ফ্লোর ছাড়ার নোটিশ, বন্ধ হয়ে গেল বসুন্ধরার স্টার সিনেপ্লেক্স
প্রকাশিত:
১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২৩:২৮
আপডেট:
১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২৩:৪০

প্রভাত ফেরী: করোনাভাইরাস নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে দেশের আর সব সিনেমা হলের মতো আপাতত বন্ধ রয়েছে মাল্টিপ্লেক্স সিনেমা হল স্টার সিনেপ্লেক্স। গত ২০ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত স্টার সিনেপ্লেক্সের সবগুলো শাখায় সিনেমা প্রদর্শন বন্ধ ছিলো। কখন খুলবে হল ও সিনেপ্লেক্স এ নিয়ে যখন চারদিকে কথাবার্তা তখন স্টার সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে তাদের বসুন্ধরা শাখা বন্ধ হয় যাচ্ছে। অর্থ্যাৎ বসুন্ধরা সিটি শপিংমলে আর কখনোই খুলবে না স্টার সিনেপ্লেক্স। এখানে চিরতরে বন্ধ হবে ঢাকাবাসীদের বিনোদনের জনপ্রিয় এ মাধ্যমটি। স্টার সিনেপ্লেক্সের বিপণন ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মেসবাহ উদ্দীন আহমেদ আজ মঙ্গলবার দুপুরে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘বেদনাদায়ক হলেও ঘটনাটি সত্যি যে বসুন্ধরা সিটিতে আর স্টার সিনেপ্লেক্স থাকছে না। কারণ বসুন্ধরা সিটি শপিংমলের কর্তৃপক্ষ আমাদের নোটিশ দিয়েছে সিনেপ্লেক্স বন্ধ করার জন্য। তাদের নতুন পরিকল্পনা রয়েছে শপিংমল নিয়ে। বাড়িওয়ালা যদি নোটিশ দেন চলে যাওয়ার জন্য তাহলে তো ভাড়াটিয়ার আসলে কিছু করার থাকে না। তবে আমাদের অন্য সবগুলো শাখাই চালু থাকবে।’
তিনি বলেন, মার্কেট মালিকের পক্ষ থেকে ফ্লোর ছাড়ার নোটিশ পেয়েছি আমরা। অক্টোবর ২০২০ সাল পর্যন্ত চুক্তি ছিল আমাদের। এবার সেটি আর নবায়ন হচ্ছে না। সেক্ষেত্রে ফ্লোর মালিক যদি আমাদের ভাড়া না দেন, তাহলে তো আর কিছু করার থাকে না। আমরা ছাড়তে বাধ্য।
২০০৪ সাল থেকে স্টার সিনেপ্লেক্সের কার্যক্রম শুরু হয় বসুন্ধরা সিটি থেকে। এমনকি পরবর্তী সময়ে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে এই প্রতিষ্ঠানের আরও ৯টি হল স্থাপিত হলেও বসুন্ধরা সিটির মাল্টিপ্লেক্সটি সবচেয়ে জনপ্রিয় সিনেমাপ্রেমীদের কাছে।
মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ বললেন, ‘দেখুন এটা ঠিক বসুন্ধরা সিটি আমাদের অনেক আবেগের জায়গা। এখান থেকেই আমরা তিল তিল করে শুরু করেছি। এরপর আমরা আরও অনেক মাল্টিপ্লেক্স করেছি এই শহরে। তবে এটাই ছিল আমাদের সবার প্রাণকেন্দ্র। কিন্তু দিন শেষে আমরা তো ভাড়াটিয়া। মালিকপক্ষ যখন আমাদের নোটিশ দেয় ছাড়ার, তো সেটা তো মানতেই হবে। তবে আমরা বসুন্ধরা থেকে দর্শকদের যে ভালোবাসা পেয়েছি সেটা নিশ্চয়ই ধরে রাখবো অন্য হলগুলোর মাধ্যমে।’
তিনি আরো বলেন, বসুন্ধরা সিটি দিয়েই আমরা যাত্রা করেছিলাম। ১৮টি বছর কেটেছে এখানে। দেশ-বিদেশের অনেক বড় বড় তারকা, গুণী মানুষেরা এখানে পা রেখেছেন। চলচ্চিত্র সাংবাদিকরা এই আঙিনাটি মুখরিত করে রাখতেন আড্ডায়। অনেক অনেক স্মৃতি আসলে। দেশের মানুষ সিনেপ্লেক্স বলতেই এই শপিংমলের স্টার সিনেপ্লেক্সকে বুঝতো। এমন একটি ভালোবাসার ঠিকানা বদলে ফেলা আমাদের জন্যও খুব কষ্টের এবং আবেগের। কিন্তু কিছু তো আসলে করার নেই।
সিনেপ্লেক্সের অন্য যে শাখাগুলো রয়েছে সেগুলোতে সবাইকে আমন্ত্রণ জানাই আমরা। সেখানেও আতিথেয়তা বা আন্তরিকতার অভাব থাকবে না।’
এই মুহূর্তে মহাখালীতে অবস্থিত এসকেএস (সেনাকল্যাণ সংস্থা) টাওয়ার, ধানমন্ডির সীমান্ত সম্ভার (রাইফেল স্কয়ার) শপিংমলে স্টার সিনেপ্লেক্স চালু রয়েছে। মিরপুরের সনি সিনেমা হল ভেঙে যে শপিংমল করা হচ্ছে সেখানেও একটি শাখা চালু করতে যাচ্ছে স্টার সিনেপ্লেক্স।
পাশাপাশি চট্টগ্রাম শহরে ষোলশহর ফিনলে স্কয়ার শপিংমলের সপ্তম তলায় ‘সিলভার স্ক্রিন’ নামেও একটি শাখা চালু আছে স্টার সিনেপ্লেক্সের। শিগগিরই দেশের আরও বেশ কিছু শহরে শাখা চালুর কথাও ভাবছে প্রতিষ্ঠানটি।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: