আজ বাড়ি ফিরবেন উহান ফেরত বাংলাদেশিরা


প্রকাশিত:
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ২১:০১

আপডেট:
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:০৪

ফাইল ছবি

প্রভাত ফেরী ডেস্ক: করোনা ভাইরাস এখন এক মহা আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ভাইরাসের প্রকোপ দিনে দিনে বাড়ছেই। এর ফলে কেবল চীনেই নয়, দক্ষিণ এশিয়াসহ গোটা বিশ্বের অন্তত ৩০টি দেশে এর বিরূপ প্রভাব প্রড়েছে ব্যাপক হারে। এ দিক থেকে পিছিয়ে নেই বাংলাদেশও। বাণিজ্যিক ও পর্যটনসহ নানা ক্ষেত্রেই করোনা ভাইরাস আতঙ্ক জেঁকে বসেছে।

জানা গেছে, চীনের উহান ফেরত বাংলাদেশের নাগরিকদের কোয়ারান্টাইনের ১৪ দিন শেষ হচ্ছে আজ। ইতোমধ্যে তাদের কারো শরীরেই নভেল করোনাভাইরাস পাওয়া না গেলেও বাড়ি ফেরার আগে আজ সর্বশেষ স্ক্রিনিং হবে তাদের। কোয়ারান্টাইন পরবর্তী সময়েও কারো কোনো শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইডিসিআর) যোগাযোগ রাখার পরামর্শ দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক প্রফেসর ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। এদিকে দেশের বিভিন্ন স্থানে রোগটি নিয়ে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে ৫ জনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

চীনের বাইরে সর্বোচ্চ করোনা আক্রান্ত দেশ সিঙ্গাপুরে ৪ বাংলাদেশিকে হাসপাতালে রাখা ছাড়াও কোয়ারান্টাইনে রাখা হয়েছে আরও ৬ জনকে। শুক্রবার আইইডিসিআর ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি দল আশকোনা অস্থায়ী কোয়ারান্টাইন কেন্দ্র (হাজি ক্যাম্প) পরিদর্শন শেষে এক বৈঠকের পর আইইডিসিআরের পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা সাংবাদিকদের বলেন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে আইসোলেশন ইউনিটে রাখা ১১ জন এবং আশকোনা অস্থায়ী কোয়ারান্টাইন কেন্দ্রে উহান ফেরত ৩০১ জন বাংলাদেশের নাগরিক সুস্থ আছে। তিনি বলেন, সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে পাঠানো সর্বশেষ খবরে আমরা জানতে পেরেছি যে, মোট ৪ জন বাংলাদেশের নাগরিক কোভিড-১৯ সংক্রমিত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের মধ্যে ১ জন্য আইসিইউতে আছেন। তা ছাড়া কোয়ারান্টাইনে আছেন আরও ৬ জন। এ সময় তিনি গুজব প্রতিরোধে করোনীয় হিসেবে বলেন, দেশবাসীর উদ্দেশে বলছি এসব গুজবে কান না দিয়ে সার্বিক সহযোগিতার হাত বাড়ান।

তিনি জানান, আইইডিসিআর এ ধরে মোট ৬২টি নমুনা পরীক্ষা করেছে এবং এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে কোভিড-১৯ (নভেল করোনা) সংক্রমণের কোনো উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। আইইডিসিআরে আসা এ সংক্রান্ত মোট সেবাগ্রহীতার সংখ্যা ৭৩ জন। করোনা প্রতিরোধে সতর্কতা হিসেবে তিনি বলেন, জনগণকে অবশ্যই নিয়মিত সাবান ও পানি দিয়ে দুই হাত ধুইতে হবে (অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে), অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করা যাবে না, ইতোমধ্যে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে, কাশি দেওয়ার সময় শিষ্টাচার মেনে চলতে হবে (হাঁচি/কাশির সময় বাহু/টিস্যু/কাপড় দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখতে হবে), অসুস্থ পশু/পাখির সংস্পর্শ পরিহার করতে হবে, মাছ-মাংস, ডিম ভালোভাবে রান্না করতে হবে, অসুস্থ হলে ঘরে থাকুন, বাইরে যাওয়া অত্যাবশক হলে নাক-মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক ব্যবহার করুন। জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত চীন ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি অত্যাবশ্যকীয় ভ্রমণেও সাবধানতা অবলম্বন করার পরামর্শও দেন তিনি।

এদিকে দেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও নিউজ পোর্টালে এমন গুজব ছড়ানোর অভিযোগে ৫ জনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর রাজধানীর আরামবাগ, মগবাজার ও রমনা থেকে পুলিশ তাদের হেফাজতে নেয়। তবে কাউন্সিলিং শেষে শুক্রবার তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপকমশিনার নাজমুল ইসলাম সময়ের আলোকে বলেন, যারা করোনাভাইরাস নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে জনমনে আতঙ্ক তৈরি করছেন সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগ তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ব্যবস্থা নেবে।


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top