে কাজে বসেছিল। রোজই তাই করে অবশ্য, সন্ধ্যের সাজটা জমকালো করতেই হয়। বিকেলে কারখানা থেকে বেরোনোর আগে আবার পরিপাটি করে সেজে নিয়েছিল ম্যাচিং টিপ আর হালকা গোলাপি লিপস্টিকে। আজ আর খদ্দের টানার চড়া প্রসাধন করেনি, এসব মালতী খুব ভালো বোঝে, হোটেলে যখন দামী খদ্দেরের সঙ্গে যায়, তখনও দেখেছে তারা উগ্র সাজপোশাক তেমন পছন্দ করে না, এইজন্যই এই লাইনে মালতীর আলাদা কদর।

 

কারখানা ছুটি হয় ছটায়, চীনাপাড়া থেকে ১০ মিনিট লাগে তপসিয়া মোড়ে আসতে, বাসন্তী ওর জন্য অপেক্ষা করে, বাসন্তীর কারখানা তপসিয়াতেই, তারপর সপ্তাহে দুদিন চলে আসে শিয়ালদহে, আর ভাল বাবু পেলে শনিবার রাতে ডায়মন্ড হারবার, বাড়ি ফিরতে রবিবার দুপুর গড়িয়ে যায়। মালতী আর বাসন্তীর যেহেতু ব্যাগ কারখানার কাজটা আছে, সেহেতু ওরা রোজ খদ্দের ধরে না। শিয়ালদহে মাসির কাছে ঘর নেওয়া আছে, ওদের এই বায়নাক্কা মাসি মেনে নিয়েছে, কারণ ওদের কদর ভালো, চেহারায় জৌলুস আছে, মাসির দুদিন রোজগার ভালো হয়। মালতী আর বাসন্তীর কাছে এটা সাইড ইনকাম, একটু ভালো থাকবার জন্য মালতী কাজটা করে, এটা তাকে করতেই হবে, একটা মেয়েকে পার করেছে, আর একটাকে বিয়ে দিতে পারলেই নিশ্চিন্ত। বাসন্তী বলল আজ কিন্তু কোনও কাজ হবে না, শুধু ইন্টারভ্যু। মালতীর মেজাজটা একটু খিঁচড়ে গেল, কাজ না হলে রোজগারও তো হবে না! বাসন্তী বোধহয় মালতীর মনের ভাবটা বুঝতে পারল, বললো এনজিও দিদি টাকা দেবে বলেছে যাতে ওদের লস খেতে না হয় আর সাথে মিষ্টির প্যাকেট। সব মেয়ের তো ওদের মতো কারখানার কাজ নেই। কয়েকজন মেয়েকে বেঝে দিয়েছে মাসী নিজেই, যারা একটু চালাক চতুর, গুছিয়ে কথা বলতে পারে। শিয়ালদহ ব্রীজের তলায় এসে দুটো জর্দা পান কেনে মালতী, একটা বাসন্তীকে দিয়ে নিজে একটা মুখে পুরে দেয়, ইদানীং এই নেশাটা ধরেছে, শিয়ালদহে কাজে এলে খায়। অনেক খদ্দেরই মদ খায়, মালতী হাজার উপরোধেও ও জিনিস ছোঁয় না, তাতে খদ্দের ছেড়ে দিতে হলেও পরোয়া করে না, বাড়ি ফেরার পর মেয়ে মদের গন্ধ পাক সেটা ও চায় না। জর্দার গন্ধটা ওকে বাবুদের মদের গন্ধের হাত থেকে কিছুটা আড়াল করে।

শিয়ালদহ পৌঁছে ওর ঘরে ঢুকে মালতী ফ্যানটা স্পীডে ছেড়ে দিয়ে বিছানায় বসতেই মাসী ঘরে ঢোকে, বলে এনজিও দিদিরা এসে গেছে ইন্টারভ্যু নিতে, দেখো আমার বদনাম করো না, কথা বুঝেসুঝে বলো, আমিই তোমাদের রেখেছি। হেসে ফেলে মালতী, বলে তোমার নিন্দা করতে বয়ে গেছে আমার। আমিই তো নষ্ট মেয়ে। পাঠিয়ে দাও ইন্টারভ্যু দিদিদের।

 

ভূত দেখলেও মালতী এত চমকাতো না, এ কী দেখছে ও! ওকে ইন্টারভ্যু করতে ঢুকেছে ওর ব্যাগ কারখানার দোর্দণ্ডপ্রতাপ ম্যানেজার ম্যাডাম। যাকে মালতীদের চেকিং ডিপার্টমেন্টের সব মেয়েই যমের মতন ভয় পায় আবার সম্মানও করে। একটা ব্যাগে ঠিক মতো রঙ না হলে, পরিষ্কার ঠিক মতো না হলে ম্যাডামের নজর এড়ায় না, যার টেবিলে কাজে খুঁত পায় ম্যাডাম, সেই মেয়ের কপালে সেদিন দু:খ আছে। আবার কাজ ভাল হলে ম্যাডাম পিঠ চাপড়ে দেয়, আর যে বয়সেরই কর্মচারী হোক ম্যাডাম তাকে আপনি সম্বোধন করবেন। এই কারখানায় মালতীর পাঁচ বছর হল, তবে আগে তো অন্য কয়েকটা কারখানায় কাজ করেছে, দেখেছে ম্যানেজার বাবুরা কি দুর্ব্যবহারই না করে তাদের মতো মেয়েদের সঙ্গে, মানুষ বলেই মনে করতে দেখেনি, আপনি সম্বোধনের তো প্রশ্নই নেই। আজ যে এই কারখানায় একটু স্বস্তিতে কাজ করতে পারছে, মাথার ওপর ফ্যান আছে, পরিষ্কার বাথরুম ব্যবহার করতে পারছে, মেয়েদের কাপড় জামা ছাড়ার আলাদা ঘর হয়েছে, তা সব এই ম্যানেজার ম্যাডামের জন্য; আর সেই ম্যাডামই কিনা এনজিওর পক্ষ থেকে ইন্টারভ্যু নিতে এসেছে আজ তাদের শিয়ালদহের বারবধূদের! মালতীর মনে হল ওর পায়ের তলার মাটি সরে যাচ্ছে, চোখে অন্ধকার নেমে আসছে, কাজটা বোধহয় আর থাকবে না, কী হবে! তবে কি পাকাপাকি এসে বাসা বাঁধতে হবে এখানে? না না তা মালতী পারবে না। ছোট মেয়েটার কী হবে তাহলে!

 

ম্যাডামই পরিস্থিতিটাকে সহজ করে দেন, এগিয়ে এসে মালতীর কাঁধে হাত রাখেন, বলেন মালতী আপনার সংকোচের কোনও কারণ নেই, আমি এখন আপনার ম্যানেজার নই, আমি এসেছি একটা এনজিওর পক্ষ থেকে একটি সমীক্ষা করতে, কী অবস্থার মধ্যে এখানকার মেয়েরা কাজ করছে এবং কেন তারা এ কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে জানতে; হয়তো এই সমীক্ষা থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আমরা এই মেয়েদের একটু ভালো ভাবে বেঁচে থাকার রসদ যোগাতে পারবো। হ্যাঁ, একটা আলাদা কৌতূহল হচ্ছে, যেহেতু আমি আপনাকে সপ্তাহে ছদিন দেখছি, আমি জানি আপনি যা মাইনে পান তাতে রাজার হালে থাকা না গেলেও বেঁচে থাকা যায়, তবুও কেন আপনাকে এই কাজ করতে হচ্ছে!

সমীক্ষার মতো এত শক্ত শক্ত কথা মালতীর মাথায় ঢোকে না, সে ক্লাস সেভেন অবধি পড়েছিল তারপর তার বিয়ে হয়ে যায়। বুঝে নিল ম্যাডাম ইন্টারভ্যুর কথাই বলছেন বোধহয়, অই শব্দটাই বেশ চেনা। এতক্ষণে মালতী নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছে। হ্যাঁ, সে বলবে কেন সে এই কাজ করতে এসেছে। বোতলে রাখা জল থেকে এক ঢোঁক জল খেয়ে, মালতী শুরু করে,

 

