সিডনী সোমবার, ২৯শে এপ্রিল ২০২৪, ১৬ই বৈশাখ ১৪৩১

মনসা মঙ্গল (পর্ব চার) : শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়


প্রকাশিত:
১ জুলাই ২০২১ ২০:৫৪

আপডেট:
২৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:৩২

 

রাত্রি দশটার সময় গাড়ি চালিয়ে ফিরছিলেন চন্দ্রজিৎ। মনটা কিছু বিক্ষিপ্ত। শেষ ডিলটায় গেমটা হয়ে যাওয়ার কথা। চারটে নো ট্রাম্পের খেলা। কন্ট্রাক্ট ব্রিজ অতি সূক্ষ্ণ ক্যালকুলেশনের ব্যাপার। ডামি থেকে স্পেডের বিবি খেললেই তিনটে পিট অনায়াসে চলে আসত। ওই একটা ভুলেই...

কথা হচ্ছে, ভুলভ্রান্তি হচ্ছে কেন? বুড়ো হচ্ছেন নাকি? বুড়ো বয়সে মাথায় কুয়াশা জমে, রিফ্লেক্স কমে যায়। নিজেকে বুড়ো ভাবা তাঁর কখনও পছন্দ নয়। ভাবেনও না। সকালে হাঁটা, ব্যায়াম করা, খাদ্য নিয়ন্ত্রণ এবং মনকে উদ্বেগমুক্ত রাখার নিরন্তর চেষ্টা চালিয়েও বার্ধক্য কি নানা রন্দ্রপথে ঢুকে পড়তে চাইছে তাঁর সত্তায়? আগে ষাট পেরোলে লোকে জড়ভরত হয়ে যেত। আজকাল তো তা নয়। আশি-নব্বই পেরিয়েও বিস্তর লোক নানাবিধ গুরুতর কাজ করে যাচ্ছে। আর তিনি একটা উটকো ভুল করে ফেললেন ছেলেমানুষের মতো! তাঁর পার্টনার সঞ্জিত রায় তো বলেই ফেলল, এ কী দাদা, এটা যে আনাড়ির মতো খেলা হল!

লজ্জাটা এখনও লিঙ্গার করছে মনের মধ্যে।

স্পিডোমিটারে চোখ পড়তেই ভ্রূ কুঁচকে গেল তাঁর। বাপ রে! বে-খেয়ালে নব্বই কিলোমিটারের কাছাকাছি স্পিড তুলে ফেলেছেন! সচরাচর পাশ থেকে ষাটের বেশি গতিতে চালান না কখনও। রাস্তা ফাঁকা থাকলেও না। আসলে ভিতরকার উত্তেজনা শরীরে ছড়িয়ে গেছে। তাই পা শক্ত হয়ে বসেছে। অ্যাকসেলেটরের ওপরে।

গতি কমিয়ে তিনি সল্টলেকের নির্জন পথে ঢুকে পড়লেন। মন থেকে শেষ ডিলটা তাড়াতে পারছেন না। ভিতরে শরীর, মন, বোধ ও বুদ্ধির মধ্যে কো-অর্ডিনেশন ছিন্নভিন্ন হয়ে আছে। এত অসতর্ক মানুষ তিনি নন।

বাড়িতে ঢুকবার সময় একবার হর্ন দেন চন্দ্রজিৎ। সেই শব্দে পিয়ালি দরজা খুলে দেয়। আজও দিল। গাড়ি গ্যারাজে ঢুকিয়ে চন্দ্রজিৎ সদর পেরিয়ে নিজের ঘরে এসে জামাকাপড় বদলান। কারও দিকে তেমন তাকিয়ে দেখেন না। আজ আবার প্রবল অন্যমনস্কতা রয়েছে। মাথাটাও গরম। চারপাশটা যেন আবছা আবছা। কোনও ছাপ পড়ছে না মনে, চোখে, বোধে, যেন চারপাশে কেউ নেই।

হাত-মুখ ঠান্ডা কনকনে জলে ধুয়ে তিনি শোওয়ার ঘরে এসে বিছানায় একটু বসলেন। দরজাটা বন্ধ রাখতে হয়।
সামনের ঘরে রাত এগারোটা পর্যন্ত টিভি চলে।
সেই শব্দে ঘুম আসতে চায় না।
শুতে যাচ্ছিলেন, দরজা ঠেলে নন্দিনী ঘরে ঢুকলেন। শোনো, একটু কথা আছে।
অন্ধকারেই স্ত্রীর মুখের দিকে চেয়ে বললেন, বলো।
মুম্বই থেকে সাঁইদাস লাহিড়ী নামে একটা ছেলে আজ তোমার খোঁজে এসেছিল !
সাঁইদাস লাহিড়ী!
হ্যাঁ। চেনো?
নাম থেকে তো চিনতে পারছি না। কী চায়?
সরোজাদেবী নামে কেউ আছে তোমার চেনা?
এক সেকেন্ড চুপ করে থেকে চন্দ্রজিৎ বললেন, সরোজা!
হ্যাঁ।
কী ব্যাপারটা বলবে?
সরোজাদেবী তোমাকে একটা নেকলেস পাঠিয়েছেন।
আবার একটু চুপ থেকে চন্দ্রজিৎ বললেন, নেকলেস!
হ্যাঁ। তোমার রি-অ্যাকশন দেখে মনে হচ্ছে, চেনো।
চন্দ্রজিতের মনটা এখনও বিক্ষিপ্ত। বিরক্তির সঙ্গে বললেন, অমন গোয়েন্দার মতো জেরা করছ কেন? এটা তো রহস্যকাহিনি নয়!
জেরা করব কেন? সিম্পলি জানতে চাইছি। রহস্যকাহিনি কিনা তা তুমিই জানো। কারণ আমি এদের নাম কখনও তোমার মুখে শুনিনি।
চন্দ্রজিৎ এবার একটু রেগে গিয়ে উঁচু গলায় বললেন, আমি কয়েক হাজার লোককে চিনি। তাদের সকলের কথা কি তোমাকে বলা সম্ভব? আর বলতে যাবই বা কেন? বলতে হবেই বা কেন?
চেঁচিও না। একজন মহিলা তোমাকে একটা দামি নেকলেস কেন পাঠাল সেটা জানার কৌতূহল কি আমার হতে পারে না?
কৌতূহল হলে কথা ছিল না। কিন্তু তোমার কথায় একটা সন্দেহও বেরিয়ে আসছে।
সেটা কি অন্যায়? আমি জানতে চাই সরোজাদেবী কে?
বলব না। নান অফ ইওর বিজনেস। তুমি যেতে পারো।
ছোটোলোক ইতরের মতো মেজাজ দেখিও না। আমি তোমার অন্নে প্রতিপালিত নই, তোমার ওপর নির্ভরও করি না। কাকে মেজাজ দেখাচ্ছ?
আমি কি তোমার বাপেরটা খাই না পরি? তুমি আমাকে ধমকানোর কে? তোমাকে কি আমার সব কাজের কৈফয়িৎ দিতে হবে? সেই অধিকার অর্জন করেছ কখনও?
লোকে জানে আমি তোমার স্ত্রী, আইনসংগত স্ত্রী। স্ত্রী-র অবশ্যই সবকিছু জানবার অধিকার আছে।
থাকত, যদি তুমি শুধু আইনসংগত স্ত্রী না হয়ে প্রকৃত স্ত্রী হতে।
তোমার সঙ্গে আমার স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক কবে হল? চিরকাল তো নিজের কেরিয়ারের জন্য কলেজে পড়ে রইলে। আমি কী খাই, কী পরি, তার খবর নিয়েছিলে কখনও? শুধু ভ্যাকেশনে গিয়ে মুখ দেখিয়ে আসতে। চমৎকার ব্যবস্থা, রাত এগারোটায় এখন স্ত্রী অধিকার ফলাতে এসেছেন!

প্রমিতা বোধহয় মেয়ের ঘরে ছিল। এবার ছুটে এসে তাড়াতাড়ি নন্দিনীকে পিছন থেকে দু-কাঁধে ধরে বলল, মা, শান্ত হোন! শান্ত হোন! এত উত্তেজিত হওয়ার মতো কিছু হয়নি তো!

