সিডনী রবিবার, ৫ই মে ২০২৪, ২২শে বৈশাখ ১৪৩১


শুরু হচ্ছে ইবাদতের শ্রেষ্ঠ দশদিন


প্রকাশিত:
৩ আগস্ট ২০১৯ ০০:৩৯

আপডেট:
৫ মে ২০২৪ ২০:২০

শুরু হচ্ছে ইবাদতের শ্রেষ্ঠ দশদিন

কাল শুরু হচ্ছে হিজরি বর্ষের সর্বশেষ মাস জিলহজ্জ বছরের অন্যান্য দিনগুলোর উপর জিলহজের প্রথম ১০ দিনকে আল্লাহ তা'আলা শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান করেছেন । আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

এ দশ দিনে নেক আমল করার চেয়ে আল্লাহর কাছে বেশি প্রিয় ও মহান কোনো আমল নেই। তাই তোমরা এ সময়ে তাহলিল (লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ), তাকবির (আল্লাহু আকবার) ও তাহমিদ (আল-হামদুলিল্লাহ) বেশি বেশি করে পড়।’ [মুসনাদ আহমদ : ২/৭৫।]



জেনে নিন জিলহজ্জ মাসে যেভাবে ইবাদত করবেন-



 



১. সালাত: সালাত হলো আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মাধ্যম। তাই এ দশদিন ফরজ সালাতের পাশাপাশি বেশি বেশি করে নফল সালাত আদায় করুন। সাওবান রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন:



আমি রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি: তুমি আল্লাহর উদ্দেশ্যে অধিক পরিমাণ সিজদা করো (নফল সালাত আদায় করো) কারণ যখনই তুমি সিজদা করো বিনিময়ে আল্লাহ তোমার মর্যাদা বৃদ্ধি করেন এবং গুনাহ মোচন করেন।” (মুসলিম)



 



২.সিয়াম: জিলহজ্জ মাসের দশ দিন নফল রোজা রাখার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। হুনাইদা বিন খালেদ তার স্ত্রী থেকে, তিনি রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জনৈক স্ত্রী থেকে বর্ণনা করেন:



রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিলহজ্জ মাসের নয় তারিখ, আশুরার দিন ও প্রত্যেক মাসের তিন দিন রোজা পালন করতেন।” (আহমদ, আবু দাউদ ও নাসায়ী)



 



৩. তাকবির, তাহলিল ও তাহমিদ: ইমাম বুখারী (রহ.) বলেছেন, ইবনে ওমর (রা.) এবং আবু হুরায়রা (রা.) এ দশ দিন তাকবির বলতে বলতে বাজারে বের হতেন, আর মানুষরাও তাদের দেখে তাকবির বলতো তিনি আরও বলেছেন,



ইবনে উমর (রা.) মিনায় তাঁর তাঁবুতে তাকবির বলতেন, তা শুনে মসজিদের লোকেরা তাকবির বলতো এবং বাজারের লোকেরাও তাকবির বলতোএক পর্যায়ে সম্পূর্ণ মিনা তাকবির ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠত।



ইবনে উমর রা. মিনায় অবস্থানের দিনগুলোতে , পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের পরে, তাঁবুতে, বিছানায়, বসার স্থানে, চলার পথে সর্বত্র তাকবির পাঠ করতেন।



তাকবিরগুলো উচ্চ আওয়াজে পাঠ করা মুস্তাহাব। কারণ, সাহাবি উমর (রা.), তাঁর ছেলে আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রা.), আবু হুরায়রা (রা.) প্রমুখ সাহাবিগণ তা উচ্চ আওয়াজে পাঠ করতেন।



নিন্মোক্ত যে কোনো পদ্ধতিতেই তাকবির পাঠ করা যায়:



ক) আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার কাবীরা।



খ) আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লাইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ।



গ) আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লাইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ।



 



৪. আরাফার দিন রোজা: আরাফার দিন রোজা রাখার ব্যাপারে রাসূলুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:



আমি আল্লাহর কাছে আশাবাদী, এটি পূর্ববর্তী এক বছর ও পরবর্তী এক বছরের গুনাহের কাফফারা হবে।” (মুসলিম)



তবে আরাফায় অবস্থানকারী হাজীদের জন্য রোযা রাখা মুস্তাহাব নয়। কারণ, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরাফায় অবস্থান করেছিলেন রোজা বিহীন অবস্থায়।



 



৫. কুরবানীর দিন (দশম যিলহজ্জ) এর মর্যাদা: এই মহান দিনটির মর্যাদার ব্যাপারে অনেক মুসলমানই অসচেতন। কতিপয় বিদ্বান এ মত ব্যক্ত করেছেন যে, সাধারণভাবে সারা বছরের মধ্যে-এমনকি আরাফার দিনের চেয়েও নহর তথা কুরবানীর দিন উত্তম।



ইবনুল কাইয়িম রহ. বলেছেন, আল্লাহর নিকট সর্বোত্তম দিন নহরের দিন। এটিই হল, হজ্জে আকবর (বড় হজ্জ) এর দিন। যেমন সুনানে আবু দাউদে রয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:



আল্লাহর নিকট সর্বাধিক মহিমান্বিত দিন হল নহর তথা কুরবানীর দিন। অতঃপর কুরবানীর পরের দিন (অর্থাৎ যিলহজ্জের এগারতম দিন যে দিন হাজীগণ কুরবানী করার পর মিনায় অবস্থান করেন)।



 



অবশ্য কেউ কেউ বলেছেন, নহরের দিনের চেয়ে আরাফার দিন উত্তম। কারণ, সে দিনের সিয়াম দুই বছরের গুনাহের কাফফারা। তাছাড়া আল্লাহ তায়ালা আরাফার দিন যে পরিমাণ লোক জাহান্নাম থেকে মুক্ত করেন, তা অন্য কোন দিন করেন না। আরও এ জন্যও যে, আল্লাহ তায়ালা সে দিন বান্দার নিকটবর্তী হন এবং আরাফায় অবস্থানকারীদের নিয়ে ফেরেশতাদের সাথে গর্ব করেন। তবে প্রথম বক্তব্যই সঠিক। কারণ, হাদীস তারই প্রমাণ বহন করে। এর বিরোধী কিছু নেই।



 


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top