দিনময়ী দেবী: অভিমানী এক অন্ত:পুরবাসিনী : নবনীতা চট্টোপাধায়


প্রকাশিত:
১৩ জানুয়ারী ২০২২ ০১:১৯

আপডেট:
১২ এপ্রিল ২০২৫ ০৪:১৯

ছবিঃ দিনময়ী দেবী

 

ঘরের মধ্যে টিমটিম করে জ্বলছে প্রদীপের আলো। সেই স্বল্পালোকিত কক্ষে নিবিষ্ট হয়ে বই লিখছেন তাঁর বিখ্যাত স্বামী। প্রদীপে আরো একটু তেল দিয়ে সলতেটা উসকে স্বামীর পাশে এলেন স্ত্রী। শুধোলেন "তুনি কি লিখছো? "
"সীতার বনবাস"। লেখায় মগ্ন স্বামীর উত্তর দিলেন। সীতার বনবাস... স্বামীসঙ্গবিহীন, জনমদুখিনী নারীর সেই একাকিত্বের কাহিনী... । এক মূর্হুতের জন্য আনমনা হয়ে গেলেন স্ত্রী। তারপর খুব নরম করে শুধোলেন " তুমি সীতাকে বোঝো? " আসলে বলতে চেয়েছিলেন সীতার মতোই স্বামীসঙ্গবিহীন একাকীত্বের জীবন কাটানো তাঁর মনোবেদনা কি তাঁর স্বামীকে স্পর্শ করে কখনো?
"কেন বুঝবো না? " লেখায় মগ্ন স্বামীর উত্তরে ঠিক যেন সন্তুষ্ট হলেন না স্ত্রী। তারপর কথা ঘুরিয়ে অন্যভাবে বললেন "ওই পাড়ার চঞ্চলাকে আমার খুব হিংসা হয়|" স্ত্রীর এহেন আজব কথা শুনে স্বামী কৌতুক করে বললেন "কেন? সুন্দরী নাকি? "
" সুন্দরী না হলেও তার ভাগ্য ভালো। তার স্বামী বিদ্যাসাগর নয়।" কথাবার্তা আর বেশি এগোল না। দরজায় করাঘাত শোনা গেলো। প্রতিবেশি নিবারণবাবুর মৃত্যুসংবাদ বয়ে এনেছে পড়শিরা। ঈশ্বর তড়িঘড়ি বেরিয়ে গেলেন নিবারনের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে। বহুদিন পর স্বামীকে কাছে পেয়েও পেলেন না দিনময়ী। বনফুলের 'বিদ্যাসাগর' গ্রন্থে রয়েছে সেই ঘটনা "জ্যোস্নালোকিত বাতায়নের সম্মুখে দিনময়ী প্রস্তরমূর্তিবৎ দাঁড়াইয়া রহিলেন।" কত কথা বলার ছিল, তাঁর সুবিখ্যাত সদাব্যস্ত স্বামীকে তাঁর একাকিত্বের আভাস দেওয়ার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু হলো না। একরাশ অভিমান মিশে গেল রাত্রির অন্ধকারে।
ইতিহাস বলে একজন সফল পুরুষের পিছনে অবদান থাকে এক নারীর। নারীর ত্যাগ, সহিষ্ণুতা, সুকোমল মসৃণ সহযোগীতা একজন সৃষ্টিশীল, কর্মমুখর পুরুষকে এগিয়ে দেয় সাফল্যের পথে, জগতের হিতসাধনে। রবীন্দ্রনাথ 'বিদ্যাসাগর চরিত'এ লিখেছেন "মহাপুরুষের ইতিহাস বাহিরের কার্যে এবং জীবনবৃত্তান্তে স্থায়ী হয় আর মহৎ নারীর ইতিহাস তাঁহার পুত্রের চরিত্রে, তাঁহার স্বামীর কার্যে রচিত হইতে থাকে এবং সে লেখায় তাঁহার নামোল্লেখ থাকে