 “আমরা ছিলাম চার বোন আর এক ভাই, গড়িয়া স্টেশনের কাছে দু কামরার একটা টালির চালের বাড়িতে বাবা মা আর পাঁচটা ভাই বোন নিয়ে সাতটা প্রাণীর বাস। বাবা সবজি বেচত গড়িয়া বাজারে, অভাবের সংসার, এতগুলো প্রাণীর দুবেলা খাওয়া জোটাতে বাবা হিমশিম খেত। মা একটা বাড়িতে রান্নার কাজ পাওয়ার পর কিছুটা সুরাহা হল। আমি ছিলাম ভাই বোনদের মধ্যে বড়, পাড়ার একটা স্কুলেই নাম লেখানো ছিল, পড়াশুনোয় মন ছিল না, ফেল করে করে ক্লাস সেভেন অবধি উঠেছিলাম, স্কুল যাওয়ার পথেই আলাপ হয়েছিল পরিমলের সঙ্গে, আমাদের পাশের পাড়াতেই থাকত, সাইকেল নিয়ে স্কুলের পথে দাঁড়িয়ে থাকত, তারপর যা হয়, স্কুল পালিয়ে মাঝে মাঝে সিনেমা, পর্দা ফেলা কেবিনে লুকোচুরির চুমুর পর একদিন আমরা পালালাম, মা আমাদের ব্যাপারটা জেনে গিয়েছিল আর বলে দিয়েছিল যে বিয়ে দেওয়ার পয়সা নেই, তুই পরিমলেকে বল যে তোর বাবা এই সম্পর্ক মানবে না, পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করতে হবে। তাই করেছিলাম, সোজা কালিঘাটে গিয়ে বিয়ে। পরিমলের বাড়িতে আপত্তি হয়নি। ওর তিন দিদির বিয়ে হয়ে গেছিল আগেই, বাবার একটা স্টেশনারি দোকান আছে, সেখানেই বসা আরম্ভ করেছিল পরিমল। বাড়ির একমাত্র ছেলের পছন্দ মেনে নিয়েছিল পরিমলের বাবা মা। বেশ আনন্দে কেটে যাচ্ছিল দিনগুলো। বছর ঘুরতেই আমাদের একটা মেয়ে হয়, তিন বছর বাদে আবার একটা। তারপর একদিন কপাল পুড়লো, পরিমল জড়িয়ে পরল আর একটা মেয়ের সঙ্গে, মেয়েটা ওর দোকানের পাশেই একটা ইমিটেশনের দোকান করেছিল, সেখানেই ভাবসাব, আমাদের বিয়ের বয়স তখন এগারো। আমি পরিমলের কাছে পুরোনো হয়ে গেছি। পাড়ার মধ্যেই পরিমলদের দোকান, সব খবরই কানে আসতো। প্রথমে কান্নাকাটি তারপর ঝগড়া করতাম, কিন্তু পরিমল চুপ করে থাকত, জবাব দিত না। শ্বশুর মশাই কোনও কথা বলতেন না, শাশুড়ি বলতেন মানিয়ে নাও বৌমা, তোমাকে তো আর তাড়িয়ে দিচ্ছে না, মারধরও করছে না। পুরুষ মানুষ ওরকম একটু করেই থাকে, ওতে দোষের কিছু নেই।

আমি সেকথা মানতে পারিনি, একদিন পরিমল বড় বাজারে গিয়েছিল দোকানের মাল তুলতে, সেই ফাঁকে ওর পছন্দের মেয়েমানুষটার দোকানে গিয়ে মন খুলে গালাগালি দিলাম, প্রচন্ড ঝগড়া হল দুজনের। রাতে বাড়ি ফিরে পরিমল ঘাড় ধাক্কা দিয়ে ঘর থেকে বার করে দিল, এমনকি নিজের মেয়ে দুটোর দিকেও ফিরে তাকাল না। হাতে দু গাছা সরু সোনার চুড়ি, কানে এক জোড়া ছোট কানের দুল আর শ পাঁচেক জমানো টাকা সম্বল করে একটা দশ বছরের, একটা সাত বছরের মেয়ের হাত ধরে এসে উঠলাম বাপের বাড়িতে। আমার পরের তিনটে বোনই ততদিনে পালিয়ে বিয়ে করেছে, ভাইটা বাবার সঙ্গে সবজি ব্যবসায়। মা বলে দিল, নিজের আর মেয়েদের খাওয়ার খরচ আমাকেই জোটাতে হবে ও যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিজেদের ঘর দেখে উঠে যেতে হবে, কারণ ছেলের বিয়ে দিতে হবে। চোখের জল তখন শুকনো হয়ে গেছে, শুরু হল বেঁচে থাকার লড়াই। আমার পরের বোনটা ততদিনে ব্যাগ কারখানায় ব্যাগ রঙ পরিষ্কারের কাজ ধরেছে ফুরনে, বর খাওয়ায় না। ওর সঙ্গে বেরিয়ে পড়লাম, পার্ক সার্কাস স্টেশনে অনেক মেয়েদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকতাম, ব্যাগ কারখানার লোকেরা এসে বাছাই করে মেয়েদের নিয়ে যেত। প্রথম দিকে আনকোরা বলে বেশিরভাগ দিন কাজ জুটত না, কিন্তু কাজটা আমি খুব তাড়াতাড়ি ধরে ফেললাম। রঙ পরিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গে ব্যাগ ওয়ালেটের চেকিং এর কাজ। চেকারের পয়সা অন্য মেয়েদের তুলনায় বেশি। এক বছরের মধ্যে বাপের বাড়ির পাড়াতেই একটা ঘর ভাড়া করে মেয়েদের নিয়ে উঠি। সারাদিন যখন কারখানায় থাকতাম মেয়েরা তখন মামাবাড়িতেই থাকতো, আমি কিছু টাকা মায়ের হাতে দিতাম। দুটো মেয়েকেই স্কুলে দিয়েছিলাম কিন্তু কে দেখবে? ওদের লেখা পড়া তেমন হয়নি। ফুরনের কাজ করে ঘর ভাড়া দিয়ে তিনটে পেট চালানো দিনে দিনে মুশকিল হয়ে যাচ্ছিল, আর একটা চিন্তা ছিল দু দুটো মেয়ের বিয়ে দিতে হবে। যদিও ব্যাগ লাইনে আমার চাহিদা বাড়ছিল, তিলজলার একটা কারখানায় পার্মেন্ট (পার্মানেন্ট) কাজ পেলাম, সেখান থেকে তপসিয়ার আর একটা কারখানায়। এখানেই আলাপ হয় বাসন্তীর সঙ্গে, বাসন্তী আমাকে এই পথের সন্ধান দেয়। ওর বাড়িতে অসুস্থ স্বামী, বৃদ্ধ শ্বশুর শাশুড়ি, দুটো বাচ্চা, এতগুলো পেট শুধু ব্যাগ কারখানার কটা টাকায় চলে না।

প্রথম প্রথম খুব খারাপ লাগত, পরে আস্তে আস্তে অভ্যাস হয়ে গেল, মেয়েগুলোকে একটু ভাল খেতে দিতে পারলাম, একটু ভাল জামাকাপড়।

যে রাতে হোটেলে কাটাতাম, মেয়েদের বলতাম নাইট ডিউটি আছে, ওরা যাতে মামাবাড়িতে গিয়ে রাতে থাকে। তপসিয়ার কারখানা থেকে তারপরে এলাম চীনা পাড়ায় আপনাদের কারখানায়, বাসন্তীর সঙ্গে বন্ধুত্বটা থেকে গেল। সপ্তাহে দু তিনদিন এই কাজটা করি, এই করেই গত বছর বড় মেয়েটার বিয়ে দিয়েছি, জামাই অটো চালায়। কারো কাছে হাত পাততে হয়নি। দশ বছর ধরে এই কাজ করছি। সামনের বছর ছোট মেয়েটা আঠেরোয় পড়লে ওর বিয়ে দিয়ে দেব, তারপর আর এই কাজ করব না, কারখানার কাজের টাকায় নিজের চলে যাবে।” একটানা কথাগুলো বলে হাঁফ ছাড়ে মালতী, যেন হুঁশ  ফিরে পেয়ে লজ্জিত হয়ে ওঠে, কিকরে যে ম্যাডামকে এইসব কথা বলে ফেলল তা বুঝে উঠতে পারে না। ধীরে ধীরে চোখ তুলে দেখে ম্যাডামের চোখের কোণ জলে চিকচিক করছে।

 

নিজেকে সামলে নিয়ে ম্যাডাম বললেন, “মালতী আপনার লজ্জিত হওয়ার কিছু নেই, লজ্জিত হওয়ার কথা এই সমাজের, যে সমাজ মালতীকে, বাসন্তীকে এই পঙ্কিল পথে টেনে নামাতে বাধ্য করে। এর বিরুদ্ধে আমাদের লড়তে হবে এবং মালতী সেই লড়াইয়ে আপনিও একজন গুরুত্বপূর্ণ সৈনিক।”

 মালতী ম্যাডামের কথা ঠিক বুঝতে পারে না, কিন্তু অজানা খুশিতে তবু মন ভরে যায়, নিজেকে হঠাৎ খুব পবিত্র মনে হয়। দুটো ছোট ছোট মেয়ের হাত ধরে রাস্তায় দাঁড়ানো এক মায়ের কথা মনে করে মালতী বহুদিন বাদে হু হু করে কেঁদে ওঠে, তখন বাইরেও অঝোরে বৃষ্টি নেমেছে, মালতী রাস্তায় এসে দাঁড়ায়, ওর আজ বৃষ্টিতে ভেজা খুব দরকার।

 

পরমার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা, ভারত

 

এই লেখকের অন্যান্য লেখা



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top