সিডনী সোমবার, ২৯শে এপ্রিল ২০২৪, ১৬ই বৈশাখ ১৪৩১


বৃষ্টি মগ্নতা : জোবায়ের মিলন


প্রকাশিত:
১০ জুন ২০২০ ২০:৪৬

আপডেট:
১০ জুন ২০২০ ২১:১১

ফাইল ছবি

 

আমার ভেতরে কোনো আশাহত কুরুক্ষেত্র নেই। রক্তপাতের স্মৃতি অথবা কাঠের ফ্রেম নেই। সুদৃশ্য ক্যাকটাসের বাগান কিংবা স্পাত গলিত ধোঁয়া নেই। মানুষের ক্রমাগত হুংকার নেই, হিংসা নেই, বিদ্বেষ নেই, জরা ও জীর্ণতা নেই। অনেকের মতো আমার পকেটে রমণীয় বিকেল, উজ্জ্বল সকাল, রৌদ্রোজ্জ্বল দুপুর নেই। কোনো হাতপাখা বা ইলেকট্রিক ফ্যান নেই। মাছের পুকুর, ফসলের ক্ষেত, মাঞ্জা দেওয়া সুতা কিংবা নাটাই নেই। কোনো দিন ঘুড়ি উড়িয়েছি কিনা
আমার মনে নেই।

জন্মলগ্ন থেকে বৃষ্টিকে জেনেছি মা, বাবা, ভাই, বোন। জেনেছি সৌন্দর্যের মন্ডপ, ভক্তির অমিয় পাত্র। জেনেছি প্রিয়তমার মতো সরল এক সরোবর। শিক্ষার পাঠ নিতে জননী আমায় কোনদিন স্কুলে পাঠাননি। আমাকে বার বার বলেছেন- বৃষ্টিতে ভিজতে, বৃষ্টিকে পাঠ করতে, বৃষ্টিকে মুখস্ত করতে। আমি তা’ই করেছি একাগ্র চিত্তে। জনক বহুবার মক্তবে পাঠাতে চেয়েছেন গায়ের জোরে; আমি বহুবার পালিয়ে গিয়ে অপেক্ষা করেছি বৃষ্টির জন্য। অপেক্ষা করেছি. . .ভিজতে ভিজতে অসুখ বাঁধিয়ে পড়ে থেকেছি রন্ধন ঘরের বারান্দায় আর জনক খুঁজেছে আমায় মেঘেদের বাড়ি বাড়ি; জ্বর থেকে সেরে উঠলে তিনি আমাকে পেয়েছিলেনে বর্ষণমুখর এক আকাশের নিচে।

এরপর আর নিষেধ করেননি। হয়তো ব্যথিত হয়ে! আমারও হয়ে ওঠা হয়নি সবার মতো মাস্টার, উকিল, ডাক্তার, কেরাণী, বিজ্ঞানী, খেলোয়ার, অভিনেতা বা সাংসদ. . .
বৃষ্টি ভেজা এক মানব হয়েই আমি বেড়ে উঠেছি জন-অরণ্যে; যার অভিধানে নেই বৃষ্টিহীন কোনো বর্ণ, কোনো শব্দ, কোনো বাক্য। যার জানা ও চেনায় নেই পৃথিবীর আর কোনো ছায়াছবি। যার ধ্যান ও জ্ঞানে নেই বৃষ্টি ছাড়া কোনো অহংকার। যার শুরু ও শেষে বৃষ্টি-মগ্নতা’ই একমাত্র পূজার মন্দির।

 

জোবায়ের মিলন
সহকারী বার্তা প্রযোজক, বার্তা বিভাগ, এনটিভি

 

এই লেখকের অন্যান্য লেখা



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top