করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ৩ বছরের পরিকল্পনা বাংলাদেশের
প্রকাশিত:
১৬ এপ্রিল ২০২০ ২১:২৭
আপডেট:
১৬ এপ্রিল ২০২০ ২১:৪৪

প্রভাত ফেরী: করোনার কারণে দেশে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিলে আগামী ৩ বছরে কীভাবে দেশের মানুষকে তা থেকে রক্ষা করা হবে, সেই পরিকল্পনাও নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) সকালে ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জ জেলার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের শুরুতে এ তথ্য জানান প্রধানমন্ত্রী।
আতঙ্কিত হয়ে অমানুষিক আচরণ না করে করোনা সন্দেহ রোগীকে পরীক্ষা ও চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কারো যদি সন্দেহ হয় তাকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। তার পরীক্ষা করান। নিজেরাও সুরক্ষিত হন। এই প্রাদুর্ভাব থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আমাদের যা যা করণীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুক।
সম্প্রতি করোনা রোগী সন্দেহে দেশের বিভিন্ন জায়গায় মানুষের অস্বাভাবিক আচরণের বিষয়টি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে অনেক সময় অমানুষেও পরিণত হয়। যখন আমরা দেখি মায়ের একটু সর্দি কাশি জ্বর হলো দেখে ছেলে, ছেলের বউ এমনকি তার স্বামী পর্যন্ত তাকে নিয়ে জঙ্গলে ফেলে আসছে। এর থেকে অমানবিক কাজ আর হতে পারে না। কেন এ ধরনের ঘটনা ঘটবে?
প্রধানমন্ত্রী বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, কীভাবে একজন মানুষকে বের করে দেবেন। বা একজন ডাক্তার সে যদি অসুস্থ হলো তাকেও এলাকা থেকে বের করে দিতে হবে। এই ধরনের ঘটনা কেন বাংলাদেশে ঘটবে। বাংলাদেশের মানুষকে তো এত অমানবিক হওয়ার কথা না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের মানুষকে রক্ষা করা বা এই ধরনের দুর্ভিক্ষ বা অর্থনৈতিক যদি মন্দ হয়, তা থেকে দেশকে আমরা কীভাবে রক্ষা করব? এ কথা চিন্তা করে আমরা ইতোমধ্যে প্রায় ৯৩ হাজার কোটি টাকা, আসলে প্রায় বলতে গেলে এক লাখ কোটি টাকার মতো একটা প্রণোদনা প্যাকেজ তৈরি করেছি। তা আমরা বাস্তবায়ন শুরু করেছি। কোনোরকম মন্দা আসলে আমি যেন তা মোকাবিলা করতে পারি। আর সেটা শুধু এখনকার জন্যই না, আগামী ৩ অর্থবছরে আমরা কীভাবে দেশের মানুষকে অর্থনৈতিক মন্দা থেকে রক্ষা করব, সেই পরিকল্পনাও আমরা কিন্তু নিচ্ছি। সেভাবে আমরা প্রত্যেকটা পদক্ষেপ নিয়ে নিচ্ছি। একটু আগাম কিছু কর্মসূচি নিয়ে নিচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সামনে রোজা। এই রমজান মাসে আমাদের পণ্য পরিবহন বা খাদ্য সামগ্রীর যাতে অসুবিধা না হয়, সেজন্য আমরা যথেষ্ট ব্যবস্থা নিয়েছি। কিন্তু সেই সাথে সাথে এখানে তারাবির নামাজ, যেহেতু সৌদি আরবেও মসজিদে পড়ছে না, কিংবা অন্যান্য দেশে হচ্ছে না। আমাদের এখানেও, যেহেতু ইসলামিক ফাউন্ডেশন কতগুলো নির্দেশনা দিয়েছে, সেগুলো আপনারা মেনে ঘরে বসে তারাবি পড়েন। নিজের মন মতো করে পড়েন।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নেয়া ব্যবস্থাগুলো তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে সৌদি আরবে, সেখানে পর্যন্ত মসজিদে নামাজ বা জমায়েত হওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। এমনকি তারাবি নামাজ পর্যন্ত সেখানে হবে না। সবাই ঘরে বসে পড়বে। খুব সীমিত আকারে কিন্তু সেখানে তারা করছেন, তারা নিষেধ করে দিয়েছেন। ঠিক এভাবে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, এমনকি ভ্যাটিকান সিটি থেকে শুরু করে সব জায়গায় কিন্তু এইভাবে তারা সুরক্ষা করার ব্যবস্থা নিয়েছে। নিজেদেরকে সুরক্ষিত রাখা, অন্যদেরকে সুরক্ষিত করা।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: