নাম পরিবর্তন করে ২১ বছর আত্মগোপনে মুফতি শফিক
প্রকাশিত:
১৬ এপ্রিল ২০২২ ০২:৫০
আপডেট:
১৫ মার্চ ২০২৫ ১৮:১৪

বহুল আলোচিত রমনা বটমূলে বোমা হামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ও একাধিক মামলার পলাতক আসামি মুফতি শফিকুর রহমান নিজের নাম-পরিচয় পরিবর্তন করে দীর্ঘ ২১ বছর ধরে আত্মগোপনে ছিলেন।
শুক্রবার দুপুরে কারওয়ান বাজারের র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব।
২০০১ সালে রমনা বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ও সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়াসহ পাঁচজন নিহতের ঘটনায় জড়িত মুফতি শফিকুর রহমান ওরফে আব্দুল করিম ওরফে শফিকুল ইসলাম ওরফে শফিক(৬১)।
খন্দকার মঈন বলেন, রমনা বটমূলে হামলার পর ২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত মুফতি শফিক আত্মগোপনে থেকে সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। আব্দুল করিম নাম ধারণ করে ২০০৮ থেকে নরসিংদীর একটি মাদরাসায় আত্মগোপন করেন তিনি।
‘নরসিংদীর চর এলাকায় অবস্থিত একটি মসজিদে মাসিক পাঁচ হাজার টাকা বেতনে ইমামতির চাকুরি নেন শফিক। ইমামতির আড়ালে তিনি মানুষের মাঝে ধর্মের নামে বিভ্রান্তিমূলক অপব্যাখ্যা প্রচার করতেন। কৌশলে মাঝে মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন স্থানে তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করতেন তিনি।’
তিনি আরও বলেন, চাঞ্চল্যকর সব মামলার পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করছে র্যাব। এরই মধ্যে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার অন্যতম পলাতক আসামি ইকবালকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান চলাকালীন প্রকাশ্য দিবালোকে দুর্বৃত্তদের অতর্কিত বোমা হামলায় ১০ জন নিহত এবং আরও অনেকে আহত হন। ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে রমনা থানায় একটি হত্যা মামলাসহ অপর একটি বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা হয়। হত্যা মামলায় ২০১৪ সালের ২৩ জুন আটজনকে মৃত্যুদন্ড ও ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। আর বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলাটি বিজ্ঞ দ্রুত বিচার ট্রাইবুন্যাল-১ এ বিচারাধীন রয়েছে।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে একটি জনসভা চলাকালে প্রকাশ্য দিবালোকে গ্রেনেড হামলা হয়। ওই গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত ও প্রায় তিন শতাধিক গুরুতর আহত হয়। ওই ঘটনায় ঢাকার মতিঝিল থানায় একটি হত্যা ও হত্যাচেষ্টার সহযোগিতাসহ দুটি পৃথক মামলা হয়।
দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইবুন্যাল ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং মুফতি শফিকুর রহমানসহ আরও ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। গ্রেফতার শফিকুর রহমান ওই গ্রেনেড হামলার পরিকল্পনার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। একই ঘটনায় ঢাকার মতিঝিল থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দায়ের করা অপর মামলারও পলাতক আসামি ছিলেন তিনি।
এছাড়াও ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর থানার বৈদ্যের বাজারে গ্রেনেড হামলায় সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়াসহ পাঁচজন নিহত এবং কমপক্ষে শতাধিক লোক আহত হয়। ওই হত্যা মামলায় গ্রেফতার শফিকুর কিবরিয়া হত্যা মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামি। শফিকুরের বিরুদ্ধে ভৈরব থানায় মোট ছয়টি গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: