যার নাম শুনলে কেঁপে ওঠে বিশ্ববাসীর হৃদয় : শিবব্রত গুহ


প্রকাশিত:
১৫ জুলাই ২০২০ ২২:২৭

আপডেট:
১৪ মার্চ ২০২৫ ১৪:৫৭

 

এই পৃথিবীর বুকে এমন এমন কিছু মানুষ জন্মেছিলেন, যাদের নাম শুনলেই মনে লাগে ভয়।
তেমনই একজন মানুষের কথা আজ আপনাদের সামনে আমি তুলে ধরার চেষ্টা করবো। তার নাম
আপনাদের সকলেরই জানা। তিনি আর কেউ নন, তিনি হলেন আডলফ হিটলার।
জার্মান ভাষায় তার নাম হল আডলফ হিটলা। হিটলার নামটার মধ্যেই লুকিয়ে আছে এক চোরা আতঙ্ক। এই আতঙ্ক কিন্তু আজো রয়েছে বর্তমান। তিনি জন্মেছিলেন ১৮৮৯ সালের ২০ শে এপ্রিল। তার বাবার সাথে তার সম্পর্ক ভালো ছিল না। তাই, তিনি জীবনের অধিকাংশ সময় তার মায়ের নাম ব্যবহার করেছিলেন। তিনি তার বাবাকে মোটেই পছন্দ করতেন না। কিন্তু, তার মায়ের প্রতি তার শ্রদ্ধার কোন কমতি ছিল না। ১৯০৩ সালে তার বাবা মারা যায়।
হিটলারের লেখা বইয়ের নাম হল, " মাইন কাম্ফ "। তিনি বিয়ে করেছিলেন ইভা ব্রাউনকে। সালটা ছিল ১৯৪৫। তিনি ১৯৩৯ সালে, গারহার্ড ডোমাগ নামের একজন চিকিৎসা বিজ্ঞানীকে তাঁর প্রাপ্য নোবেল পুরস্কার গ্রহণে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন -

“একজন বড় মিথ্যাবাদী, একজন বড় জাদুকরও”
“অপছন্দের চেয়ে ঘৃণার স্থায়িত্ব বেশি”
“যে যুবক ভবিষ্যতকে জয় করে, সে হয় একা”

“যদি কোনো মিথ্যাকে তুমি বারবার এবং সাবলীলভাবে বলতে পার তবেই তা বিশ্বাসযোগ্য হবে”
“জার্মানি হবে পৃথিবীর সর্বশক্তিমান, নয়তো কিছুই নয়”
“শক্তি প্রতিরোধে নয়, আক্রমণেই প্রকাশিত হয়”

হিটলার সবসময় ছিলেন তার সংকল্পে দৃঢ়। তিনি কখনো তার সংকল্প থেকে চ্যুত হননি। তবে, হিটলার সম্বন্ধে, অন্য রকমের কথা বলেছেন পূর্ব মেদিনীপুরের নামী কবি ও সাহিত্যিক রুদ্রপ্রসাদ। তিনি বলেছেন, ‘স্বৈরাচারী’ - শব্দের সমার্থকই বোধহয় এই বিশেষ ব্যক্তির নাম, অন্তত জনমানসের মানসিকতা তেমনটাই বলে। কিন্তু সত্যিই কি তাই? " হিটলার" কে?
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অস্ট্রিয়- জার্মান এক সৈনিক, যে পরবর্তী সময়ে, নাৎসী বাহিনীর সর্বেসর্বা হয়ে মোহনীয় বক্তৃতায় সাধারণ মানুষকে জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ করে সমাজতন্ত্রী বৈষম্যের বিরোধিতা করেছিল, বিরোধী নির্মূল করে সমগ্রতাবাদী রাষ্ট্রকে সামরিক ও অর্থনৈতিক ভাবে, শক্তিশালী করে তুলেছিল। কিন্তু সময় মনে রেখেছে বর্বরতার ব্যর্থ ইতিহাস!
বর্তমানে সমাজে আবহমানকাল ধরে, চলে আসা নৈতিকতাহীন, স্বজনপোষক, স্বার্থসর্বস্ব রাজনীতির ব্যূহভেদ করতে এমন একজন দরকার, যার হাত ধরে গর্জে উঠবে বঞ্চনার প্রতিবাদ, ধ্বনিত হবে জাতীয়তাবাদী সাম্যের হুঙ্কার, শোষিত পাবে প্রাপ্য মর্যাদা, ন্যায়দন্ডে স্বীকৃতি পাবে মান। অপেক্ষা শুধু আর এক হিটলারের।
কিন্তু, হিটলার কুখ্যাত হয়ে রয়েছেন, ইহুদি গণহত্যা জন্য । যা সত্যিই মর্মান্তিক। এইজন্য, হিটলারকে অনেকেই পছন্দ করেন না। হিটলার খুবই ঘৃণা করতেন ইহুদীদের। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, হিটলার ইহুদী ধর্মাবলম্বী দের ওপর গণহত্যা চালিয়েছিলেন। হিটলারের বাহিনীকে বলা হতো, নাৎসি বাহিনী। এই নাৎসি
বাহিনী, হিটলারের নেতৃত্বে, ইহুদীদের গ্যাস চেম্বারে এনে নির্মমভাবে করেছিল হত্যা। হিটলারের গ্যাস চেম্বারের নাম শুনলে এখনো অনেকে আঁতকে ওঠেন।
আনুমানিক ৬০ লক্ষ ইহুদীকে হিটলারের নাৎসি বাহিনী করেছিল হত্যা। ইহুদী ছাড়াও এরা সোভিয়েত যুদ্ধ বন্দী, সাম্যবাদী, রোমানী ভাষাগোষ্ঠীর জনগণ, অন্যান্য স্লাভীয় ভাষাভাষী জনগণ, প্রতিবন্ধী, সমকামী পুরুষ ও ভিন্ন রাজনৈতিক ও মতাদর্শী মানুষদের ওপর, অমানবিক গণহত্যা পরিচালনা করেছিল।
হিটলারের নেতৃত্বে নাৎসি বাহিনীর হাতে সর্বমোট মারা যায় নব্বই লক্ষ থেকে এক কোটি দশ লক্ষের মতো মানুষ। অত্যাচার ও গণহত্যা এরা ঘটিয়েছিল নানা পর্যায়ে। আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি, যে, হিটলার প্রকৃতপক্ষে কোন মানুষ ছিলেন না। তিনি সারা বিশ্ববাসীর কাছে যে নৃশংসতার নিদর্শন তুলে ধরেছিলেন, তা কি কোন মানুষ করতে পারে? না, না, পারে না। কিন্তু, হিটলার পেরেছিল। তার কারণ, সে ছিল একটা অমানুষ।
তবে, হিটলার তার সাজাও পেয়েছিল, ১৯৪৫ সালে, ইভা ব্রাউনকে বিয়ে করার ২৪ ঘন্টা পার হবার আগেই, তিনি ফিউরার বাংকারে সস্ত্রীক করেছিলেন আত্মহত্যা। যার নাম শুনলে কেঁপে ওঠে হৃদয় বিশ্ববাসীর, সেই হিটলারের শেষ পরিণতি ছিল করুণতায় ভরা।
(তথ্য সংগৃহীত)

শিবব্রত গুহ
কলকাতা

 

এই লেখকের অন্যান্য লেখা



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top