নন্দিনী ফুঁসে উঠে বললেন, হয়নি! কিছু না হলে তোমার শ্বশুর অমন ষাঁড়ের মতো চেঁচাত? কথায় বলে, চোরের মায়ের বড়ো গলা। পাপ ঢাকতে চেঁচিয়ে পাড়া মাত করছে।

এবার গলা সপ্তমে উঠে গেল চন্দ্রজিতের। পাপ! কীসের পাপ! অ্যাঁ! কীসের পাপ! ডুবে ডুবে জল খেলে বুঝি একাদশীর বাপেও টের পায় না, না? সুজিত রায়ের সঙ্গে তোমার লটর পটরের কথা আমি জানি না ভেবেছ? সেটা তো আজকের নয়। লং ফিফটিন ইয়ার্স।

কী বললে! কী বললে তুমি! তোমার জিব খসে পড়ল না?
কেন জিব খসে পড়বে? সত্যি কথা বললে জিব খসে পড়ে নাকি?
তুমি এতদূর নীচ! এত অধঃপতন তোমার?
আমার অনেক আগে তোমার অধঃপতন শুরু হয়েছিল। জানতে চাও সরোজা কে? তুমি যা বলে সন্দেহ করেছ তাই। আর সাঁইদাস আমার ছেলে। আসল ছেলে। কিছু বলার আছে তোমার?
নন্দিনী থরথর করে কাঁপছিলেন। প্রমিতা তাকে জড়িয়ে ধরে টেনে নেওয়ার চেষ্টা করতে করতে বলল, মা, এখন চুপ করে থাকুন। বাবা এখন ভীষণ রেগে আছেন। এ বয়সে এত রাগ হলে হার্টে প্রেশার পড়বে।
সামনের ঘরে দেয়ালে পিঠ দিয়ে দু-হাতে শক্ত করে কান চেপে বিস্ফারিত চোখে দাঁড়িয়েছিল পিয়ালি। ডোরবেল বাজতেই হঠাৎ হরিণের গতিতে তরতরিয়ে নীচে নেমে গেল।

একটু বাদে যখন সত্রাজিৎ ঘরে এসে ঢুকল তখন ঘরের সব আসবাবপত্র স্বাভাবিক। সংসারের কোথাও কোনো ভাঙচুর বাইরে থেকে বোঝা যাচ্ছে না। নীচু হয়ে জুতো মোজা ছাড়তে ছাড়তে সে বলল, ফাঁকা ঘরে টিভি চলেছ কেন রে? মা কোথায়, তোর বউদিই বা কোথায় গেল?ফ্যাঁসফ্যাঁসে গলায় কোনোরকমে পিয়ালি বলল, ঘরে আছে।
ও।
নিজের ঘরে অন্ধকারে গুম হয়ে বসে আছেন চন্দ্রজিৎ।
হুইস্কিটা যেন মাথায় উঠে বসে আছে। মাথার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে উড়ছে খড়কুঁটো। স্থির চিন্তা অসম্ভব। রাগ আর ঘেন্না রক্তকণিকায় বুঝি স্ফুলিঙ্গের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে। নন্দিনীকে তিনি ঘৃণা করেন। এত ঘৃণা তিনি পৃথিবীর আর কাউকে করেন না।

তিনি কি কোনো অন্যায় করেছেন? অনেক বিচার করে দেখেছেন চন্দ্রজিৎ। না, তিনি কোনো অন্যায় করেছেন বলে তাঁর মনে হয় না। তাঁর বিবেকে কোনো দাগ নেই। একজন লম্বা চওড়া, সক্ষম যুবক নারীসঙ্গ চাইতেই পারে। তিনি স্ত্রীকে বহুবার বলেছেন, তিনি যথেষ্ট রোজগার করেন, চাকরির বাহানায় স্ত্রীর ওই দূরে সরে থাকা তাঁর পছন্দ হচ্ছে না। কিন্তু কিছুতেই চাকরি ছাড়তে রাজি হয়নি নন্দিনী। পুজো বা গ্রীষ্মের ছুটিতে বেড়ানোর মতো আসত বটে, তাও প্রতি ছুটিতে নয়। পরীক্ষার খাতা দেখা, শরীর খারাপ, বাবার অসুখ-নানা টালবাহানায় বিরহী যক্ষের কাছে সে অধরা থেকেছে। অথচ একজন ক্ষুধার্ত পুরুষ অপেক্ষা করেছে তাঁর জন্য। সরোজা ছিল তাঁরই অফিসের একজন কর্মচারী। খুব মিশুকে স্বভাবের। চেহারাটি মিষ্টি। প্রথম প্রথম নিজের টিফিনের বাক্সে তাঁর জন্য খাবার নিয়ে আসত, পান খাওয়াত। এইভাবেই সূত্রপাত হয়েছিল। তারপর যা হওয়ার কথা তাই হয়েছিল।

নন্দিনীকে ডিভোর্স করে সরোজাকে বিয়ে করা সহজ ছিল না। এদেশে ছেলেরা যে সহজে ডিভোর্স পায় না তা মারাঠি উকিল বুঝিয়েছিল তাঁকে। তাই আর চেষ্টা করেননি। সরোজা সাহসী মেয়ে, সংস্কারমুক্ত, বিয়ের জন্য চাপও দেয়নি তাঁকে। বলেছিল, আই শ্যাল রিমেন এ সিঙ্গল মাদ্দার। বুদ্ধিমতী মেয়ে, নন্দিনী যখন মুম্বই যেত কখনও দেখা-সাক্ষাৎ করার চেষ্টা করেনি। নারীমুক্তি মোর্চার সংগঠন নিয়ে ব্যস্ত থাকত সে। সেই সংগঠন কুমারী মায়েদের পুনর্বাসন নিয়ে কাজ করত দেশ জুড়ে।

সরোজার গর্ভস্থ সন্তান বিষয়ে যখন চন্দ্রজিৎ খুব উদ্বেগে রয়েছেন, তখন সরোজা তাঁকে একদিন বলেছিল, তুমি ভেব না যে, তুমিই আমাকে নষ্ট বা অন্যায়ভাবে ব্যবহার করেছ। ব্যাপারটা তা নয়। আমিও তোমাকে ব্যবহার করেছি। সুতরাং তোমার অনুতাপের কোনো দরকার নেই। পুরুষ ও মহিলার মধ্যে মুক্ত সম্পর্কের তো আমি পক্ষপাতীই।

তার উদারতা দেখে চন্দ্রজিৎ মুগ্ধ। এমনিতে তিনি যে এরকম মুক্ত সম্পর্কের সমর্থক তা নয়। কিন্তু ওই সংকটের সময় ওই আশ্বাসবাক্য মন্ত্রের মতো কাজ করেছিল।

সরোজার ছেলে যখন জন্মায় তখন চন্দ্রজিৎ দিল্লিতে। সরোজা যখন ফোনে তাঁকে খবরটা দিয়েছিল, তখন ভারি অদ্ভুত লেগেছিল তাঁর। তিনি বাবা হয়েছেন, কিন্তু বৈধ বাবা নয়। এটা যে কীরকম ব্যাপার দাঁড়াল, সেটা তাঁর বোধগম্য হচ্ছিল না।
খুশি হচ্ছেন আবার একটা হাহাকারও হচ্ছে।
বছর বারো আগে মুম্বই গিয়ে সরোজার সঙ্গে তাঁর দেখা হয়।
সরোজাকে গম্ভীর, শান্ত, গভীর বলে মনে হয়েছিল তাঁর। তখনই বলেছিল, দ্যাখো, কোনো কৃতকর্মকে গোপন রাখা দুর্বলতা, আমি চাই, তুমি অকপটে তোমার বউকে সব বলে দাও। আমার কথা, সাঁইদাসের কথা।
চন্দ্রজিৎ ভয় পেয়ে বললেন, তাহলে যে খুব অশান্তি হবে।

হোক না। তুমি কি মনে করো তুমি গর্হিত কোনো পাপ করেছ? যদি তাই মনে হয় তবে সেটা তোমার স্ত্রীর কাছে গোপন করা আরও পাপ। অকপট হয়ে দ্যাখো। প্রথমে অশান্তি হবে, কিন্তু তারপর তুমি মনে শান্তি পাবে। আমাকে দ্যাখো, আমি তো এই সমাজের মেয়ে হয়েও লুকোইনি যে আমি এক কুমারী মা।
আমি তোমার মতো সাহসী নই।
তা হলে নিজেকে তোমার জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত লম্পট বলে মনে হবে। আমার মনে হয়, তোমার বউয়ের কাছে এখনই সব খোলাখুলি বলে দেওয়া উচিত। তোমার ছেলেকেও বলো। বললেই দেখবে মনের ভার কমে গেছে। আমি তো উসির কাছেও কিছুই লুকোইনি। আমার ওপর তাতে তার শ্রদ্ধা নষ্ট হয়নি। আমার মনে হয় মানুষ অকপট হতে পারে না বলেই চোরের মতো অপরাধবোধ নিয়ে থাকতে হয়। তাতে অনেক বেশি কষ্ট।
চন্দ্রজিৎ অবশ্য তা পেরে ওঠেননি। তাঁর সাজানো শান্তির সংসার, তাতে বজ্রাঘাত করার সাহস তার হল কই?
সরোজা শেষ অবধি একটা কথাই তাঁকে বারবার বলেছিল, কনফেস, প্লিজ কনফেস। দুনিয়ার মুখোমুখি সোজা হয়ে দাঁড়াও। পশুপাখিরাও মিথ্যে কথা বলে না, মিথ্যাচার করে না। আমরা কি তাদের চেয়ে বেটার স্পিসিস নই?

কয়েক মাস আগে উসি অর্থাৎ সাঁইদাস কলকাতায় তার ব্যাবসার কাজে এসেছিল। সে বরাবর কলকাতায় এলে চন্দ্রজিৎকে ফোন করে খুব সৌজন্য ও শ্রদ্ধা প্রকাশ করে, খোঁজখবর নেয়। তাঁকে ‘স্যার’ বলে ডাকে বরাবর। সে খবর দিয়েছিল, সরোজা এখন আধ্যাত্মিক জীবন যাপন করে। কারও সঙ্গে তেমন সংযোগ রাখে না। উসি যে আজ এসে সরোজাকে বহুদিন আগে তাঁর উপহার দেওয়া নেকলেসটা ফেরত দিয়ে গেছে সেটা এমনি নয়, তা চন্দ্রজিৎ বুঝতে পারছেন। নেকলেস ফেরত পাঠানোর মধ্যে সেই পুরোনো বার্তাই পাঠিয়েছে সরোজা, কনফেস, প্লিজ কনফেস। কনফেস করার কথা ইদানীং ভাবছিলেন চন্দ্রজিৎ। কিন্তু উপায় এবং সঠিক সময়টা নির্ধারণ করতে পারছিলেন না। আজ উত্তেজিত হয়ে আচমকা বলে দিয়েছেন। হয়তো এভাবে না হলে পেরে উঠতেন না কোনোদিন। হ্যাঁ, তাঁর মুখ দেখাতে লজ্জা করছে। ঘরের আলোটা জ্বালেতও হচ্ছে সংকোচ। তাঁর বৈধ ছেলে সত্রাজিৎ একটু বাদেই সব জেনে যাবে। ওরা সবাই ঘেন্না করবে তাঁকে। করুক। চন্দ্রজিৎ চিৎ হয়ে শুয়ে বাঁ হাতটা আড়াআড়ি চোখের ওপর চেপে চুপ করে শুয়ে রইলেন আজ রাতে ওরা আর তাঁকে ডিস্টার্ব করবে না। এখন ওদের অনেক রাত অবধি মিটিং হবে। যা হওয়ার হোক। তবে তাঁর রাগটা কমে গিয়ে শরীর অবসন্ন লাগছে।

চলবে

 

মনসা মঙ্গল (পর্ব এক)
মনসা মঙ্গল (পর্ব দুই)
মনসা মঙ্গল (পর্ব তিন)

 

এই লেখকের অন্যান্য লেখা



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top