একুশের প্রথম প্রহরে শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর


প্রকাশিত:
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১১:৫৬

আপডেট:
১২ মার্চ ২০২৫ ২১:৫৩

ফাইল ছবি

প্রভাত ফেরী: একুশে ফেব্রুয়ারি, মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষাশহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে প্রথমে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। তারপরই পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এ সময় ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/ আমি কি ভুলিতে পারি’ গানের সুর বাজতে থাকে। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থেকে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় প্রধান হিসেবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পর জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ভাষা শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পন করেন। এরপর একেএকে ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়া ও সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান জাতীয় সংসদের ডেপুটি হুইপ আতিউর রহমান আতিক ও ঢাকা দক্ষিনের মেয়র সাঈদ হোসেন খোকন। এরপর তিনবাহিনী প্রধান ও বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পন করেন মহাপুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি) জাবেদ পাটোয়ারি। পুষ্পস্তবক অর্পন করেন র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ। ভাষা শহীদদের প্রতি আরও শ্রদ্ধা জানান যুদ্ধহত মুক্তিযোদ্ধারা, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবিবুল্লাহ সিরাজী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেনের নেতৃত্বে বিদেশী কূটনীতিকবৃন্দ।

একুশের প্রথম প্রহরে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় চার স্তরের কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় কয়েক হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। ঢাকা শহরের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য কয়েক হাজার পুলিশ সদস্য নিয়োজিত আছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টা থেকে বেশ কিছু সড়কে ডাইভারশন দেওয়া হয়। চানখাঁরপুল, বকশীবাজার, নীলক্ষেত, পলাশী, শাহবাগ, হাইকোর্ট ক্রসিং, রোমানা চত্বর এলাকা দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকার ছাড়া কোনো গাড়ি ঢুকতে পারবে না। এসব এলাকায় তল্লাশিচৌকি বসানো হয়েছে। শহীদ মিনারে যাওয়ার প্রতিটি প্রবেশফটকে পর্যাপ্ত আর্চওয়ে বসানো হয়েছে। হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে দর্শনার্থীদের দেহ তল্লাশি ও হ্যান্ডব্যাগ পরীক্ষা করা হচ্ছে। ছিল ডগ স্কোয়াডও।

বরাবরের মতোই এবারও মাতৃভাষা দিবস উদযাপনের প্রস্তুতি শুরু হয় বৃহস্পতিবার বিকাল থেকেই। দোয়েল চত্বর, চানখাঁরপুল, টিএসসি, পলাশী মোড় থেকে শহীদ মিনারগামী পথগুলো যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এসব পথে ঐতিহ্যবাহী আল্পনা আঁকতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন নবীন আঁকিয়েরা। সব পথ আজ সকাল থেকে এসে মিলে যাবে এক অভিন্ন গন্তব্যে, শহীদ মিনারে। হাতে হাতে বসন্তে ফোটা ফুলের স্তবক, কণ্ঠে নিয়ে চির অমøান সেই গানÑ ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/ আমি কি ভুলিতে পারি...’ ধীর পায়ে এগিয়ে যাবে আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা। ভাষা শহীদদের প্রতি নিবেদিত শ্রদ্ধার ফুলে ফুলে ঢেকে যাবে শহীদ মিনারের বেদি।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top