না।" মর্মস্পর্শী অথচ অত্যন্ত বাস্তব এই সত্যের জ্বলন্ত উদাহরণ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ভার্যা দিনময়ীর জীবন। বিদ্যাসাগরের মাতৃভক্তি ও তাঁর মাতা ভগবতীদেবী সম্বন্ধে আমরা সকলেই অনেক কিছু জানি। বস্তুত বিদ্যাসাগরের জীবনে তাঁর মা ভগবতী দেবীর প্রভাব ছিল অপরিসীম। কিন্তু তাঁর স্ত্রী দিনময়ী দেবী চিরকালই থেকে গেছেন যাবতীয় আলোক সম্পাত থেকে অনেক দূরে এক অন্তরালবাসিনী হয়ে।
১৮২৬ খৃ: বীরসিংহের পার্শ্ববর্তী ক্ষীরপাই গ্রামে দীনময়ীর জন্ম হয়। তাঁর পিতা শত্রুঘ্ন ভট্টাচার্য্য ছিলেন একজন সম্পন্ন ধনশালী জন। শুধুমাত্র অর্থেই নয়, শারিরীক বলেও তিনি বিখ্যাত ছিলেন। শোনা যায় এক মত্ত হস্তীকে তিনি একাই স্ববশে এনেছিলেন। এহেন ধনী পরিবারের আদৃতা কন্যা হয়েও দিনময়ী বিদ্যাশিক্ষা শুরু করেছিলেন। কিন্তু যখন তাঁর মাত্র সাত বৎসর বয়স ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে তাঁর বিবাহ স্থির হলো। সাত বৎসরের বালিকার কাছে তখন বিবাহের অর্থই পরিস্কার ছিলনা। এই বিবাহ হওয়ার ও কথা নয়। অত্যন্ত দরিদ্র পরিবার হওয়ার জন্য এর আগে ঈশ্বরচন্দ্রের দুইটি বৈবাহিক সম্বন্ধ বাতিল হয়েছে। কিন্তু উদার মানসিকতার অধিকারী শত্রুঘ্ন ভট্টাচার্য্য ঠাকুরদাস বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়েছিলেন "বন্দ্যোপাধ্যায় তোমার ধন নাই, কেবল তোমার পুত্র বিদ্বান হইয়াছেন। এই কারণে আমার প্রাণসখা তনয়া দিনময়ীকে তোমার পুত্র-করে সমর্পণ করিলাম।" পিত্রালয়ের পুতুলখেলার সংসার, সবেমাত্র শুরু হওয়া বিদ্যাশিক্ষা, পিতামাতার স্নেহ আবরণ ফেলে রেখে সাত বছরের বালিকা প্রবেশ করলেন এমন একজনের জীবনে যিনি সাগরের মতই অসীম। দিনময়ীর পক্ষে তাঁর নাগাল পাওয়া দুস্কর ছিল। বিবাহের পরেপরেই ঈশ্বরচন্দ্র গ্রামের বাড়িতে স্ত্রীকে রেখে কলকাতা চলে গেলেন সংস্কৃত কলেজে পঠন পাঠনের উদ্দেশ্যে। সেই সঙ্গে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন নানাবিধ সমাজ সংস্কার ও সাহিত্য রচনার কর্মে। খুব কম বীরসিংহের বাড়ীতে আসতেন এবং এলেও সদাই ব্যস্ত থাকতেন গ্রামের নানান রকম সংস্কার মূলক কাজেকর্মে। স্ত্রীর সাথে তাঁর খুব কম ই দেখাসাক্ষাৎ হত। শাশুড়ি ভগবতী দেবীর তত্ত্বাবধানে সারা দিন গৃহকর্ম সম্পাদন করেন দিনময়ী। সংসারের সব কর্তৃত্বের চাবিকাঠি ভগবতী দেবীর হাতে। দিনময়ী আজ্ঞাবাহিকা মাত্র। বালিকা দিনময়ী একবার বিদ্যাশিক্ষার ইচ্ছা প্রকাশ করায় ঈশ্বরচন্দ্র পরদিনই বইখাতা জোগাড় করে এনে তাঁদের শয়নকক্ষেই স্ত্রীর লেখাপড়া শেখানোর ব্যবস্থা করেন। কিন্তু পরদিন সকালে পুত্র ও পুত্রবধূকে একসাথে দেখে ভগবতী দেবি মত প্রকাশ করেন "সেই ভালো। ছেলে, বৌ, শেলেট খড়ি নিয়ে মেতে থাকুক আর আমি তাদের সংসার ঠেলি।" ঈস্বরচন্দ্র মায়ের অমতে আর স্ত্রীর শিক্ষালাভের জন্য আর সচেষ্ট হন নি। ভাবতে আশ্চর্য লাগে পরবর্তী জীবনে বিদ্যাসাগর নারীশিক্ষার প্রবর্তন ও প্রসারের জন্য সর্বরকম সামাজিক প্রতিবন্ধকতা অগ্রাহ্য করে নিজেকে সর্বত: ভাবে উজাড় করে দিয়েছিলেন। যিনি বিশ্বাস করতেন "কন্যাপ্যেবং পালনীয়া শিক্ষানীয়াতিযত্নত:" অর্থাৎ কন্যাকে ও অতি যত্ন সহকারে পালন করা ও শিক্ষা দেওয়া কর্তব্য, যিনি স্থাপন করেছিলেন বহু বালিকা বিদ্যালয় নিজ উদ্যোগে, নারীশিক্ষার প্রবর্তন ও প্রসারের আলোকবর্তিকা যার হাতে ছিল, সেই মনীষীর জীবনসঙ্গিনী হয়ে অশিক্ষার অন্ধকারে নিতান্ত অনাড়ম্বরভাবে বাহিত হয়েছে দিনময়ীর একলাযাপন।
উনবিংশ শতাব্দীর একজন সাধারণ গৃহস্থ বধূর মতো সাংসারিক জীবনেও দিনময়ী অনেক যাতনা, গঞ্জনা সহ্য করেছিলেন। দীর্ঘদিনের স্বামীসঙ্গবিহীন জীবনে তাঁকে অহেতুক বন্ধ্যা নারীর তকমা বহন করতে হয়েছে। অকারণে জড়িবুটি, জলপড়া, তেলপড়া প্রভৃতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। কেউ কেউ বিদ্যাসাগরকে পুর্নবিবাহের পরামর্শ ও দিয়েছিলেন। যদিও বিদ্যাসাগর তাতে সম্মত হন নি। অবশেষে বিবাহের সুদীর্ঘ পনের বৎসর পরে প্রথম সন্তান নারায়ন চব্দ্র জন্মগ্রহন করেন। তার পরে আরো চারটি কন্যাসন্তানের ( হেমলতা, কুমুদিনী, বিনোদিনী ও সরৎকুমারী) জননী হয়েছেন। সন্তান সন্ততি, শ্বশুরালয়ের সবাইকে নিয়ে দিনময়ী আগাগোড়া বীরসিংহের বাড়ীতে কাটিয়েছেন আর বিদ্যাসাগর কলকাতায়। সমাজ সংস্কার, নারীশিক্ষার প্রসার, বিধবা বিবাহের প্রবর্তন ও প্রসার, বাংলা গদ্যভাষায় বাঙলাসাহিত্যের নতুন দিক প্রবর্তন, সাহিত্য রচনা, দীন দুখী আর্ত মানুষের সেবা ইত্যাদি নানান কর্মযজ্ঞে তিনি একমাত্র পুরোহিত। তাঁর এই বিশাল কর্মসমুদ্রে বিদ্যাসাগর কখনোই দিনময়ীকে অন্তর্ভুক্ত করেন নি। বিদ্যাসাগরের মতো বিখ্যাত মনীষীর কর্মজীবনে দিনময়ীর কোনো প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভূমিকা ছিল না। স্বামীকে না পেয়ে পুত্র নারায়ন চন্দ্রকে আঁকড়ে ধরেছিলেন দিনময়ী। গ্রামের পাঠশালাতেই নারায়ন চন্দ্রের বিদ্যাশিক্ষা সমাপ্ত হয়েছিল। আর বেশিদূর এগোয়নি। পিতামহ ঠাকুরদাস তাকে কলকাতায় বিদ্যাশিক্ষার জন্য পাঠাতে সম্মত ছিলেন না। পুত্রের উপর দিনময়ী দেবীর অগাধ প্রশ্রয় নিয়ে বিদ্যাসাগরের সাথে তাঁর মতভেদ ও দূরত্ব বাড়তে লাগে। ১৮৭০ সালে ১১ই অগাস্ট বিদ্যাসাগর তাঁর ২২বৎসরের পুত্র নারায়নের সাথে এক ষোলো বছরের বিধবা কন্যা ভবসুন্দরীর বিবাহ দেন। দিনময়ীর কোনো মতামতের প্রয়োজনীয়তা তিনি উপলব্ধি করেন নি। তদানীন্তন কলকাতার মির্জাপুর স্ট্রীটে কালীচরন ঘোষের বাড়ীতে এই বিবাহ সম্পন্ন হয়। একমাত্র পুত্রের বিবাহের সংবাদ জানার অধিকার থেকে দিনময়ী বঞ্চিত হলেন। শুধু তাই নয়, বিবাহ সাঙ্গ হবার পর ঈশ্বরচন্দ্র ভাই শম্ভুচন্দ্রকে পত্রে জানালেন "২৭শে শ্রাবন বৃহস্পতিবার নারায়ন ভবসুন্দরীর পাণিগ্রহণ করিয়াছে| এই সংবাদ মাতৃদেবী প্রভৃতিকে জানাইবে।" এখানে উল্লেখযোগ্য পত্রে বিদ্যাসাগর দিনময়ীকে প্রভৃতির দলে রেখে দিয়েছেন। অথচ পরবর্তীতে বহুবার পত্রে পুত্রের বিপথগামীতার জন্য "তোমার পুত্র অমানুষ" বলে মানসিক দু:খ দিয়েছিলেন। তবে নারায়নচন্দ্রের বিবাহের আগেই বিদ্যাসাগর দিনময়ীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটেছিল। ১৮৬৯ সালে ক্ষীরপাই গ্রামে জনৈক মুচীরাম বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে জনৈকা মনমোহিনীর বিবাহ উপলক্ষে বিদ্যাসাগর তাঁর গ্রামে এসেছিলেন। মুচিরাম ছিলেন গ্রামের হালদারদের ধর্মপুত্র। হালদাররা বিদ্যাসাগরের সাথে দেখা করে তাঁকে অনুরোধ করলেন এই বিবাহ বন্ধ করতে। বিদ্যাসাগর কথা দিলেন। কেনই বা হালদাররা তাঁকে এইরকম অনুরোধ করলেন আর কেনই বা বিদ্যাসাগর সম্মত হলেন এই ব্যাপারে কিছুই জানা যায়নি। বিদ্যাসাগরের কথাকে অগ্রাহ্য করে গভীর রাতে তাঁর মা ও স্ত্রীর সমর্থনে বিবাহ সম্পন্ন হলো। পরের দিন প্রাতে বিদ্যাসাগর তাঁর পিতামাতা, স্ত্রী সন্তান সবাইকে ফেলে চিরদিনের মতি বীরসিংহ গ্রাম ত্যাগ করে চলে গেলেন। এরপর বহুদিন দিনময়ীর সাথে তাঁর স্বামীর সাক্ষাৎ হয়নি। পুত্রের বিবাহের দুই বছর পর থেকে পুত্রের নেশাগ্রস্ত বিপথগামী জীবনের জন্য বিদ্যাসাগর পুত্রের প্রতি দিনময়ীর অগাধ স্নেহকেই দায়ী করেছেন।
তাঁদের বিবাহের ৩৫ বৎসর পরে বিদ্যাসাগর দিনময়ী দেবীকে একটি পত্রে লিখেছিলেন "আমার সাংসারিক সুখভোগের বাসনা পূর্ণ হইয়াছে.... এক্ষণে তোমার নিকট এ জন্মের মতো বিদায় লইতেছি... দয়া করিয়া আমাকে ক্ষমা করিবে.... তোমাদের নিত্যনৈমিত্তিক ব্যয় নির্বাহের যে ব্যবস্থা করিয়া দিয়াছি, বিবেচনাপূর্বক চলিলে, তদ্দারা স্বচ্ছন্দরূপে যাবতীয় আবশ্যিক বিষয় সম্পন্ন হইতে পারিবেক।... এক্ষণে তোমার কাছে বিনয়বাক্যে প্রার্থনা করিতেছি যদি কখন ও কোনো দোষ বা অসন্তোষের কর্ম করিয়া থাকি, দয়া করিয়া আমাকে ক্ষমা করিবে।" হয়তো বিদ্যাসাগরের মনে হয়েছিল সাত বছরের যে বালিকাটি একদিন তাঁর হাত ধরে তাঁর সংসারের লক্ষী হয়ে এসেছিলেন, যার পয়মন্তে, যার অকৃপন সহযোগীতায় বিদ্যাসাগর সংসারধর্মে ব্যস্ত না থেকে সমাজের হিতসাধনের পথে নিজেকে সর্বত:ভাবে উজাড় করে দিতে পেরেছিলেন, তাঁকে তাঁর প্রাপ্য মর্যাদা যথাযথ ভাবে দেওয়া হয়নি। অবহেলার এক মলিন চাদরে নিজেকে আবৃত করে দিনময়ী নীরবে নি:শব্দে অন্তরালবাসিনী হয়েই রয়ে গেছিলেন।
৮৮৮খৃ: রক্ত আমাশায় রোগাক্রান্ত দিনময়ীকে চিকিৎসার জন্য বিদ্যাসাগর কলকাতার বাদুড়বাগানে নিয়ে আসেন। এই প্রথম দিনময়ী দেবী কলকাতায় তাঁর স্বামীর সাথে থাকতে এলেন| কিন্তু তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। এক বৃষ্টিমুখর দিনে রোগশয্যায় তাঁর স্বামীকে তিনি শেষ মিনতি করেছিলেন তিনি যেন পুত্র নারায়নচন্দ্রকে ক্ষমা করে দেন। সারা জীবন যিনি বুক ফাটলে ও মুখ ফুটে কিছু বলেন নি, তাঁর এই শেষ ইচ্ছায় বিদ্যাসাগর পুত্রকে ক্ষমা করতে রাজীই হয়েছিলেন। স্বামীর কাছে তাঁর অন্তিম ইচ্ছাপত্রটি পেশ করে দিনময়ী বিদায় নিয়েছেন চিরতরে সাথে নিয়ে তাঁর অকথিত অভিমানী বর্ণমালাদের। স্ত্রীর শেষ কাজের সব ব্যবস্থা বীরসিংহ গ্রামে করে দিয়েছিলেন বিদ্যাসাগর। যদিও নিজে তিনি উপস্থিত ছিলেন না স্ত্রীর শ্রাদ্ধে। কিন্তু মানসিকভাবে কাতর হয়ে পড়েছিলেন, সেইসঙ্গে স্বজনহীন, নি:সঙ্গ এক জীবন যাপন করতে হয়েছিল তাঁকে। হয়তো ছায়াপথে হারিয়ে যাওয়া দিনময়ী দেবীর নি:সঙ্গতা তখন স্পর্শ করেছিল এই মহীরূহকে।

 

নবনীতা চট্টোপাধায়
পশ্চিম বঙ্গ, ভারত



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top