সিডনী রবিবার, ১২ই মে ২০২৪, ২৯শে বৈশাখ ১৪৩১


সেনাবাহিনীকে প্রযুক্তি সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলতে কাজ করছে সরকার : প্রধানমন্ত্রী


প্রকাশিত:
৩০ ডিসেম্বর ২০১৯ ২২:৪৯

আপডেট:
৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:৫৩

ছবি: বাসস থেকে নেয়া

প্রভাত ফেরী ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর সরকার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে একটি যুগোপযোগী, প্রযুক্তিগতভাবে সুসজ্জিত এবং আধুনিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সবসময় চাই সেনাবাহিনী হবে যুগোপযোগী, আধুনিক ও প্রযুক্তিগতভাবে সুসজ্জিত এবং এই লক্ষ্য অর্জনে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার দুপুরে ভাটিয়ারিস্থ বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে ৭৭তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি কোর্স সমাপনী উপলক্ষে আয়োজিত ‘রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ-২০১৯’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন। বাসস।

সেনাবাহিনীসহ সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়নে তাঁর সরকারের পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সরকার গঠন করার পর থেকেই নতুন নতুন পদাতিক ডিভিশন, ব্রিগেট, ইউনিটসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলি।’ সেই সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সেনাবাহিনীতে নারীর অংশগ্রহণ ও তাঁর সরকার নিশ্চিত করে,বলেন তিনি।

সশস্ত্র বাহিনী এবং সেনাবাহিনীকে স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বের প্রতীক আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সশস্ত্র বাহিনীকে যুগোপযোগী এবং আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করতে চাই।’
পাশাপাশি নবীন সেনা সদস্যদের শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং চেইন অব কমান্ড মেনে চলারও আহ্বান জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন এবং অভিবাদন গ্রহণ করেন। পরে তিনি কৃতী ক্যাডেটদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ২৩৪ জন বাংলাদেশি, ২৯ জন সৌদি, ১ জন ফিলিস্তিনি, ১ জন শ্রীলঙ্কানসহ মোট ২৬৫ জন ক্যাডেট কমিশন লাভ করেন।

ব্যাটালিয়ন সিনিয়র আন্ডার অফিসার সাবির নেওয়াজ শাওন ৭৭তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি কোর্সে সেরা চৌকস ক্যাডেট বিবেচিত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর নিকট থেকে গৌরবজনক ‘সোর্ড অব অনার লাভ করেন। এ ছাড়া কোম্পানি সিনিয়র আন্ডার অফিসার মো. বরকত হোসেন সামরিক বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্বের জন্য ‘সেনাবাহিনী প্রধান স্বর্ণপদক’ অর্জন করেন।

পরে ক্যাডেটগণ আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করেন ও প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে পিতা-মাতা ও অভিভাবকগণ নবীন অফিসারদের র‌্যাঙ্কব্যাজ পরিয়ে দেন এবং ক্যাডেটদের সঙ্গে ফটোসেশনে অংশগ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে প্রধানমন্ত্রী বিএমএ প্যারেড গ্রাউন্ডে এসে পৌঁছালে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ তাঁকে অভ্যর্থনা জানান।

প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার অবদান স্মরণ করে বলেন, একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশে সামরিক বাহিনীর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম ও অনস্বীকার্য। এ কারণে একটি শক্তিশালী, প্রশিক্ষিত এবং দক্ষ সেনাবাহিনী গড়ে তোলার লক্ষ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের মিলিটারি একাডেমির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও উদ্বোধন করেন।

তিনি ১৯৭৪ সালে কুমিল্লায় মিলিটারি একাডেমি প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতার পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সাময়িকভাবে কুমিল্লায় এই মিলিটারি একাডেমির উদ্বোধন করা হয়। যেটা ছিল একটা যুগান্তকারী পদক্ষেপ। যুদ্ধ বিধ্বস্ত একটি স্বাধীন দেশে সীমিত সম্পদ সত্ত্বেও এই যাত্রা শুরু করা একটি ঐতিহাসিক ঘটনা।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আমরা আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিক এবং যুগোপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য ফোর্সেস গোল ২০৩০ প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।

জাতির পিতার মিলিটারি একাডেমি উদ্বোধনের দিন প্রদত্ত বক্তৃতার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বলেছিলেন এই মিলিটারি একাডেমি একদিন মানসম্পন্ন হবে এবং বিশ্ব তাকিয়ে দেখবে।’
তিনি বলেন, আজকে সত্যিই সারাবিশ্বের মানুষ আমাদের মিলিটারি একাডেমির দিকে তাকিয়ে থাকে, প্রশংসা করে এবং অনেক দেশই এখানে প্রশিক্ষণ গ্রহণে আসে।

প্রধানমন্ত্রী বিশ্বশান্তি স্থাপনে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের দক্ষ অংশগ্রহণের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, ‘যেখানেই আমাদের সশস্ত্র বাহিনী যাচ্ছে সে সকল দেশই আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর প্রশংসা করে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে আমাদের সেনাবাহিনীকে কাজ করতে হয়। কাজেই, আমরা সবসময় চাই, আমাদের সেনাবাহিনী সবসময় আধুনিক জ্ঞানসম্পন্ন হবে, সুপ্রশিক্ষিত হবে।’

প্রধানমন্ত্রী নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, নতুন প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে দীর্ঘ প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর আজকে নতুন কর্মস্থলে আপনারা পদার্পণ করবেন। জাতির পিতা যে নির্দেশ দিয়েছেন, যে শপথ আপনারা গ্রহণ করেছেন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মান্য করা। সেটা যেমন আপনাদের করতে হবে সেই সঙ্গে সঙ্গে জাতির পিতা আরও বলেছিলেন আপনাদের অধীনস্থ যারা থাকবেন, তাদের দিকেও আপনাদের বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে এবং যত্নবান হতে হবে।

শেখ হাসিনা এ সময় মিলিটারি একাডেমিতে নির্মিত বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্সের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘চার বছর মেয়াদি অনার্স এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রিও চালু করা হয়েছে। গ্রাজুয়েটদের কমিশন লাভের সময়কাল আমরা বৃদ্ধি করে দিয়েছি, যাতে এটা আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হয়।


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top