সিডনী বুধবার, ১৫ই মে ২০২৪, ৩১শে বৈশাখ ১৪৩১

৬ শতাংশ আমেরিকান চন্দ্রাভিযানকে ‘ভুয়া’ ভাবেন !


প্রকাশিত:
২১ জুলাই ২০১৯ ২২:৪৭

আপডেট:
১৫ মে ২০২৪ ০১:৩২

৬ শতাংশ আমেরিকান চন্দ্রাভিযানকে ‘ভুয়া’ ভাবেন !

চাঁদে যাওয়ার ঘটনা সত্য নাকি মিথ্যা, এই প্রশ্ন আজকের নয়। ১৯৬৯ সালের ২০ জুলাই যেমন উঠেছিল, তেমনি এই পঞ্চাশ বছর পরও একপক্ষ ইনিয়ে-বিনিয়ে আমেরিকার চন্দ্রাভিযানকে ভুয়া বলার চেষ্টা করেন। একটি জরিপ থেকে জানা গেছে, খোদ ৬ শতাংশ আমেরিকানও বিষয়টিকে গল্প ভাবেন!



কী তাদের যুক্তি?



তাদের দাবি, সেদিন সারা বিশ্ব যে ঘটনা সরাসরি টিভিতে দেখেছিল সেটি ছিল হলিউডের কোনো স্টুডিওতে ধারণ করা! কারণ বাজ অলড্রিন যখন আমেরিকার পতাকা রাখেন, সেটি উড়তে দেখা যায়। অথচ মহাশূন্যে তা উড়ার কথা না!



আসলে কী তাই?



এটি নিয়ে নাসার পাল্টা যুক্তিও আছে। পতাকা ওড়ার কারণ হিসেবে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটির যুক্তি, অলড্রিন পতাকার দণ্ড নাড়ানোয় অমন দেখা গিয়েছিল।



বিশ্বাস-অবিশ্বাস নিয়ে চলতি বছর জুনে একটি জরিপ করা হয়। সেখানে ৬ শতাংশ আমেরিকান বলেন, তারা চন্দ্রাভিযানকে মিথ্যা বলে মনে করেন। বিষয়টি আসলে ‘সত্য না কি মিথ্যা’ তা বুঝতে পারেন না আবার ১৫ শতাংশ মানুষ!



চাঁদের বুকে প্রথম পা রাখেন নিল আর্মস্ট্রং। তার কিছুক্ষণ পর চাঁদে দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে নামেন বাজ অলড্রিন। তারা দুজনই মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার অ্যাপোলো-১১ চন্দ্রযানে করে চাঁদের বুকে অবতরণ করেছিলেন। সেই ঐতিহাসিক অভিযাত্রায় তাদের সঙ্গী ছিলেন মাইকেল কলিন্স। তিনি অবশ্য দুই সঙ্গীর সঙ্গে চাঁদে পা রাখতে পারেননি। কারণ তিনি চাঁদের কক্ষপথে কমান্ড মডিউলের দায়িত্বে ছিলেন।



আর্মস্ট্রং মারা গেছেন ২০১২ সালে। তবে অলড্রিন (৮৯) ও কলিন্স (৮৮) এখনো জীবিত।



অলড্রিনকে নানা সময়ে এ বিষয়ে কটূক্তি শুনতে হয়েছে। ১৭ বছর আগে একজনকে তো তিনি ঘুষিও মারেন।



বার্ট সিবারেল নামের একজন চলচিত্র নির্মাতা আছেন, যিনি চন্দ্রাভিযানকে ‘ভুয়া’ দাবি করে একটি বই লিখেছেন। ২০০২ সালে অলড্রিনের সঙ্গে দেখা হলে তাকে ‘মিথ্যাবাদী, কাপুরুষ এবং চোর’ বলায়, অলড্রিন হাত চালিয়ে দেন।



ওই ঘটনায় অলড্রিনকে পুলিশ অভিযুক্ত করেনি। বলা হয়, উসকানি দেওয়ায় তিনি আঘাত করেন।



চাঁদে যাওয়ার বিষয়টি যারা বিশ্বাস করেন না, তারা প্রায়ই প্রমাণ হিসেবে আরেকটি বিষয়টির কথা উল্লেখ করেন। তাদের প্রশ্ন, কেন চাঁদে নামার সেই ছবির পেছনের আকাশে কোনো নক্ষত্র দেখা যাচ্ছে না?



এটা কেন? এ প্রশ্নের জবাবে রচেস্টার ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির অ্যাস্ট্রো ফিজিক্সের অধ্যাপক ব্রায়ান কোবারলিন বলেন, এর কারণ, চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে সূর্যের আলো প্রতিফলিত হয়। সে কারণে ছবিতে এত উজ্জ্বলতা চোখে পড়ছে। আর এই উজ্জ্বল আলোর কারণেই পেছনের আকাশের তারকার আলো ম্লান হয়ে গেছে। এ কারণেই অ্যাপোলো ১১ মিশনের ছবিতে চাঁদের আকাশে কোনো তারা দেখা যায় না। কারণ এসব তারার আলো খুবই দুর্বল। আর ক্যামেরার এক্সপোজার টাইমও হয়তো ছিল অনেক বেশি।



নভোচারীরা চাঁদে পা রেখেছে নাকি আমেরিকার কোনো স্টুডিওতে দৃশ্যায়ন করা হয়েছে তাতে কিছু যায় আসে না। কারণ আপনি যদি ১৯৬৯ সালে অস্ট্রেলিয়ায় থাকতেন, তাহলে ঠিকই জানতেন ঐতিহাসিক সেই চিত্রগুলো অস্ট্রেলিয়ার হানিসাকল ক্রিক ও পার্কেস রেডিও টেলিস্কোপ কেন্দ্র থেকে প্রচারিত হয়।



সে সময় হানিসাকল কেন্দ্রের কম্যুনিকেশন্স বিভাগের কর্মী গিলিয়ান শোয়েবর্ন জানিয়েছেন সেদিনের অভিজ্ঞতার কথা। সহকর্মীদের সঙ্গে দিস্তার পর দিস্তা কাগজে মিশনের নির্দেশনা, টেলিমেট্রি ও মেডিকেল তথ্য পাঠানোর কথা জানান তিনি।



চন্দ্রারোহণে অস্ট্রেলিয়ার হানিসাকল কেন্দ্রের কার্যক্রম নিয়ে একটি ওয়েবসাইট চালান কলিন ম্যাকেলার। তিনি বলেন, ‘১৯৬৯ সালে মানুষের চন্দ্রারোহণের গুরুত্ব পৃথিবীর কারো অজানা ছিল না এবং সেটা সরাসরি দেখেছিল তারা। সবাই ছিল উৎফুল্ল। এটা আমাদের কাছে সারা বিশ্বের অর্জন।’


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top