সিডনী রবিবার, ৫ই মে ২০২৪, ২২শে বৈশাখ ১৪৩১


ঈদুল আজহার তাৎপর্য ও মাসয়ালা


প্রকাশিত:
১২ আগস্ট ২০১৯ ১০:৩০

আপডেট:
৫ মে ২০২৪ ২২:৫৭

ঈদুল আজহার তাৎপর্য ও মাসয়ালা

প্রভাত ফেরী ডেস্ক: আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মুসলিম জাতির জন্য সৌভাগ্যের পুরস্কারস্বরূপ বছরে দু’টি ঈদ দিয়েছেন, তার একটি ঈদুল ফিতর আরেকটি হলো ঈদুল আজহা।



ঈদ শব্দের অর্থ আনন্দ, উৎসব বা বারবার ফিরে আসা। আর আজহা শব্দটির অর্থ ত্যাগ, উৎসর্গ বা কোরবানির পশু জবেহ করা ইত্যাদি। আর কোরবান অর্থ নৈকট্য, সান্নিধ্য, উৎসর্গ। উল্লিখিত শব্দ এবং অর্থগুলো থেকে এ কথা স্পষ্ট যে, ত্যাগ বা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে আল্লাহর সান্নিধ্য অর্জনের যে চেষ্টা করা হয় তাকেই ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ বলে। 



প্রচলিত অর্থে কোরবানি হলো পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে জিলহজ মাসের ১০ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে মহান রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট ব্যক্তির পক্ষ থেকে পশু জবাই করা। মহান আল্লাহ তায়ালার বাণী, ‘আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য কোরবানির নিয়ম করে দিয়েছি।’



সূরা কাউছারে বলেছেন, ‘সুতরাং তুমি তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশে সালাত আদায় করো এবং কোরবানি করো।’ (সূরা কাওসার, আয়াত-২) অনুরূপভাবে রাসূল সা: ইরশাদ করেছেন, কোরবানির দিনে মানবসন্তানের কোনো নেক আমলই আল্লাহ তায়ালার কাছে এত প্রিয় নয়, যত প্রিয় কোরবানি করা। আর কোরবানির পশুর শিং, পশম ও ক্ষুর কিয়ামতের দিন (মানুষের নেক আমলনামায়) এনে দেয়া হবে। কোরবানির পশুর রক্ত মাটিতে পড়ার আগেই তা আল্লাহর দরবারে পৌঁছে যায়। সুতরাং তোমরা আনন্দচিত্তে কোরবানি করো (তিরমিজি)।



জাকাতের মতো কঠোর নির্দেশও আছে। মানুষ শুধু ইসলামকে ভালোবাসি ভালোবাসি বললেই হবে না, তার প্রমাণ ও পরীক্ষাও দিতে হবে। হাদিস শরিফে উল্লেখ আছে, যে ব্যক্তি সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও কোরবানি করবে না সে যেন ঈদগাহের কাছেও না আসে (ইবনে মাজাহ)। তাহলে কী বোঝা গেল? ঈদ শুধু আনন্দের নয়, কর্তব্য পালনের পরীক্ষাও।



মানব ইতিহাসে কোরবানির বিষয়টি সুপ্রাচীন। যার ভাবার্থ কোরবানির ত্যাগের মাধ্যমে সাওয়াব লাভ করা। সব নবীর জন্যই কোরবানির পরীক্ষা দিতে হয়েছে। কেউ দেশ ত্যাগে কেউ নিকটাত্মীয় ত্যাগ করে আর কেউ জীবনের হাসি আনন্দ ও সর্বোৎকৃষ্ট বস্তুকে ত্যাগ করে নজরানা পেশ করেছেন। যারা অলি আল্লাহ হিসেবে খ্যাতি পেয়েছেন তারাও নিরলসভাবে আল্লাহর সান্নিধ্য পাওয়ার জন্য সব কিছু ত্যাগ করেছেন।



আমরা বর্তমানে যে কোরবানি করে থাকি তা মুসলিম জাতির জনক হজরত ইব্রাহিম আ:-এর সুন্নত হিসেবেই করি। তিনি আল্লাহর নির্দেশ পালন করতে নিজের সর্বপ্রিয় পুত্রকে কোরবানি করার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ত্যাগের এক অবিস্মরণীয় ইতিহাস সৃষ্টি করে গেছেন। এ বিষয়টি এতই গ্রহণযোগ্য হয়েছে যে, আমাদের ওপর মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে কোরবানির নির্দেশনা ত্যাগ-তিতিক্ষার সেই উদাহরণকে কিয়ামত পর্যন্ত শিক্ষণীয় হিসেবেই জীবন্ত করে রেখেছেন।


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top