বুড়িগঙ্গায় অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে লঞ্চডুবি, ৩৫ মরদেহ উদ্ধার


প্রকাশিত:
২৯ জুন ২০২০ ২২:২৭

আপডেট:
১৩ মার্চ ২০২৫ ০২:৩৭

 

প্রভাত ফেরী: ঢাকায় বুড়িগঙ্গা নদীতে সোমবার সকালে যাত্রীবাহী একটি লঞ্চ ডুবে গেছে। এ ঘটনায় সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নারী ও শিশুসহ ৩৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসার রোজিনা আক্তার জানান, সোমবার সকালে আরেকটি লঞ্চের সঙ্গে ধাক্কা লেগে লঞ্চটি ডুবে যায়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৮ নারী ও ৩ শিশুসহ ৩৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

তবে তাৎক্ষণিকভাবে মৃতদের পরিচয় জানা যায়নি। এ ছাড়া ঠিক কতজন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন, সেটাও স্পষ্ট নয়। ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড, নৌ পুলিশ ও বিআইডব্লিউটিএর কর্মীরাও উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন। সদরঘাট নৌ থানার ওসি রেজাউল করিম ভূঁইয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, লাশগুলোর ময়নাতদন্তের জন্য মিটফোর্ড হাসপাতলে নেওয়া হবে।

জানা গেছে, ডুবে যাওয়া লঞ্চটির নাম মর্নিং বার্ড। এটি একটি ছোট আকারের লঞ্চ। ময়ূর-২ নামে আরেকটি লঞ্চের সঙ্গে ধাক্কা লেগে এটি ডুবে যায়। ডুবে যাওয়া লঞ্চ মর্নিং বার্ড ঢাকা-মুন্সীগঞ্জ রুটে চলাচল করতো। ডুবে যাওয়ার সময় লঞ্চটিতে ৫০ জনের মতো যাত্রী ছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চাঁদপুর থেকে ছেড়ে আসা ময়ূরী-২ লঞ্চটি লালকুঠী ঘাটে যাত্রী নামিয়ে সদরঘাটের চাঁদপুর ঘাটে গিয়ে নোঙ্গর করার জন্য পেছন দিকে ঘুরছিল। ওই সময় লঞ্চটির পেছনে থাকা মর্নিং বার্ডের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে ডুবে যায় মর্নিং বার্ড লঞ্চটি। এ সময় ডুবে যাওয়া লঞ্চের যাত্রীদের কয়েকজন সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও অনেকেই ভেতরে আটকা পড়েন।

নিখোঁজদের স্বজনদের মধ্যে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তাঁদের অনেক পরিবারের চার-পাঁচজনও এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন। প্রিয়জনদের মৃতদেহ পাওয়ার জন্য তাঁদের ভিড় এখন ঢাকার বুড়িগঙ্গাপাড়ে। তবে ডুবে যাওয়া লঞ্চটিতে এখনো মৃতদেহ রয়েছে বলে জানিয়েছেন ডুবুরিরা। মুন্সিগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা দোতলা মর্নিং বার্ড লঞ্চটি সদরঘাট কাঠপট্টি ঘাটে ভেড়ানোর আগ মুহূর্তে চাঁদপুরগামী ময়ূর-২ নামের অপর লঞ্চের ধাক্কায় ডুবে যায়। এর পরপরই লঞ্চে থাকা যাত্রীদের স্বজনরা আপনজনের খোঁজে নদীপাড়ে আসতে থাকেন। অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাদের আহাজারিতে বুড়িগঙ্গার বাতাস ভারি হয়ে ওঠে।

অনেক স্বজনকে দেখা যায় নদীতে সাঁতার দিয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়ারও চেষ্টা করতে। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশসহ অভিযান পরিচালনা বাহিনীকে হিমশিম খেতে হয়। এ অবস্থা এখনো চলছে। ডুবুরিদের উদ্বৃতি দিয়ে উদ্ধার অভিযান পরিচালনাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত ৩৫ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ডুবুরিরা দেখেছেন লঞ্চটির ভেতর আরো মৃতদেহ রয়েছে। তবে তা উদ্ধার কঠিন হয়ে পড়েছে। কেননা, লঞ্চটি উপুড় হয়ে থাকার কারণে ভেতরে প্রবেশ করা যাচ্ছে না।

কর্মকর্তারা আরো জানান, ডুবুরিরা দড়ি ও অক্সিজেনের নল নিয়ে পানির নিচে ডুব দেন যা পানির ওপর নৌকায় থাকে। ডুবে যাওয়া লঞ্চটি যে অবস্থায় আছে তাতে অনেক সময় অক্সিজেন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঘটনা ঘটে। এ কারণে বাকি লাশ উদ্ধারে এখন ঝুঁকিপূর্ণ। তবু সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হচ্ছে সব লাশ উদ্ধারের।

বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচারক একেএম আরিফ উদ্দিন জানান, বেশিরভাগ যাত্রী উপরে উঠতে সক্ষম হয়েছে। নিখোঁজ যাত্রীদের উদ্ধারে ডুবুরিরা কাজ করছে।


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top