সিডনী শনিবার, ২০শে এপ্রিল ২০২৪, ৭ই বৈশাখ ১৪৩১


গুচ্ছ কবিতা : মাহবুবুল আলম


প্রকাশিত:
২৯ জুন ২০২২ ১৮:৪৩

আপডেট:
২৯ জুন ২০২২ ১৮:৪৫

 

১. নশ্বর জীবন

যে-দিন এ'নশ্বর দেহ, ঘুমিয়ে যাবে অনন্তঘুমে
সে-দিন, হয়তো কেহ করবে আহাজারি ;
কেউ কেউ করবে বিলাপ, অসীম অনন্তের
কাছে করতে সমর্পণ করতে কেউ
করবে বিদায়ের দ্রুত আয়োজন।

অসীম যাত্রাপথে সমর্পিত হলে-
পথ দাঁড়িয়ে থাকবে পথে, সময় চলবে
ঘড়ির কাঁটায়, পৃথিবী আপন কক্ষপথে
করবে বিচরণ, আকাশগঙ্গায় বসবে অযুত
নিযুত নক্ষত্রের মেলা, ওঠবে চন্দ্র-সূর্য
সমুদ্রের জোয়ারভাটা, হবে নিয়ম করে।

তখন শুধু থাকবে না তুমি, তোমার যত স্মৃতি,
ঝাপসা হতে হতে, একদিন ঢেকে যাবে
ধূলির আস্তরণে, সবাই ভুলে যাবে তুমিও একদা,
জন্মসূত্রে একজনমের মালিক ছিলে, তোমার
ত্যাগ, অবদান অর্জিত বিপুল সম্পদে-
ভোগবিলাসেই মত্ত হবে উত্তরসূরীরা।

আর অমরাত্মা, শত শত হোগবা অপেক্ষায়
থাকবে চূড়ান্ত বিচারের, এই অপেক্ষার
সীমা পরিসীমা জানা নেই কারো, মহাকাল
জানে না কোথায় তার শুরু, কোথায় তার শেষ।

২. কেন এত অবুঝ হয়ে যাই

হে প্রাণেশ্বরী! হে জলসুন্দরী
জলধি আমার প্রিয়তমা,
কী অপরূপ তোমার ছবি;
কী যে অপূর্ব ঢেউয়ের সিঁড়ি
ভেঙে ভেঙে মিশে যায উর্মীমালায়
যুথবদ্ধভাবে হেঁটে যায় তটের কিনার
ধরে সাথে ওড়ে সফেদ গাঙচিল
আর দমকা এলোমলো হাওয়ায়
বেয়াড়া চুল উড়িয়ে নেয় বাতাস।

ধ্যান ভেঙে গেলে দেখি, যতসব জলকেলি
প্রাণের উচ্ছ্বাস মিশে যায় বালুকাবেলায়;
বেলাভূমির অদৃশ্য আয়নায় দেখা যায়
চকচকে জলের উঠান, ঠিক যেন মোলায়েম
প্রেয়সির পিচ্ছিল উদোম পিঠে অন্তর্বাসের
বোতাম খোলার মতো আনন্দ হিল্লোলে
নেচে ওঠে মন কেমন এক গোপনসুখে।

তাই আমি সব বাধা ফেলেফোলে চলে
আসি তোমার বুকের উষ্ণ জলে ডুব দিতে,
তুমিও করো না বিমূখ খুলে দাও
দক্ষিণা দূয়ার নামিয়ে দাও জলেরসিঁড়ি
আর আমি অভিসারি অবাধ সাঁতার কেটে
খুঁজে পাই যেন সর্বোচ্চ স্বর্গসুখ।

তাই যে যত মন্দ বলুক, বলুক দ্বিচারিণী
তাতে কি বা আসে যায় আমার, আমিতো
নিমগ্ন তোমার রূপসাগরে জলধিতে
সুখ ডুব শেষে ভাসিয়ে দিয়ে ভেলা
মেতে ওঠি এক নিষিদ্ধ উল্লাসে।

 

এই লেখকের অন্যান্য লেখা



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top