সিডনী শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৪, ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১


যে চারটি গুণ বৃদ্ধি করবে আপনার রিজিক


প্রকাশিত:
১৪ আগস্ট ২০২০ ২৩:১২

আপডেট:
২৬ এপ্রিল ২০২৪ ২৩:৩০

ফাইল ছবি

 

রিযিক বৃদ্ধির জন্য আমাদের নিজেদের চরিত্রে চারটি গুণ অর্জন করা জরুরী। এই চারিত্রিক গুণগুলো আমাদের রিযিক বৃদ্ধির চাবিকাঠি হিসেবে কাজ করবে।

 

১. তাকওয়া

তাকওয়া তথা আল্লাহর ভয় রিযিক বৃদ্ধির জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কুরআনে বলা হয়েছে,

“…আর যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্যে (বিপদ থেকে) নিস্কৃতির পথ করে দেবেন। এবং তাকে তার ধারণাতীত জায়গা থেকে রিযিক দেবেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে তার জন্যে তিনিই যথেষ্ট...” (সূরা তালাক, আয়াত: ২-৩)

তাকওয়ার প্রাথমিক লক্ষ্য হলো আল্লাহর ভয়ে নিজেকে আল্লাহর নিষিদ্ধ বস্তু থেকে দূরে রাখা বা আল্লাহর নিষেধ করা কাজ থেকে বিরত হওয়া। কুরআনের পরিভাষাগত অর্থে, আল্লাহর ভয়ে সকল প্রকার গুনাহ থেকে বেঁচে থাকাই হল তাকওয়া।

তাকওয়া অর্জনের জন্য অন্তরের শুদ্ধতা ও পবিত্রতা একান্তু গুরুত্বপূর্ণ। তাকওয়া অর্জনকারী ব্যক্তির অন্তরে আল্লাহর জন্য একইসাথে ভয় ও ভালোবাসা বিরাজ করবে।

 

২. তাওয়াক্কুল

তাওয়াক্কুল মূলত আল্লাহর ইচ্ছার কাছে নিজেকে সমর্পণ করা। কোন ব্যক্তির জন্য আল্লাহ যে পরিকল্পনা করেছেন, তার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করাই হল তাওয়াক্কুল।

সততা, আন্তরিকতা ও এক আল্লাহর দাসত্বকে স্বেচ্ছায় গ্রহণ করে নেওয়ার তাওয়াক্কুলের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। অন্তরের এই অবস্থা মানুষের মধ্যে সত্যিকার ঈমানকে গড়ে তুলতে সাহায্য করে।

ইমরান বিন হুসাইন থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন,

“যে ব্যক্তি আন্তরিকভাবে আল্লাহর উপর নির্ভর করে, আল্লাহ সেউ ব্যক্তির সকল দায়দায়িত্ব নিয়ে নেন। তার জন্য রিযিক এমন উৎস থেকে আসতে থাকে, যার কল্পনাও সে করতে পারেনি। যে ব্যক্তি (বস্তুগত) দুনিয়ার উপর নির্ভর করে, আল্লাহ তার দায়িত্ব দুনিয়ার উপর ছেড়ে দেন।” (হায়াতুল মুসলিমিন)

কুরআনে বলা হয়েছে,

“আর পৃথিবীতে কোন বিচরণশীল প্রাণী নেই, যে জীবিকার জন্য আল্লাহর উপর নির্ভর করেনা। তিনি জানেন তারা কোথায় থাকে এবং কোথায় নিদ্রা যায়।” (সূরা হুদ, আয়াত: ৬)

 

৩. ইয়াকিন

যখন কোন ব্যক্তি সকল অসম্ভব্যকে দূরে ঠেলে তার কাজের জন্য এক আল্লাহর উপর নির্ভর করবে এবং তার সাহায্যের জন্য ভরসা করবে, ব্যক্তির মানসিক সেই অবস্থাই হল ইয়াকিন। এই অবস্থায় ব্যক্তির মধ্যে তার কাজের ফলাফলের জন্য কোন প্রকার সন্দেহ বা অনিশ্চয়তা থাকেনা।

কারন সে বুঝতে পারে, একমাত্র আল্লাহই সকল কিছুর অধিকারী। সুতরাং, আল্লাহ তার জন্য উত্তম ফলাফলই দান করবেন।

আল্লাহর উপর এমন বিশ্বাস ও ভরসা ঈমানদারদের ঈমানের এক নিদর্শন। কুরআনে বলা হয়েছে,

“আল্লাহ অপেক্ষা বিশ্বাসীদের জন্যে উত্তম ফয়সালাকারী কে?” (সূরা মায়েদা, আয়াত: ৫০)

 

৪. ইস্তেগফার

মানব চরিত্রের উত্তমতম এই গুণ মানুষের রিযিক বৃদ্ধির বৃহত্তম এক কারন হিসেবে কাজ করতে পারে। মূলত সর্বদা আল্লাহর কাছে নিজের ত্রুটির জন্য ক্ষমা প্রার্থণা করতে থাকাই হল ইস্তিগফার। 

এক হাদীসে কুদসিতে রাসূল (সা.) বলেছেন, “আল্লাহ বলেন,

“হে আদম সন্তান! আমি তোমাদের ততক্ষণ পর্যন্ত ক্ষমা করবো যতক্ষণ তোমরা আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থণা করবে এবং তোমাদের কাজ স্বত্ত্বেও আমার কাছে ক্ষমার আশা করবে এবং তোমরা যাই করোনা কেন, আমি তা বিবেচনা করবোনা।” (মিশকাত)

যদি কারো অনুভূতি হয় যে আল্লাহর কাছে তার ক্ষমা প্রার্থণার প্রয়োজন নেই, তার জন্য এই হাদীসটি প্রযোজ্য।

হযরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেন,

“তোমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই যার আল্লাহর কাছ থেকে ক্ষমার প্রয়োজন নেই।”

সাহাবারা তাকে জিজ্ঞেস করেন, “হে আল্লাহর রাসূল! আপনারও কি?”

রাসূল (সা.) উত্তর দিলেন,

“এমনকি আমারও, কিন্তু আল্লাহ আমাকে রহমতের চাদরে আবৃত করেছেন এবং তিনি আমাকে ক্ষমা করেছেন।” (মুসলিম)


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top