লকডাউন ভেঙে : শেখ বিপ্লব হোসেন
প্রকাশিত:
১৩ মে ২০২০ ২২:১৩
আপডেট:
১৪ মার্চ ২০২৫ ১৪:০৪

একদম পানসে হয়েগেছে কিশোর অহিদুল এর স্বপ্নময়ী জীবন। স্কুল বন্ধ, তাই বাইরে দৌড়ঝাপ নেই। মহল্লার বন্ধুদের সাথে বিকেলের আড্ডাও হচ্ছে না আর। বাইরে যাওয়া বাবা মায়ের বারণ। সারা দুনিয়াই এখন লকডাউনে। পৃথিবীর সমস্ত মানুষ এখন গৃহবন্দি। স্রষ্টার প্রেরিত অদেখা যমদূত যেন প্রতিনিয়ত তাড়া করে ফেরে মানুষকে। কলকারখানায় কাজ নেই। রাস্তায় মানুষ নেই। রাস্তায় কোনো গাড়ি নেই। পথঘাট একদম ফাঁকা। সারা পৃথিবী যেন এখন পশুপাখিদের দখলে। এ যেন প্রকৃতির নিরব প্রতিবাদ!
অহিদুল এবার ৮ম শ্রেণিতে পড়ছে। করোনাভাইরাসের এই আকস্মিক থাবায় সবকিছুই স্থবির হয়ে পড়েছে। সারাদিন শুয়ে বসে অহিদুল এর সময় যেন আর কাটছে না। সকালে ঘুম থেকে দেরি করে ওঠা। রুটিন করে ক্লাসের বই পড়া। ছবি আঁকা। টিভি দেখা। তারপরও যেন কী একটা নেই। সারাদিন ঘরে বসে আর ভাল্লাগছে না, তার। তার মনের ভিতর কিছু একটা ঘুরপাক খাচ্ছে। কিন্তু, বাস্তবায়িত হচ্ছে না।
আর কদিন পরেই রোজার ঈদ। মাত্র কয়েকদিন বাকি। দেশের মানুষের হাতে কাজ নেই। ঘরে খাবার নেই। তাহলে কি এবার কারো ঈদ হবে না? এই ভাবনাটা যেন ওকে কুড়েকুড়ে খাচ্ছে।
অহিদুল বিকেলে বসে বসে টিভিতে খবর দেখছিলো। হেডলাইনে সংবাদ পাঠক বলছিলেন, মহামারির কারণে নিম্ন আয়ের মানুষদের এবারের ঈদ আনন্দ মাটি। অর্থনৈতিক দন্যতায় তাদের ছেলেমেয়েদের জন্য নতুন পোশাক তো দূরের কথা, ঈদের দিনে একটু ভালো খাবারও জুটবে কি না জানা নেই।
সরকারের পাশাপাশি বিত্তবানদের সমাজের গরিব-দুখি মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানিয়েছেন দেশের সরকার প্রধান।
নিউজটি দেখে অহিদুলের মাথায় একটা বুদ্ধি এলো। সে মনে মনে ভাবলো, যদি আমরা বন্ধুরা মিলে কিছু একটা করি তাহলে মন্দ নয়। যেই ভাবা সেই কাজ। সে মোবাইল-এ তার বন্ধুদের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করলো। ওর কথায় সবাই রাজি হলো। একদিন বিকেলে লকডাউন ভেঙে সবাই স্কুল মাঠে এসে হাজির হলো। সবার জমানো টাকা এনে এক জায়গায় করলো। এতে অনেকগুলো টাকা হলো। সেই টাকা দিয়ে বন্ধুরা মিলে বেশ কিছু নতুন জামাকাপড় কিনে মহল্লার গরিব বন্ধুদের মাঝে বিতরণ করলো এবং ঈদের আনন্দ সবাই ভাগ করে নিলো। নতুন জামাকাপড় পেয়ে সবাই খুব খুশি হলো। বন্ধুদের জন্য কিছু করতে পেরে ওরা নিজেরাও অনেক সুখ অনুভব করলো।
বিষয়: শেখ বিপ্লব হোসেন
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: