সিডনী মঙ্গলবার, ২১শে মে ২০২৪, ৬ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট বিতরণ শুরু বুধবার, প্রথমে পাবেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী


প্রকাশিত:
২০ জানুয়ারী ২০২০ ২১:৫৮

আপডেট:
২১ মে ২০২৪ ০১:০৯

ফাইল ছবি

প্রভাত ফেরী ডেস্ক: অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট বা ই-পাসপোর্ট বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন হতে যাচ্ছে আগামী ২২ জানুয়ারি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল রোববার সচিবালয়ে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়ে বলেছেন, চলতি বছরেই দেশের সবখানেই ই-পাসপোর্ট প্রদানের ব্যবস্থা চালু হলেও আপাতত শুধু ঢাকার আগারগাঁও, উত্তরা ও যাত্রাবাড়ী পাসপোর্ট কার্যালয় থেকে এটি দেওয়া হবে। বুধবার সর্বপ্রথম ই-পাসপোর্ট হাতে পাবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ই-পাসপোর্ট বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রথমে উত্তরা, আগারগাঁও ও যাত্রাবাড়ী থেকে ই-পাসপোর্ট দেওয়া হবে এবং ২০২০ সালের মধ্যেই সারা দেশে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম চালুর উদ্যোগ রয়েছে সরকারের। এ ছাড়া বিদেশে অবস্থানরতরাও পর্যায়ক্রমে ই-পাসপোর্ট পাবেন। পাশাপাশি এমআরপি পাসপোর্ট কার্যকর থাকবে বলে জানান আসাদুজ্জামান খান কামাল।

তিনি বলেন, এই ই-পাসপোর্ট বহির্বিশে্ব বাংলাদেশি পাসপোর্টের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি করবে এবং পাসপোর্টের নিরাপত্তা অধিকতর নিশ্চিতকরণসহ ই-পাসপোর্টের মাধ্যমে বিদেশ ভ্রমণ ও ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সহজ হবে। তিনি জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের আওতাধীন ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় জার্মান কোম্পানি ভেরিডোস জিএমবিএইচ কর্তৃক ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। তিনি বলেন, ই-পাসপোর্টের চিপে পাসপোর্টধারীর বায়োগ্রাফিক ও বায়োমেট্রিক তথ্যাদি সিল্ড অবস্থায় সুরক্ষিত থাকবে। ডিজিটাল সিগনেচার প্রযুক্তির সাহায্যে ই-গেটের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ৩০ সেকেন্ডে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে পাসপোর্টধারীর প্রকৃত তথ্য ও ফেসিয়াল রিকগনিশন যাচাই করা যাবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ৪৮ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ৩ হাজার ৫০০ টাকা, জরুরি ফি ৫ হাজার ৫০০ টাকা ও অতীব জরুরি ফি ৭ হাজার ৫০০ টাকা এবং ১০ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ৫ হাজার টাকা, জরুরি ফি ৭ হাজার টাকা ও অতীব জরুরি ফি ৯ হাজার টাকা। নতুন পাসপোর্টের ক্ষেত্রে অতীব জরুরিতে তিন দিনে, জরুরিতে সাত দিনে ও সাধারণ পাসপোর্ট আবেদনের ক্ষেত্রে ২১ দিনে পাসপোর্ট পাওয়া যাবে। তবে পুরনো অথবা মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্ট রি-ইস্যু করার ক্ষেত্রে অতীব জরুরি পাসপোর্ট দুই দিনে, জরুরি পাসপোর্ট তিন দিনে ও সাধারণ পাসপোর্ট সাত দিনের মধ্যে দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়।

এ ছাড়া বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে সাধারণ আবেদনকারী, শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা আলাদা ই-পাসপোর্ট ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে সাধারণ আবেদনকারীদের জন্য ৪৮ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ১০০ মার্কিন ডলার ও জরুরি ফি ১৫০ মার্কিন ডলার। ১০ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ১২৫ মার্কিন ডলার ও জরুরি ফি ১৭৫ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।

ই-পাসপোর্টের একটি নমুনা : ই-পাসপোর্টের আবেদনপত্র জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বা জন্মনিবন্ধন সনদ (বিআরসি) অনুযায়ী পূরণ করতে হবে। অপ্রাপ্ত বয়স্ক (১৮ বছরের কম) আবেদনকারী, যার জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নেই, তার পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নম্বর অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে।

রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট প্রতারণা নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের ডিজিটালাইজড আইডি কার্ড দেওয়া হয়েছে। সেটি নিবন্ধন রয়েছে। কাজেই তথ্য গোপন করে রোহিঙ্গাদের ই-পাসপোর্ট গ্রহণের সুযোগ নেই। তারপরও রোহিঙ্গারা যদি বিভিন্ন ধরনের ফাঁকফোকরের মাধ্যমে ই-পাসপোর্ট করতে যায়, তাহলে বিভিন্ন প্রশ্নে তারা ধরা পড়বে। তিনি বলেন, ই-পাসপোর্টের জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে, তবে বিভিন্ন ধরনের নাজেহাল এড়াতে এটি অনলাইনে করার চেষ্টা করছি, যেন অতীতের তুলনায় সহজ হয়।

সচিবালয়ে ওই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ। সংশ্লিষ্টরা জানান, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশেই প্রথম ই-পাসপোর্ট চালু হচ্ছে। এটি চালু হলে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ইমিগ্রেশনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না ই-পাসপোর্টধারীদের। মাত্র ৩০ সেকেন্ড সময়ের মধ্যেই দেশ-বিদেশের ই-গেট দিয়ে নির্বিঘ্নে বেরিয়ে যেতে পারবেন ই-পাসপোর্টধারীরা।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top