সিডনী বৃহঃস্পতিবার, ১৬ই মে ২০২৪, ২রা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা চাকরিকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেন : রাষ্ট্রপতি


প্রকাশিত:
১৩ জানুয়ারী ২০২০ ০০:৩৯

আপডেট:
১৬ মে ২০২৪ ১৪:০৮

ছবি: সংগৃহীত

প্রভাত ফেরী ডেস্ক: রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, এক শ্রেণির শিক্ষক রয়েছেন যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেন। শনিবার রাজধানীর ধূপখোলা মাঠে অনুষ্ঠিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রথম সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় তিনি আরও বলেন, শিক্ষকরা সান্ধ্যকালীন কোর্স ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নিয়ে সপ্তাহব্যাপী ব্যস্ত সময় পার করেন।

এ সমস্ত কাজের ব্যাপারে তারা খুবই আন্তরিক। যত অনীহা শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত ক্লাস নেওয়ার ক্ষেত্রে। তবে এ শিক্ষকগণ সিলেবাস শেষ করার ক্ষেত্রে খুবই সিরিয়াস। তাই তারা একসঙ্গে তিন থেকে চার ঘণ্টা ক্লাস নিয়ে থাকেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অনেক সময় ছুটির দিনে ছাত্রছাত্রীদের ডেকে এনে কয়েক ঘণ্টা ক্লাস নেন। শিক্ষার্থীরা কতটুকু বুঝল বা মাথায় নিতে পারল সে ব্যাপারে তাদের কোনো দায়দায়িত্ব নেই। সেমিস্টার ও সিলেবাস শেষ করেছেন এ সাফল্যে তারা গর্ববোধ করেন। এ বিষয়টি কঠোরভাবে দেখতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের উদ্দেশে করে রাষ্ট্রপতি বলেন, আপনারা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল চালিকা শক্তি। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনার জন্য রয়েছে একটি নিজস্ব আইন। তাই আপনারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে দায়িত্ব পালন করবেন। উপাচার্যগণ হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নির্বাহী। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আপনাদের সততা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে। আর আপনারা নিজেরাই যদি অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থা কী হবে? তাই এ ব্যাপারে নিজেকে সতর্ক থাকতে হবে অন্যদেরও সতর্ক করতে হবে।

এ সময় তিনি শিক্ষকদের উদ্দেশে বলেন, শিক্ষকতা অত্যন্ত মর্যাদাশীল পেশা। আপনারা যারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন তারা মেধাবী ও বিশেষ গুণে গুণান্বিত। তাই আপনারা চাইলে অন্য যেকোনো লোভনীয় চাকরি বা পদ পদবি জোগাড় করতে পারতেন। কিন্তু তা না করে শিক্ষকতা পেশা হিসেবে নিয়েছেন। তাই কোন ধরনের লোভ-লালসা ও মোহের প্রতি আকৃষ্ট না হয়ে পেশার প্রতি মর্যাদাশীল থাকবেন।

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ আরও বলেন, তিনি জীবনে অনেক পরীক্ষায় ফেল করেছেন, তবে কখনও পাস করার জন্য নকলের মতো অনৈতিক পথ অবলম্বন করেননি। এমনকি পাশের কাউকে জিজ্ঞেসও করেননি। এটা তার জীবনের অহঙ্কার এবং এটা নিয়ে তিনি গর্ববোধ করেন।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, আমাদের শুধু একাডেমিক শিক্ষার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না। আমাদের জীবনব্যাপী শিক্ষাপ্রচলন শিখতে হবে। যখন যে বিষয় আসবে সেই বিষয়ের জ্ঞান অর্জন করতে হবে। গ্রাজুয়েটদের উদ্দেশে তিনি বলেন সন্ত্রাস, মাদক, জঙ্গিবাদ থেকে আমাদের বিরত থাকতে হবে। এবং অপরকে বিরত রাখতে হবে। সততা, মানবিকতা, পরমতসহিষ্ণুতা ও দেশপ্রেম ধরে রাখতে হবে।

সমাবর্তন বক্তা অধ্যাপক ইমেরিটাস ড. অরুণ কুমার বসাক বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে একই সঙ্গে সমস্যা ও সম্ভাবনার দেশ। সমাজ ও রাষ্ট্রের সামগ্রিক কল্যাণ নিহিত থাকে সৃষ্টির ধারাবাহিকতা রক্ষাকারী গর্ভধারিণী মা, জনগণ-নির্দেশক দেশমাতৃকা এবং মানুষের আবেগ ধারণকারী মাতৃভাষার মর্যাদার মাধ্যমে। বাংলাদেশের সম্ভাবনাকে ফলপ্রসূ করতে আমি বিনীত নিবেদন রাখছি।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় সবর্দা সদয় নিদের্শনা ও সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের জন্য রাষ্ট্রপতির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে উপচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, ১৫ বছর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জন অগ্রগতি মূল্যায়নের যথেষ্ট সময় নয়। তারপরেও আমাদের শিক্ষার্থীরা ইতোমধ্যে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভালো অবস্থানে ঠাঁই পাচ্ছে। দেশের প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষায় এ বিশ্ববিদ্যালয় অনেক এগিয়ে দূর এগিয়ে গেছে। এরপর ধন্যবাদ বক্তব্য প্রদান করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দীন আহমদ।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top