‘বিদেশি গুপ্তচরবৃত্তি’ আইন নিয়ে সুইডেনে বিতর্ক
প্রকাশিত:
২০ নভেম্বর ২০২২ ০২:২৪
আপডেট:
১৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৭:৪২

সুইডেনের জাতীয় পার্লামেন্ট (রিক্সড্যাগ) বিদেশি গুপ্তচরবৃত্তি সংক্রান্ত আইনে এক বিতর্কিত সংশোধনী এনেছে। সমালোচকরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, এই সংশোধনী বাক ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে মারাত্মক হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে।
বিদ্যমান আইনের পরিবর্তনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সহযোগিতামূলক কর্মকাণ্ডের গোপন তথ্য প্রকাশ করাসহ বিদেশি গুপ্তচরবৃত্তি মারাত্মক ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা তথা মত প্রকাশের স্বাধীনতা আইনেও একই বিষয়কে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।
অন্য রাষ্ট্র বা আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে সুইডেনের সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে- আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক এমন গোপন তথ্য কোনো অনুমোদন ছাড়া প্রকাশ করা গুরুতর ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে। নতুন আইনে বলা হয়েছে, গুপ্তচরবৃত্তি শুধু রাষ্ট্রের নিরাপত্তার ক্ষতি করে তা নয়, তা অন্যান্য রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ককেও নষ্ট করে।
রিক্সড্যাগে ২৭০-৩৭ ভোটে আইনের সংশোধনীটি গৃহীত হয়। এর বিপক্ষে ভোট দিয়েছে শুধু বাম দল ও পরিবেশবাদী দল।
সুইডেনের বামপন্থী দলের জেসিকা ওয়েটারলিং পার্লামেন্টে আলোচনায় তীব্র সমালোচনা করে বলেন, এই সংশোধনীর মাধ্যমে মূলত প্যান্ডোরার বাক্স খুলে দেওয়া হয়েছে।
সমালোচকরা দাবি করেছেন, সংশোধিত নতুন আইনটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার মারাত্মক লঙ্ঘন। সুইডিশ টেলিভিশন এবং সুইডিশ রেডিওসহ বেশ কয়েকটি মিডিয়া প্রতিষ্ঠান সতর্ক করে দিয়ে বলেছে যে, আইনটি সুইডেনের গণতন্ত্র এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে প্রচণ্ড হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে।
আইনজ্ঞদের সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অব জুরিস্টের সুইডিশ শাখা সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, আইনটি জনগণের স্বার্থে গোপন তথ্য ফাঁসকারী (‘হুইসেল ব্লোয়ার’) এবং অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের কাজের ক্ষেত্রে তাদের গুরুত্বপূর্ণ সূত্রগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণমূলক প্রভাব ফেলবে। পার্লামেন্টে সর্বদলীয় বিতর্কে শুধু বামপন্থী- এবং পরিবেশবাদী দল আপত্তি করেছিল। গত বছর তোলা প্রথম প্রস্তাবে ‘না’ ভোট দেওয়া উদারপন্থীরাও তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে সংখ্যাগরিষ্ঠের পেছনে দাঁড়িয়েছে।
বামপন্থী দলের সংসদ সদস্য জেসিকা ওয়েটারলিং বলেন, এই সংশোধনীর কারণে মিডিয়া কী প্রকাশ করতে পারবে অথবা পারবে না, সে ব্যাপারে বিশাল অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হলো। কেউ আর হুইসেল-ব্লোয়ার হওয়ার সাহস দেখাবে না। অন্যদিকে, সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট দলের সদস্য হ্যান্স একস্ট্রোম বলেন, উদ্দেশ্য বিবেচনায় যদি ন্যায়সঙ্গত হয়, তবে তথ্য প্রকাশ শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে না। অন্যায়ভাবে তথ্য ফাঁস করার ক্ষেত্রে তা হতে পারে।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: