দমকা হাওয়া (অণুগল্প) : সুচন্দ্রা বসু
প্রকাশিত:
৮ জুলাই ২০২১ ২০:০২
আপডেট:
১৯ এপ্রিল ২০২৫ ২৩:০০
সন্মান প্রাপ্তির অভিনন্দন জানাতেই সে আমার বাড়ি এল। কবিতার সূত্রেই তার সাথে ফেসবুকে পরিচয়। বন্ধু ভেবেই তাকে যত্নে বসালাম আমার ঘরে। ঠান্ডা পানীয় আর কুকিজ সাজিয়ে দুজনে মুখোমুখি বসলাম।দুজনে বেশ গল্পে মেতে উঠলাম। দুজনে চোখে চোখ রেখে অনুভব করলাম ঝড়ের পূর্বাভাস।
বন্ধুর মুখে প্রকাশ পেল থমথমে ভাব।ঘন ঘন গরম নিঃশ্বাস পড়ছিল। আমি কেমন জড়োসড়ো হয়ে গেলাম।আমার হাত পা ঠান্ডা হিম আর গলাটাও তেষ্টায় শুকিয়ে যাচ্ছিল। নিজেকে গুছিয়ে নিয়ে বসতে যাব এমন সময় বন্ধু আমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে লুটে নিল আমার লজ্জা।নিজেকে সংযত করতে না পেরে অধরে অধরে যেন দিল কচ্ছপের কামড়।
বন্ধু যে এতটাই কামুক স্বপ্নেও ভাবিনি। তার ও আছে পরিবার স্ত্রী-পুত্র নিয়ে ভরা সংসার। নিজেকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করলাম। কিন্তু আলিঙ্গন থেকে মুক্ত হতে পারিনি, ঘর্মাক্ত শরীরে ছিল না শক্তি,গলার স্বর রুদ্ধ।
দমকা হাওয়ায় হঠাৎ ছিটকিনিটা ভেঙে দরজা খুলে যায়।সাথে সাথে ঘরে দেখি উল্কাপাত। করতালির বারুদ স্ফুলিঙ্গ। ছিঁটকে গেলাম আরামকেদারা থেকে মার্বেলের মেঝেতে। অন্তর্বাসটা কোনরকম টেনেটুনে শরীরটা
আঁচলে ঢেকে নিলাম।
ঠিক সেই মুহূর্তে করতালির শব্দে অস্ফুট স্বরে চেঁচিয়ে উঠি কে? কে? এই ঘন অন্ধকারে? কে? পৃথিবী তখন রৌদ্রোজ্জ্বল। কানে ভেসে এল সমুদ্র গর্জন।সমুদ্রসৈকত কি পারে এই মলিন মনে অমলিন ছন্দের পুনর্বাসন দিতে?
এত ঘন আঁধারে তখনও দুহাতে জড়িয়ে বুকের মাঝে আমি সিঁথির অস্তিত্বে।আমি ভয়ে তেষ্টায় কুন্ডলী পাকিয়ে যেন শামুকের খোলায় প্রবেশ করছি। ঢংঢং শব্দে ঘুমের ঘোরে লেপটা সরিয়ে নিই। বিছানা থেকে ঘড়িতে দেখি ছোট কাঁটা ছয়ের ঘরে আর বড় কাঁটা বারোর ঘরে। আমি তখনো প্রিয়ের বাহুডোরে।
সুচন্দ্রা বসু
পশ্চিমবঙ্গ, ভারত
বিষয়: সুচন্দ্রা বসু
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: