সিডনী বুধবার, ২৪শে এপ্রিল ২০২৪, ১১ই বৈশাখ ১৪৩১

খনা: এক নিগৃহীত কথামানবী : নবনীতা চট্টোপাধ্যায়


প্রকাশিত:
৩ ডিসেম্বর ২০২১ ০৪:৫৯

আপডেট:
২৪ এপ্রিল ২০২৪ ২০:১৯

 

শিপ্রা নদীর তীরে উজ্জয়িনী শহরের অবন্তীর ঘাটে সেদিন সকাল থেকেই জনসমাবেশ। সাতসকালেই অবন্তীর ঘাটে এসে নোঙর ফেলেছে একটি বৃহৎ তরী। সাধারণত: এইসব তরী বাণিজ্যিক কারণেই ব্যবহৃত হয়। কিন্তু আজ এই তরী থেকে নেমেছে একটি সিংহলি যুবতী আর তার সঙ্গী একটি যুবক। আপাতদৃষ্টিতে চেহারা দেখে মনে হয় যুবকটি যুবতীটির থেকে সামান্য কমবয়সীই হবে। চারপাশে শীতের স্নিগ্ধ হিমেল হাওয়ার পরশ। এই প্রাত:কালেই মন্দিরে মন্দিরে শুরু হয়ে গেছে দেবপূজার আয়োজন। অথচ এই শান্ত পরিবেশে নদীতীরে কৌতূহলী জনতার সমাবেশ ক্রমশ: বাড়ছে। কারন এই শ্যামবর্ণা সিংহলি যুবতীটি মহারাজ বিক্রমাদিত্যের রাজসভার অন্যতম নবরত্ন পণ্ডিত বরাহের খোঁজ করছে। পণ্ডিত বরাহ যাঁর রচিত পঞ্চ সিদ্ধান্তিকা বিশ্বের এক উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ, যিনি গুপ্ত সাম্রাজ্যের একজন বিখ্যাত দার্শণিক, জ্যোর্তিবিজ্ঞানী, গণিতবিদ ও কবি। মহারাজ বিক্রমাদিত্য স্বয়ং যাকে অত্যন্ত সমীহ করে চলেন। যুবতীটির বক্তব্য তার নাম লীলাবতী, সিংহলের রাজবংশের মেয়ে। সে বরাহের একমাত্র পুত্র মিহিরকে সাথে করে এসেছে তার শ্বশুরালয়ে যাবার জন্য, মিহির তার স্বামী। সমবেত জনতার কৌতুহলের সীমা ছাড়াচ্ছে। কেননা একথা সুবিদিত যে পণ্ডিত বরাহ নি:সন্তান। জনশ্রুতি আছে বহুদিন আগে বরাহের একটি পুত্র হয়েছিল। ভাগ্যগণনা করে বরাহ বুঝেছিলেন যে পুত্রের মাত্র একবৎসর আয়ু। যে পুত্র চলে যাবার জন্যই এসেছে তার প্রতি মায়া বাড়িয়ে লাভ নেই, বরাহ তাই একটি তাম্রপাত্রে পুত্রকে শুইয়ে একটি রূপার গোল চাকতিতে তাঁর জন্ম পরিচয় লিপিবদ্ধ করে শিপ্রা নদীর জলে ভাসিয়ে দেন। তারপর কেটে গেছে বহু বছর। কঠোর স্বভাবা অনমনীয় নিষ্ঠাবান ব্রাক্ষণ পণ্ডিত অপুত্রক ই রয়ে গেছেন। আজ এতদিন পরে এই তথ্যে পুরবাসী বিস্মিত হবে এটাই স্বাভাবিক। লোকমুখে বার্তা পেয়ে পণ্ডিত বরাহ নিজেই এলেন অবন্তীর ঘাটে। ঋজু, শুস্ক, কঠিন, খড়্গনাসা বরাহকে দেখে সমবেত পুরবাসী সভয়ে সরে গিয়ে ভিড়ের মাঝে রাস্তা করে দিলো। সরাসরি যুবতীর মুখের দিকে তাকিয়ে বরাহ বললেন "তুমি কি জান যা তুমি বলছ সব ভ্রান্তিমূলক। আমি অপুত্রক। বহুদিন আগে আমার পুত্রের জীবন শেষ হয়েছে। আমি নিজে গণনা করে দেখেছিলাম তার আয়ূ কেবলমাত্র এক বছর। এইসব বিভ্রান্তিমূলক তথ্যের উদ্দেশ্য কি? "
বরাহের কঠিন ভাষণে একটু ও ভয় না পেয়ে যুবতী জানাল "মহামান্য, জন্ম, মৃত্যু, বিবাহ মানুষের গণনার বাইরে। আর আমাদের জ্যোতি্ষশাস্ত্র অনুযায়ী এক পলকের আয়ু বারো দিন। সেই হিসাব মত আপনার পুত্রের আয়ু একশত বৎসর।"
"তোমার বক্তব্যের সমর্থনে কোন প্রমাণ দেখাতে পারো কন্যা?"
লীলাবতী তৈরী হয়েই এসেছে। বরাহের হাতে অর্পণ করে বলল" এই সেই রূপার গোল চাকতি পিতা যা আপনি মিহিরের সাথে দিয়েছিলেন জন্মপরিচয় লিপিবদ্ধ করে। আর পিতা আপনি আমাকে লীলাবতী বা খনা বলেই অভিহিত করবেন।" তাঁর গণনা জনসমক্ষে ভুল প্রমাণ করায় বরাহ অত্যন্ত রুষ্ট ছিলেন। তিনি লীলাবতীর শেষ কথায় কান না দিয়ে মিহিরের দিকে তাকালেন। সুপুরুষ দীর্ঘদেহী, উন্নতনাসা মিহির উদাসভাবে উজ্জয়নী শহরের চারপাশ দেখছিল। এক নিমেষে বরাহের মন সহসা নরম হয়ে গেল।
কিংবদন্তি অনুসারে বরাহ এরপর তাঁর পুত্র ও পুত্রবধূকে তাঁর গৃহে নিয়ে আসেন। মিহিরের আগমনে তিনি খুশি হয়েছিলেন। মিহির সিংহলে থাকাকালীন দক্ষ গুরুর কাছ থেকে গণিতশাস্ত্র, জ্যোর্তিবিজ্ঞান ইত্যাদি নানা শাস্ত্রে বুৎপত্তি লাভ করেছিল। কিন্তু পুত্রবধূ খনার শাস্ত্রজ্ঞান, প্রজ্ঞা, মেধা মিহিরের থেকে অনেক উচ্চদরের ছিল। বিশেষত:কৃষিবিজ্ঞান, আবহবিদ্যায় তার পারদর্শীতা অসীম। প্রথমদিন থেকেই বরাহ খনার উপর রুষ্ট ছিলেন, মেধার পরিচয় পেয়ে সেই রুষ্টতা আরো বৃদ্ধি হলো। অথচ সর্বসমক্ষে খনাকে তিনি কিছু দোষারোপ করতে পারেন না। খনার নিপুণ কর্মদক্ষতায় বরাহের বহুদিনের অবহেলার সংসারে এসেছে পারিপাট্য, লক্ষীশ্রী। দক্ষহাতে গৃহস্থালির কাজ সামলিয়ে সে অবসর সময়ে মিহিরকে সাথে নিয়ে শাস্ত্রচর্চায় মগ্ন থাকে। বিশেষত:জ্যোর্তিবিজ্ঞান তার খুবই প্রিয় শাস্ত্র। এছাড়াও আবহাওয়ার উপর খনার ভবিষৎবাণীতে আশেপাশের কৃষকদের প্রভূত উপকারে তার জনপ্রিয়তা বাড়তে লাগল। খনার এই অসাধারণ প্রজ্ঞা বরাহের চক্ষুশূল হয়ে গেল। বরাহ এবার তাঁর পুত্রের প্রতিপত্তির জন্য সম্রাট বিক্রমাদিত্যের রাজসভায় দশম রত্ন হিসাবে মিহিরের নাম সুপারিশ করলেন। বিক্রমাদিত্যের কানে ইতিমধ্যেই পৌছেছে বরাহের পুত্রবধূর প্রজ্ঞার কথা। তিনি বরাহের মনোভাব উপলব্ধি করে একটি শর্ত দিলেন। শর্তটি ছিল আকাশের প্রকৃত নক্ষত্র সংখ্যা নির্ণয় করে সম্রাটকে জানাতে হবে একদিনের ভিতরে। গৃহে ফিরে বরাহ ও মিহির যখন গণনায় নাজেহাল, মিহিরের কাছ থেকে সমস্যাটি শুনে খনা স্বামী ও শ্বশুরের সম্মান রক্ষার্থে সারারাত গণনা করে সঠিক উত্তরটি নির্ণয় করে দিলেন।
পরদিন রাজসভায় উত্তরটি শুনে বিক্রমাদিত্য মিহিরের কাছ থেকে অবগত হলেন যে প্রকৃত কৃতিত্ব খনার। বিক্রমাদিত্য খনাকে রাজসভায় আহ্বান করে তাকে দশমরত্ন উপাধিতে ভূষিত করলেন এবং খনার পুর্বাভাসে ও উপদেশে রাজ্যের কৃষকরা উপকৃত হত বলে খনার উপর রাজ্যের কৃষি উন্নতির দায়িত্ব দিলেন।
দিন দিন রাজসভায় খনার সম্মান ও প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পেতে লাগলো। বিক্রমাদিত্যের যাবতীয় জটিল প্রশ্নের সঠিক উত্তর খনা সহজেই দিতে লাগলেন। তাঁর আবহবিদ্যা এবং কৃষিবিজ্ঞানের দক্ষতায় রাজ্যের কৃষিতে দ্রুত অগ্রগতি হতে লাগলো। রাজার নির্দেশে সাধারন মানুষদের সাথে মিশে তাদের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে তাঁর লোকপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেল। বিক্রমাদিত্যের রাজসভায় নবরত্নকে নিস্প্রভ করে খনার সম্মান ও প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পেতে লাগলো। একজন নারী পাণ্ডিত্যে, প্রজ্ঞায় তাঁকে ও তাঁর পুত্রকে অতিক্রম করে যাবে, এই স্পর্ধা ও ঔদ্ধত্য পণ্ডিত বরাহের মেনে নিতে অসুবিধা হলো। রাজসভায় তাঁদের সবাইকে ছাপিয়ে খনার উত্তরোতর সম্মান বৃদ্ধিতে অপমানিত ও বিক্ষুব্ধ বরাহ স্থির করলেন খনার বাকরুদ্ধ করে কাঁটা তুলবেন। পুত্র মিহিরকে তিনি নির্দেশ দিলেন খনার জিভ কেটে ফেলতে। একজন গৃহবধূ, একজন নারীর কোনো অধিকার নেই পুরুষের মাঝে মাথা তুলে দাঁড়াবার। কথিত আছে পিতৃনির্দেশ পালন করতে মিহির খনার বাকশক্তি লোপ করতে এলে স্থিতধী খনা তার কাছ থেকে মাত্র সাতদিন সময় চেয়েছিলেন। এই সাতদিন সাতরাত্রি তিনি দেশের কৃষকদের এবং সাধারণ মানুষদের নিয়ে অনেক কথা বলেছিলেন। সেইসব কথাগুলি পরে খনার বচন নামে যুগ যুগ ধরে প্রসিদ্ধি লাভ করেছে। সাতদিন পর স্বামী ও শ্বশুর মিলে তার জিহ্বা কেটে দিলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে খনার মৃত্যু হয়।
খনার জীবনের যে কাহিনী আপামর সবাই জানে তা পুরোটাই কিংবদন্তী নির্ভর। যুগ যুগ ধরে মানুষের মুখে মুখে প্রচলিত তার জীবনী ও বচন খুবই জনপ্রিয়। বাস্তবে সত্যই কি ছিল খনা নামক এক বিদুষী, মেধাবী নারী? মধ্যযুগীয় পুরুষতান্ত্রিক সমাজের নিগ্রহে যাকে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়েছিল। সবটাই কি গল্পকথা... না কি ইতিহাস...? খনার অস্তিত্ব ইতিহাসের কোথাও লিখিতভাবে পাওয়া যায়নি। ঠিক যেভাবে বরাহ মিহিরের প্রমাণ আমরা পেয়েছি। এমনকি বিক্রমাদিত্যের রাজসভার দশম রত্নের উল্লেখ ও কোথাও নেই। খনার বচনের ও কোনো লিখিত রূপ পাওয়া যায়নি। মানুষের মুখে মুখে এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্ম প্রবাহিত হয়েছে। ঐতিহাসিকরা খনার অস্তিত্ব স্বীকার করেছেন। ঠিক কোন সময়ে খনা জন্মগ্রহন করেছিলেন তা নিয়ে ইতিহাসবিদদের মধ্যে মতভেদ আছে। তাদের একাংশের মতে ৮০০ থেকে ১১০০খৃ: মধ্যে কোনো এক সময়ে খনার জন্ম হয়েছিল। কিন্তু বরাহের জীবনকাল ৫০৫ থেকে ৫৮৭খৃ:। খনা যদি বরাহের পুত্রবধূ হয়ে থাকেন তাহলে তাদের মধ্যে প্রায় তিনশ বছরের ব্যবধান হয় কি করে? সুতরাং এই হিসেব মিলছে না। আবার খনা অত প্রাচীন কালের নারী হলে, তার বচন গুলি বাংলাভাষায় হয় কি করে? বাংলা ভাষার বয়স কোনোভাবেই চারশ বছরের বেশি হবে না। কিছু ঐতিহাসিক মনে করেন খনার জন্ম হয়েছিল ৮০০ থেকে ১২০০ খৃ: এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগণা জেলার দেউলি গ্রামে। তাঁর পিতার নাম ছিল অটনাচার্য। খনার বচনেই উল্লেখ আছে "আমি অটনাচার্যের বেটি/গণতে গাঁথতে কারে না আঁটি।" দেউলি অঞ্চলের মাটি খনন করে পাওয়া গেছে রাজা ধর্মকেতু, চন্দ্রকেতুর রাজত্বের হারিয়ে যাওয়া বহু ঐতিহাসিক নিদর্শন। স্থানীয় মানুষ এই অঞ্চলকে চন্দ্রকেতুগড় বা খনা-মিহিরের ঢিবি বলে অভিহিত করে থাকেন। এখানে প্রশ্ন ওঠে খনা যদি সিংহলের রাজকুমারী হয়ে থাকেন এবং মিহিরকে বিবাহ করে উজ্জয়িনীতে এসে বসবাস করে থাকেন তবে বাংলা, উড়িষ্যায় খনার বচনের প্রচলন বেশি কেন? একটি প্রাচীন সিংহলি গ্রন্থে পাওয়া গেছে লীলাধিপতি সিংহবাহুর পুত্র বিজয়সিংহ পিতৃ পরিত্যক্ত হয়ে সিংহলে চলে যান বাণিজ্য করতে। ক্রমে ক্রমে প্রতিপত্তিশালী হয়ে একসময় সিংহলের অধিপতি হয়ে যান। তাঁর প্রতিষ্ঠিত রাজবংশ সিংহলে দীর্ঘদিন রাজত্ব করেছিল। সম্ভবত খনা সেই রাজবংশের রাজকুমারী ছিলেন। সে কারন তৎ কালীন বাংলাভাষা তাঁর কাছে মাতৃভাষার মতো ছিল। ঐতিহাসিক আলী নওয়াজের মতে উজ্জয়িনীতে বসবাস করেও খনার পক্ষে বাংলা ভাষায় রচনা করা সম্ভব ছিল। কালিদাস ও গুপ্ত সম্রাটেরা বাঙালী হলে উজ্জয়িনীর জ্ঞানচর্চায় বাংলা প্রভাব থাকা স্বাভাবিক। ১৪ ও ১৫ শতকের দুজন বাঙালী জ্যোর্তিবিদের রচনায় খনার বচনের উল্লেখ পাওয়া যায়। এতে মনে হয় খনা ১৪ শতকের আগের। আবার খনার বচনের কোথাও বৈষ্ণব মতবাদ বা ভক্তিবাদের স্থান নেই, নেই দেবদেবীর পূজার্চনা, অধ্যাত্ত্ববাদের কথা। রয়েছে ব্রাক্ষণ্যবাদের প্রতি তীব্র কটাক্ষ। এর থেকে সহজেই অনুমান করা যায় যে খনার অস্তিত্ব ছিল বৈষ্ণব ধর্ম প্রবর্তনের আগে।
প্রাচীন কাল থেকে আজো খনার বচনগুলি মানুষের মুখে মুখে জনপ্রিয়। মূলত:কৃষিতত্বের উপর রচিত হলেও সাধারণ মানুষের ব্যবহারিক জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনেক সঠিক দিক নির্দেশনা দেয়। পুরুষের উপরে একজন নারীর এত অসাধারণ জ্ঞান পুরুষতান্ত্রিক মধ্যযুগীয় সমাজ মেনে নিতে পারে নি। হয়ত সেই কারনেই খনার প্রজ্ঞাকে চিরতরে মুছে ফেলার জন্য জ্যোতিষশাস্ত্রের ইতিহাসে কোথাও বিদুষী খনার উল্লেখ নেই। সমকালীন কালিদাসের রচনাতে বিক্রমাদিত্যের নবরত্নের উল্লেখ আছে| কোথাও দশম রত্ন হিসাবে খনার নাম পাওয়া যায় নি যাবতীয় গ্রন্থাবলিতে খনাকে একজন বচন নির্মাতা হিসাবেই দেখান হয়েছে। খনা কেবল বিদূষী ছিলেন না। তিনি ছিলেন একজন স্পষ্ট বক্তা নির্ভীক রমণী। তৎকালীন ব্রাহ্মণ সমাজের দম্ভ ও প্রতিপত্তিকে তিনি অগ্রাহ্য করেছিলেন যুক্তি দিয়ে। খনার বচনের মাধ্যমে এই সত্য প্রতিপন্ন হয়েছে। সাধারণ নিম্নশ্রেণীর মানুষের সাথে তাঁর মেলামেশা ও নানান হিতোপদেশে তাদের উপকারসাধনে খনা তাঁর অজান্তেই পুরুষতন্ত্রের নির্যাতনের শিকার হয়ে গেছিলেন। হয়ত এইসব কারণের সংমিশ্রনে তাঁকে নির্মমভাবে বলি দিতে হয়েছিল নিজেকে। সাধারণ মানুষের হিতসাধনের জন্য নিজের মৃত্যুদন্ড তাঁর প্রাণাধিক প্রিয় স্বামীর কাছ থেকে শোনার পর তিনি সাতদিন সময় চেয়েছিলেন। এই সাতদিনে তিনি যেসব কথা বলে গেছেন পরবর্তীকালে তা আপামর জনতার কাছে মহামূল্যবান দিক নির্দেশক হিসাবে কাজ করেছে। পণ্ডিত বরাহ ও তাঁর পুরুষ অনুগামীরা এখানেই আবার ভ্রান্ত গণনা করেছেন। নিষ্ঠুরভাবে জিভ কেটে খনাকে হত্যা করতে গিয়ে খনাকে যুগ যুগ ধরে বাঁচিয়ে রেখেছেন। এক নিগৃহীতা বিদূষী কথামানবী হিসাবে খনা অমরত্ব লাভ করেছেন সাধারণ মানুষের মনে।

 

নবনীতা চট্টোপাধ্যায়
পশ্চিম বঙ্গ, ভারত

 

এই লেখকের অন্যান্য লেখা



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top