ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন: জমজমাট প্রচারণায় মুখর রাজধানী


প্রকাশিত:
২২ জানুয়ারী ২০২০ ২৩:২২

আপডেট:
২২ জানুয়ারী ২০২০ ২৩:২৮

বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের প্রচারণা

প্রভাত ফেরী ডেস্ক: প্রচারণার ১২ দিনের মাথায় হামলার শিকার হলেন ঢাকা উত্তরের বিএনপি সমর্থিত মেয়রপ্রার্থী তাবিথ আউয়াল। কিন্তু কোনো হামলা-মামলায় থেমে নেই প্রার্থীদের প্রচারণা। বরং দিন দিন প্রার্থীরা রঙ বাড়াচ্ছেন প্রচারকার্যে। রকমারি গান, পোস্টার ও ফেস্টুনে ভোটের নগরী ঢাকায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা।

মঙ্গলবার প্রচারণায় নেমে উত্তর সিটি করপোরেশনের আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়রপ্রার্থী আতিকুল ইসলাম ঘোষণা দিয়েছেন, বাড্ডার বেরাইদ এলাকায় হাতিরঝিলের চাইতেও সুন্দর খাল তৈরি করা হবে নির্বাচিত হলে।

তবে নিজের ওপর হামলার ঘটনায় দুঃখিত তাবিথ বলেছেন, কোনো হামলা-মামলাতেই প্রচারণা প্রতিহত করা যাবে না তাদের। অন্যদিকে দক্ষিণের বর্তমান মেয়র সাঈদ খোকনের বিষয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়রপ্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, তিনি দুঃখ পেলেও তার পূর্ণ সমর্থন পাচ্ছি আমরা।

আর ইশরাক বলেছেন, সরকারের কোনো ষড়যন্ত্রই তাদের বিজয় ঠেকাতে পারবে না। মঙ্গলবার রাজধানীর বাড্ডার বেরাইদ মুসলিম হাইস্কুলে নির্বাচনি সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আতিকুল ইসলাম। এ সময় তিনি বলেন, হামলার বিষয়ে এখনও শুনিনি। তারা নিজেরা সংঘর্ষ বাধাতে পারেন। আমরা সবসময় উন্নয়নের কথা বলে আসছি। এখনও বলবো আমরা চাই উন্নয়ন।

এ সময় তিনি বেরাইদকে উন্নত করার কথা জানিয়ে বলেন, বেরাইদের কোনো রাস্তা কাঁচা থাকবে না। গুলশান-বারিধারা-বনানীর রাস্তার চেয়েও সুন্দর রাস্তা করবো এই বেরাইদে। এখানকার খালগুলো উদ্ধার করে হাতিরঝিলের চেয়েও সুন্দর খাল করা হবে। এখানকার এলাকাবাসীকে হাতিরঝিলে যেতে হবে না। তিনি জানান, নতুন এলাকাগুলো নিয়ে ৪ হাজার ২০০ কোটি টাকার প্রকল্প একনেকে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এসএ মান্নান, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান ও মহানগর উত্তর যুবলীগের সাবিনা আক্তারসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা।

একটি মহল নানাভাবে তাদের নির্বাচনি প্রচারণায় বাধা দিয়ে হামলা করছে বলে অভিযোগ করেন এই সিটির বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। নির্বাচনি প্রচারণায় হামলার ঘটনাকে ‘খুবই দুঃখজনক’ বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, তারা আমাদের নানাভাবে প্রতিহত করার চেষ্টা করছে। তবে যত চেষ্টাই করুক আমরা নির্বাচন থেকে পিছু হটবো না। দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থক এবং এলাকাবাসীকে আহ্বান জানাচ্ছি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখুন। আমরা গণসংযোগ চালিয়ে যাব।

এদিন রাজধানীর গাবতলীতে নির্বাচনি প্রচারণার সময় তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় আরও তার সঙ্গে আরও ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, সহদফতর সম্পাদক বেলাল আহমেদসহ অন্যরা। এর আগে রাজধানীর গাবতলীর আনন্দনগরের তেলের মিল এলাকায় প্রচারণা চালানোর সময় হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দলের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানান তাবিথ।

আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়রপ্রার্থী ফজলে নূর তাপসের প্রচারণা

একই দিন ঢাকা দক্ষিণের আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়রপ্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, আচরণবিধির কারণেই মেয়র সাঈদ খোকন নির্বাচনি প্রচারণায় নামছেন না। যদিও এবার মনোনয়ন না পাওয়ায় তিনি মনে কষ্ট পেয়েছেন। তবে কষ্ট পেলেও সাঈদ খোকন আমার পক্ষে আছেন। তিনি আমাকে সমর্থন দিয়েছেন।

রাজধানীর রায় সাহেব বাজার ও ধোলাইখাল এলাকায় গণসংযোগ করেন তিনি। এ সময় তিনি বলেন, বিএনপি ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেয়নি। নির্বাচনের নামে তারা আন্দোলনের কর্মসূচি বেগবান করতে চাচ্ছে। তাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে রক্ষা করার জন্য আন্দোলন করছে। কিন্তু আমরা উন্নত ঢাকা গড়ার লক্ষ্য নিয়ে নির্বাচন করছি।

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট করা নিয়ে অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তাপস বলেন, ভোট দেওয়ার একটা আধুনিক পদ্ধতি ইভিএম। ঢাকাবাসী এ আধুনিক প্রযুক্তি সাদরে গ্রহণ করেছে। কারও মধ্যে এটা নিয়ে কোনো শঙ্কা দেখছি না। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, সানজিদা খানম ও পারভীন জামানসহ দলের অন্য নেতারা।

অন্যদিকে সরকারের কোনো ষড়যন্ত্রই বিজয় ঠেকাতে পারবে না বলে এদিন গণসংযোগে গিয়ে মন্তব্য করেছেন দক্ষিণের বিএনপি সমর্থিত মেয়রপ্রার্থী ইশরাক হোসেন। তার দাবি, তিনি যে এলাকাতেই যাচ্ছেন গণজোয়ার দেখছেন। ভোটবিহীন সরকারের অপশাসনের বিরুদ্ধে মানুষ জেগে উঠেছে। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার এলাকায় হাজী হোসাইন প্লাজার গণসংযোগ চালানোকালে ইশরাক বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনাই ছিল গণতন্ত্র ও বাক্-স্বাধীনতা। এ অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ৩০ লাখ মানুষ জীবন দিয়ে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিল। কিন্তু কোনো অপশক্তির কাছে আমাদের সেই চেতনাকে বিলীন হতে দিতে পারি না। আমরা এটা মানব না। এই দেশ আমাদের সবার। এটা কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক সালাউদ্দিন আহমেদসহ অন্য নেতারা।


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top