সিডনী রবিবার, ৫ই মে ২০২৪, ২২শে বৈশাখ ১৪৩১

ইতিহাসের পাতায় আজ


প্রকাশিত:
৬ আগস্ট ২০১৯ ২৩:১১

আপডেট:
৫ মে ২০২৪ ২১:৪৩

ইতিহাসের পাতায় আজ

হিরোশিমা দিবস: জাপানের হিরোশিমায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক পৃথিবীর আণবিক বোমা বর্ষণ হয় ১৯৪৫ সালের এই দিনে । ভয়াবহ ধ্বংসলীলা সাধিত হয় এতে। মানব সভ্যতার ইতিহাসে কলঙ্কজনক ঘটনা হিসেবে ৬ আগস্ট হিরোশিমা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট পারমাণবিক বোমায় জাপানের হিরোশিমা শহরের সিংহভাগ ভস্ম হয়ে যায় চোখের নিমিষে। নিহত হয় ১০ হাজার মানুষ । ১৫ শতকে হিরোশিমা ছিলো একটি জীর্ণশীর্ণ গ্রাম। ১৬ শতকে মরিক্লান হিরশিমা শহরটি ছিল জাপানের চুগকু-শিককু জেলার সবচেয়ে বড় মন্দির শহর। 



দীর্ঘকাল ধরে গড়ে ওঠা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন সমৃদ্ধ হিরোশিমা বোমার আঘাতে হয় বিরাণ ভূমি। ধ্বংস হয়ে হিরোশিমা পরিচিত হয় পৃথিবীর সর্বত্র। ইতিহাসে পারমানবিক বোমার প্রথম শিকার এই হিরোশিমা তাই ওই মর্মান্তিক বেদনাদায়ক ঘটনার দিন আজও স্মরণীয়। আজও মানুষ স্তম্ভিত হয় দিনটির কথা ভেবে। বিশ্বব্যাপী পালিত হয় এই দিনটি হিরোশিমা দিবস হিসেবে। আজ হিরোশিমার আকাশে নির্মল আভা, বাতাসে স্বচ্ছ আমেজ, সর্বত্র কবুতরের শান্তির সমাবেশ আর শিশুদের আনন্দ উল্লাস। ভাবাই যাবে না পারমাণবিক বোমা এখানে বানিয়েছিল বিধ্বস্ত মরুভূমি। হিরোশিমা এখান শান্তিময় শহর। কিন্তু এখানের অনেক মানুষ নীরবে বয়ে বেড়াচ্ছে সেই বোমার বিষ । মরছে ধুকে ধুকে। মানুষ ধরে রেখেছে ১৯৪৫ এর ৬ আগস্টের তা-ব লীলার স্মৃতি। স্মৃতিচিহ্নগুলোর মধ্যে রয়েছে হিরোশিমার শান্তিরক্ষার প্রতীক শান্তি স্মৃতি পার্ক। এই পার্কে আছে স্মৃতি জাদুঘর ও বহু স্মৃতি স্তম্ভ। প্রতি বছর ৬ আগস্ট এখানে পালিত হয় স্মৃতি উৎসব। 



শান্তি স্মৃতি পার্ক সংলগ্ন আরেকটি স্মৃতি চিহ্ন হচ্ছে এ্যাটমিক বোম ডোম। এটিট ছিলো হিরোশিমা শিল্প উন্নয়ন হল। বোমা হামলায় বিধ্বস্ত হয়েছিল প্রায় পুরোটা। কিছু অংশ এখনো দাড়িয়ে আছে বিমূর্ত সাক্ষী হিসেবে। হলের বিধ্বস্ত কাঠামো বাচিয়ে রাখার জন্য ব্যয় করা হয়েছে প্রচুর অর্থ। আরেকটি স্মৃতি হচ্ছে শান্তির শিখা। শান্তি স্মৃতি পার্কের পেছনে একটি আয়তাকার পুকুর। পুকুটির নাম শান্তি পুকুর। এই পুকুরের উত্তর পাড়ে শান্তি শিখা। এই শিখা বিরতিহীনভাবে জ¦লছে। শিক্ষা প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে জাপান পারমাণবিক অস্ত্র বিলোপের জন্য বিশ্ববাসীর দরবারে আর্তনাদ করছে। আরেকটি স্মৃতিচিহ্ন 'সেম্বা গুরু"। ভাজকরা কাগজের তৈরি অসংখ্য সারস পাখির সমাবেশ সমৃদ্ধ এই স্তম্ভ। সারস পাখিগুলো যেন প্রার্থনারত । বোমার তেজস্ক্রিয়তায় আক্রান্ত এক কিশোরীর জীবনাবসানের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নির্মিত ওই স্তম্ভটি। শান্তি স্মৃতি পার্কের কেন্দ্রে আছে পারমাণবিক বোমা মেমোরিয়াল স্মৃতিশালা। এখানে ৪৪টি বইতে পারমাণবিক তেজস্ক্রিয়তার রোগাক্রান্ত ১ লাখ ৭২ হাজার ২৪ জনের নাম লেখা আছে। সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। ভেতরে আছে একটি মাটির প্রকোষ্ঠ’ । প্রকোষ্ঠে একটি কালো পাথরের কফিন। কফিনে রাখা আছে বইগুলো । কফিনের সামনে লেখা “এখানে সকল আত্মাকে শান্তিকে ঘুমাতে দাও; আমরা যেন আবার এমন ক্ষতি না করি।” 



১৮৮১ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে স্কটল্যান্ডের খ্যাতনামা বিজ্ঞানী ও চিকিৎসক আলেক্সান্ডার ফ্লেমিঙ্গ জন্ম গ্রহণ করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলার সময় তিনি ও তার সহযোগী আরো দুই গবেষক রোগ সংক্রমণ বিরোধী পেনিসিলিন ঔষধ আবিস্কার করেন। এজন্য এই তিন বিজ্ঞানী ১৯৪৫ সালে নোবেল পুরস্কারে ভুষিত হন। বর্তমানেও চিকিৎসা ক্ষেত্রে পেনিসিলিনের ব্যাপক ব্যবহার হয়ে থাকে।



১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র কয়েক দিন আগে যুক্তরাষ্ট্র প্রথম পরমাণু বোমা নিক্ষেপ করে জাপানের হিরোশিমা শহরকে ধ্বংসরুপে পরিণত করে। ধ্বংসাত্মক এই বোমার আঘাতে ৯০ হাজারেরও বেশী মানুষ নিহত এবং ৭৫ হাজারেরও বেশী মানুষ আহত হয়েছিল। ঐ বোমার তেজস্ক্রিয়তা এখনও অব্যাহত রয়েছে। হিরোশিমাকে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র জাপানের আরেকটি শহর নাগাসাকিতেও পরমাণু বোমা নিক্ষেপ করে। ফলে জাপান আত্মসমর্পন করতে বাধ্য হয়।  



ইতিহাসে এই দিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনাবলি



বাংলাদেশের সংবিধানে একাদশ ও দ্বাদশ সংশোধনী বিল পাস । ১৬ বছর পর সংসদীয় পদ্ধতি পুনঃ প্রবর্তন (১৯৯১)



২০ মাস দেশ শাসনের পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টো ক্ষমতাচ্যুত (১৯৯০) 



পেরুর কাছ থেকে বলিভিয়ার স্বাধীনতা ঘোষণা (১৮২৫)



সমাজ সংস্কারক-প্রাবন্ধিক কিশোরীচাঁদ মিত্রের মৃত্যু (১৮৭৩)



নিউইয়র্কে এক খুনীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের জন্য সর্বপ্রথম বৈদ্যুতিক চেয়ার ব্যবহার (১৮৯০)



ভারতের দুর্ভিক্ষ ও ত্রাণকার্য নিয়ে ব্রিটিশ রাজের ব্লু বুক প্রকাশিত (১৯০২)



রাশিয়ার বিরুদ্ধে অস্ট্রিয়ার যুদ্ধ ঘোষণা (১৯১৪)



মার্কিন সাতারু এডালির ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রমকারী প্রথম মহিলা সাতারুর গৌরব অর্জন (১৯২৬)



জ্যামাইকার স্বাধীনতা লাভ (১৯৬২)


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top