একটি ভুলের জন্য বাতিল হয়ে যেতে পারে পার্টনার ভিসার আবেদন
প্রকাশিত:
১২ মে ২০১৯ ০৬:০০
আপডেট:
১৭ এপ্রিল ২০২৫ ০৮:১৮

অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক বা স্থায়ী বাসিন্দারা তাদের স্ত্রী বা স্বামীকে পার্টনার ভিসার মাধ্যমে এদেশে নিয়ে আসার সুযোগ পান। এ ভিসার আবেদনপত্র এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের তালিকা কিছুটা দীর্ঘ হওয়াতে অনেকেই পার্টনার ভিসার আবেদনপ্রক্রিয়া নিয়ে বেশ আতংকে ভুগেন। তাছাড়া অনেককে এ ভিসা মঞ্জুর হতে কিছুটা দীর্ঘ সময় লেগে যাওয়া নিয়েও হতাশা প্রকাশ করতে দেখা যায়।
তারপরও পার্টনার ভিসায় প্রতিনিয়ত অসংখ্য মানুষ এদেশে আসছেন। কিন্তু একটি ছোট্ট ভুলের কারণে উপযুক্ত মানুষও এ সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতে পারেন। ভুলটি হলো ভিসার আবেদনের সময় কোন মিথ্যা কিংবা অসঙ্গতিপূর্ণ তথ্য প্রদান করা।
ভিসার জন্য আবেদন করার পর যদিও সুযোগ আছে যে কোন তথ্য সংশোধন করার, তথাপি এই সংশোধিত তথ্য গ্রহণ করা বা না করা পুরোটাই ডিপার্টমেন্ট অফ হোম এফেয়ার্স এবং এডমিনিস্ট্রেটিভ এপিল ট্রাইবুনালের ইচ্ছাধীন। তারা চাইলে সংশোধিত তথ্য গ্রহণ না করে প্রথমবারে প্রদত্ত তথ্যের ভিত্তিতে সে আবেদন বাতিল করে দিতে পারেন, বিশেষ করে যদি তারা ধারণা করেন যে প্রথমবারের ভুল তথ্য ইচ্ছাকৃতভাবেই দেয়া হয়েছিলো।
পাবলিক ইন্টারেস্ট ক্রাইটেরিয়া (পিআইসি) ৪০২০ নামক নীতিমালার অধীনে ভিসার আবেদনের ক্ষেত্রে পরিচয় প্রমাণ করা এবং সত্য ও সঠিক তথ্য প্রদান করা গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হিসেবে বিবেচিত হয়। সুতরাং যদি কোন ভুয়া কাগজপত্র উপস্থাপন করা হয়, কিংবা ভুল তথ্য দেয়া হয় অথবা প্রয়োজনীয় তথ্য গোপন করা হয়, এমন সব ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ ঐ নীতিমালার অধীনে সে ভিসার আবেদনপত্র বাতিল করে দিতে পারে।
সম্প্রতি এমন এক ঘটনার উদাহরণ দেখা যায় উইলিয়ামের (ছদ্মনাম) স্ত্রীর জন্য ভিসার আবেদনের ক্ষেত্রে।
উইলিয়াম ২০০৯ সালে ছাত্র হিসেবে অস্ট্রেলিয়ায় আসেন। এরপর তিনি রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করলে সে আবেদন গৃহীত হয়নি। পরবর্তীতে বিভিন্ন শ্রেণীর ব্রিজিং ভিসায় থাকার পর শেষপর্যন্ত ২০১২ সালে তিনি এদেশের স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার সুযোগ পান। বর্তমানে তিনি একজন অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক।
সম্প্রতি তার সদ্যবিবাহিত মিশরীয় স্ত্রী অস্ট্রেলিয়ায় আসার জন্য পার্টনার ভিসার আবেদন করলে কর্তৃপক্ষ তদন্তে দেখতে পায় আবেদনপত্রে স্পন্সর হিসেবে থাকা স্বামী উইলিয়াম এর আগে একটি বিয়ে করেছিলেন এবং সে পরিবারে তার দু’টি সন্তান রয়েছে এ তথ্য আবেদনপত্রে উল্লেখ করা হয়নি।
ডিপার্টমেন্ট এ ভিসার আবেদন প্রত্যাখ্যান করার পর ট্রাইবুনাল তার আপীলকেও প্রত্যাখ্যান করেছে। কর্তৃপক্ষ মনে করছে উইলিয়াম ও তার স্ত্রী তাদের ভিসা আবেদনপত্রে ইচ্ছাকৃতভাবে তথ্য গোপন করে অসঙ্গতি তৈরী করেছে। বর্তমানে পুনরায় ভিসার আবেদন করতে উইলিয়ামের স্ত্রীকে দেড় বছর অপেক্ষা করতে হবে।
এসব ক্ষেত্রে এদেশের কোন ভিসার পূনঃআবেদনের সুযোগ পেতে এমনকি দশ বছরের নিষেধাজ্ঞাও দেয়ার ক্ষমতা রাখে অস্ট্রেলিয়ান কর্তৃপক্ষ।
সুতরাং যে কোন ভিসা, এবং বিশেষ করে পার্টনার ভিসার আবেদনের ক্ষেত্রে, যেখানে বিস্তারিত ব্যক্তিগত তথ্যের প্রাসঙ্গিকতা অনেক বেশি, যথাযথ ও পূর্ণাঙ্গ তথ্য প্রদান করা একটি জরুরী বিষয়।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: